বাজেটে তামাক করের প্রতিফলন নেই
২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের মূল্যস্তর প্রথা তুলে দিয়ে সুনির্দিষ্ট শুল্ক আরোপ করার দাবি করা হলেও প্রস্তাবিত বাজেটের তামাক করে এর কোনো প্রতিফলন নেই। মূল্যস্তর প্রথা রাজস্ব ফাঁকি উৎসাহিত করে।কাজেই এই প্রথা বাতিল না করলে ভবিষ্যতে তা কর ফাঁকির পথ আরো সুগম করবে বলে মনে করছে বিভিন্ন তামাক বিরোধী সংগঠন।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রজ্ঞা ও এন্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স -আত্মা’র উদ্যোগে তামাকবিরোধী সংগঠন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, এইড ফাউন্ডেশন, অধীর ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, এসিডি, ইপসা, সীমান্তিক, উবিনীগ, ইসি বাংলাদেশ, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, টিসিআরসি, নাটাব, বিসিসিপি ও প্রত্যাশা সম্মিলিতভাবে তামাক কর বিষয়ক বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
বক্তারা বলেন, অতীতের মতই এই জটিল কর কাঠামোর সুবিধা পাবে তামাক কোম্পানিগুলো, আর বঞ্চিত হবে সরকার।একইসাথে ভোক্তাদেরও স্তর পরিবর্তনের সুযোগ অব্যাহত থাকবে।ফলে তামাকপণ্যের ব্যবহার আশানুরূপ হারে কমবে না। প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের সর্বনিম্ন মূল্য (নিম্ন স্তর) ১৮ টাকার স্থলে ২৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং এর সম্পূরক শুল্ক ২ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে এই স্তরের সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি পাবে প্রায় ২৮ শতাংশ।
তারা বলেন, এছাড়াও বাজারে বিদ্যমান ১০০ ও তদূর্ধ্ব স্তরের সিগারেটের বিষয়ে বাজেট প্রস্তাবনায় কোনো নির্দেশনা না থাকায় বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলোকে সুবিধা প্রদানের বিষয়টি আরো প্রকট হয়েছে। কারণ, এই স্তরের সকল সিগারেটের উৎপাদক দুইটি বহুজাতিক তামাক কোম্পানি। প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের ২১-৪২ টাকার মধ্যম স্তরটি তুলে দেয়া হয়েছে।
এ সময় সংবাদ সম্মেলন থেকে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরা হয়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য :
সিগারেটের করারোপের জন্য ব্যবহৃত মূল্যস্তর প্রথা তুলে দিতে হবে, এই মূলস্তর প্রথা কর ফাঁকির অন্যতম প্রধান হাতিয়ার।তামাকজাত পণ্যের উপর ‘শতকরা হার ভিত্তিক (অ্যাড ভ্যালোরেম) কর’ ব্যবস্থার-এর পরিবর্তে উচ্চহারে নির্দিষ্ট পরিমাণ (স্পেসিফিক) শুল্ক আরোপ করা—যা বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার নিরিখে তুলনামূলকভাবে সহজ পদ্ধতি।
সব ধরনের সিগারেটের উপর একই হারে অর্থাৎ খুচরা মূল্যের ৭০ শতাংশ সমপরিমাণ সুনির্দিষ্ট শুল্ক আরোপ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক।
সংবাদ সম্মেলনে অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আব্দুল মালিক, বিডিনিউজ২৪.কমের চিফ ক্রাইম করেসপন্ডেন্ট মর্তুজা হায়দার লিটন প্রমুখ।
এএস/এসএইচএস/আরআইপি