মিতু হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য


প্রকাশিত: ০২:১৯ পিএম, ১২ জুন ২০১৬

চট্টগ্রামে আলোচিত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যাকাণ্ড নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। স্পর্শকাতর এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতি মুহূর্তে নিজেদের দেয়া বক্তব্য থেকে সরে আসছে পুলিশের কর্তাব্যক্তিরা। এ ঘটনার পর থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিপি, সিএমপি কমিশনার কেউই তাঁদের দেয়া বক্তব্যের উপর অটল থাকতে পারছেন না।

ঘটনার দিন জিইসি মোড়ে বাবুল আক্তারের বাসায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেছিলেন জঙ্গিরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র জড়িত বলেও তিনি বলেছিলেন। তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়ে সিএমপি কমিশনারও একই কথা বলেছিলেন। তবে এক সপ্তাহ পর এসে সেটি এখনো নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক।

রোববার দুপুরে নগরীর দামপাড়া শ্যুটিং ক্লাব অডিটরিয়ামে আয়োজিত সুধী সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে আইজিপি একথা বলেন। শহীদুল হক বলেন, মাহমুদা হত্যাকাণ্ডটি জেএমবি করেছে কি না সেটি আমরা নিশ্চিত নয়। তদন্ত চলছে, শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেটি নিশ্চিত করে বলা যাবে না।

একই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যারা পেট্রলবোমা মেরে মনুষ হত্যা করে ক্ষমতায় যেতে চায় তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এদিকে জেএমবি সম্পৃক্তার কথা তুলে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে হাটহাজারী থেকে আবু নছর ও বায়েজিদ থেকে শাহ জামান রবিন নামে দুজনকে গ্রেফতার করে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

আইজিপি বলেন, ‘বাংলাদেশে এই পর্যন্ত ৪১টি গুপ্ত হত্যা হয়েছে। এর সব কটিই আমরা ডিটেক্ট করতে পেরেছি। এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা বেশিরভাগই জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে জড়িত।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৬টি জঙ্গি সংগঠন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে দেশে এ পর্যন্ত যত গুপ্ত হত্যা হয়েছে তার সবকটির সঙ্গে জেএমবি ও আনসারুল্লাহ বাংলাটিম বা আনসার আল ইসলামের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।’

এদিকে রোববার আটক দুজনকে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। পুরো বিষয়টি নিয়ে পুলিশ এখনো ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে। কখনো জঙ্গি, কখনো শিবির, আাবার বিদেশি জড়িত বলে মামলাকে ভিন্নদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। স্পর্শকাতর এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশের এমন আচরণ হতবাক করেছে সচেতন মহলকে।

অপরদিকে মিতু হত্যাকাণ্ডের পর জিইসি এলাকার একটি কালি মন্দিরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ মুছে ফেলার ঘটনায় এখনো কোনো কূল-কিনারা পায়নি পুলিশ। সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদস ভট্টচার্য বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এবিষয়ে আমরা খতিয়ে দেখছি।

মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে আইজিপি বলেন, ‘দৃশ্যমান অগ্রগতি বলতে দুজনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত ওই রকম সুনির্দিষ্ট করে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে সব কিছু ক্লিয়ার হবে।’

জীবন মুছা/বিএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।