মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন
পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) পরিবর্তন করা হয়েছে। এ মামলায় এক আসামিকে গ্রেফতার নিয়ে সমালোচনার মুখে চারদিনের মাথায় এই পরিবর্তন আনলো পুলিশ।
আলোচিত এ মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী কমিশনার (পশ্চিম) কামরুজ্জামানকে। এর আগে এ দায়িত্বে ছিলেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক কাজী রাকিব উদ্দিন আহমেদ।
সিএমপির মুখপাত্র এডিসি আনোয়ার হোসাইন রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আলোচিত এ ঘটনায় আটক সাবেক শিবির কর্মী আবু নছরকে ৩০ লাখ টাকা নিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ ছিল কাজী রাকিব উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে।
জঙ্গি দমনে সাহসী ভূমিকার জন্য প্রশংসা কুড়ানো বাবুলের স্ত্রী হত্যায় জঙ্গিদের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ হত্যাকাণ্ডের পর সারাদেশে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া অভিযানে ৩৭ জঙ্গিসহ ৩ হাজার ১৫৫ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তনু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেফতারের দাবিও করেছে পুলিশ। তার নাম রবিন। এছাড়া এই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও সিসিটিভি ফুটেজে আসা কালো মাইক্রোবাসটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত ৯ জুন আটক নছরকে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের আদালতে তুলে রিমান্ডে নিতে চেয়েছিলেন কাজী রাকিব।
আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বাবুল আক্তারের স্ত্রী হত্যার বিচার দাবি করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিমান্ড বাতিলের আবেদন জানান। পাশাপাশি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আবু নছরের সম্পৃক্ততা নেই বলেও দাবি করেন। হাটহাজারীর মূসাবিয়া দরবার শরীফের কর্তৃত্ব নিয়ে দুই বোনের দ্বন্দ্বের জেরে নছরকে ফাঁসানো হয়েছে বলেও আদালতে দাবি করেন তারা।
এরপর আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জানতে চান, কোন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আবু নছরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? এ েসময় তদন্ত কর্মকর্তা কাজী রাকিব উদ্দিন তার কথা আদালতের সামনে তুলে ধরলে আদালত কোনো দালিলিক প্রমাণ আছে কি না সেটি জানতে চান।
জবাবে কাজী রাকিব উদ্দিন আহমেদ জানান, আবু নছর গুন্নু হত্যাকাণ্ডের দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিতির বিষয়টি আমরা মোবাইল ট্র্যাকিং করেও নিশ্চিত হয়েছি। এছাড়া আসামি নিজেও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সেটি স্বীকার করেছেন।
এ সময় তদন্ত কর্মকর্তাকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, ‘বাবুল আক্তার বাংলাদেশের একজন সৎ ও সাহসী অফিসার। তাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। তার স্ত্রীর হত্যাকাণ্ডের এই মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। মামলায় এমন কাউকে গ্রেফতার করবেন না, যাতে করে মামলার গ্রহণযোগ্যতা ও মোটিভ নষ্ট হয়ে যায়। সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামি গ্রেফতার করে মামলাটি সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত করবেন।’
জীবন মুছা/এনএফ/এবিএস