যেভাবে হত্যা করা হয় এসপি বাবুলের স্ত্রীকে


প্রকাশিত: ০৭:৫৩ এএম, ০৫ জুন ২০১৬

পরিকল্পিত এবং টার্গেট করেই এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন মিতুকে (৩২) হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আগে থেকে তার (মাহমুদা খাতুন মিতু) গতিবিধি লক্ষ্য এবং নজরধারী করছিল সন্ত্রাসীরা। হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক আলামত দেখে এ ধারণা করছে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

প্রতক্ষ্যদর্শীদের বিবরণ দিয়ে সিএমপির কর্মকর্তারা জানান, বাবুল আক্তার পরিবার নিয়ে গত ৩ বছর ধরে নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন ওআর নিজাম রোড (মেট্রোপলিটন হাসপাতালের পিছনের বিল্ডিং) ইক্যুইটি সেঞ্চুরিয়াম ভবনে বসবাস করতেন। তার অনুপস্থিতিতে ছেলে মাহির (৭) ও মেয়ে তাবাসসুমকে নিয়ে মাহমুদা খাতুন মিতু বাস করে আসছিলেন।

রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ছেলে মাহিরকে নিয়ে স্কুলের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন মাহমুদা মিতু। তারা বাসা থেকে হেঁটে গাড়িতে উঠার জন্য জিইসির মোড়ে দিকে যাচ্ছিলেন। মা-ছেলে কয়েকশ গজ দূরে যেতেই ওয়েলফুড’র সামনে মোটর সাইকেলে ৩ আরোহী ধাক্কা দিয়ে মিতুকে রাস্তায় ফেলে দেয়। এরপর মিতুর হাতে ধরে থাকা ছেলে মাহিরকে ছাড়িয়ে নিয়ে প্রথমে ছুরিকাঘাত ও পরে কানের কাছে পিস্তল ঠেকিয়ে পর পর তিন রাউন্ড গুলি চালায়।

এতে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন মিতু। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে দুর্বৃত্তরা মোটর সাইকেলে দ্রুত পালিয়ে যায় বলে জানান তিনি।

এদিকে, জিইসির মত জনবহুল এলাকায় প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে দুর্বৃত্তরা নির্বিঘ্নে পালিয়ে গেলেও কেউ কোনো প্রতিরোধ করার সাহস পাননি।

mitu

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, কাপড় দিয়ে ঢাকা নিহত মিতুর রক্তাক্ত দেহ রাস্তার পাশে পড়ে আছে। অসংখ্য পুলিশ, ডিবি সদস্য, সিআইডি, পিবিআই পুলিশ এলাকা ঘিরে রেখেছে। পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত রয়েছেন।

বাবুল আক্তারে ভাড়া বাসার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা (ভবনের গার্ড) মো. সাত্তার জানান, ম্যাডাম (মাহমুদা খাতুন মিতু) বাচ্চাকে নিয়ে সকালে বেরিয়ে যেতে দেখেছি। তখন ভবনের আশেপাশে তেমন সন্দেহজনক কাউকে দেখিনি। বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর দেখি উনার ছেলে হাপাতে হাপাতে গেইটে চলে আসে। তাকে জিজ্ঞাসা করলে বলে মাকে মেরে ফেলেছে। এ কথা শুনেই আমরা কয়েকজন দৌঁড়ে গিয়ে দেখি ম্যাডামের মরদেহ রক্তাক্ত অস্থায় পড়ে রয়েছে।

ঘটনাস্থলে সিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের জানান, খুবই মর্মান্তিক। আমরা দ্রুত খুনিদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারে ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতোমধ্যে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলছে। খুনিরা যাতে নগরী ছেড়ে যেতে না পারে এ জন্য বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশী চালানো হচ্ছে।

এ হত্যাকাণ্ডে নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি জড়িত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান কমিশনার।

জীবন মুছা/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।