আসছে কর্মপরিকল্পনা

ডিসেম্বরে ভোট করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে ইসি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:২৭ এএম, ০৮ এপ্রিল ২০২৫

সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ‘নির্বাচনের ব্যাপারে আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি, এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।’ আর প্রধান উপদেষ্টার এ কথা ধরেই জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন করার লক্ষ্য ধরে তফসিলের আগে ও পরে মিলিয়ে কাজের ফর্দ চূড়ান্ত ও বাস্তবায়ন সূচি করে রোডম্যাপের আদলে এবারও ‘অ্যাকশনপ্ল্যান বা কর্মপরিকল্পনা’ করা হচ্ছে। ডিসেম্বরে ভোট, এটা নিয়ে যাতে আর কোনো বিতর্ক না থাকে, সে জন্য জুলাইয়ের মধ্যে এই কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করবে ইসি।

বিজ্ঞাপন

ভোটের প্রাথমিক কাজ শেষ করে জুন-জুলাইয়ে ‘কর্মপরিকল্পনা বা অ্যাকশনপ্ল্যান’ ঘোষণা করা হবে ইনশাহআল্লাহ। এটা আয়নার মতো পরিষ্কার হয়ে আছে। যাতে আর কোনো কনফিউশন না থাকে, সেজন্য তো জুন-জুলাইয়ে (অ্যাকশনপ্ল্যান প্রকাশ) করতে হবে।-ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে এই কর্মপরিকল্পনার কথা জানা গেছে।

সাংবিধানিকভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। যদিও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আগামী সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা মূলত নির্ভর করছে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্রুত নির্বাচনের তাগিদও রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ফলে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে প্রস্তুতিমূলক কাজ গোছানোর মধ্যে ডিসেম্বরকে লক্ষ্য ধরে ‘কর্মপরিকল্পনা’ আনছে এএমএম নাসির উদ্দিন কমিশন। ভোটের অন্তত ছয় মাস আগে অন্তত দুই ডজন বিষয়ভিত্তিক নির্বাচনী প্রস্তুতিমূলক কাজের ফর্দ তৈরি করে রাখতে হবে। রোডম্যাপের আদলে এ সংক্রান্ত ‘অ্যাকশনপ্ল্যান’ নিয়ে খসড়া তৈরির কাজ চলছে।

সোমবার (৭ এপ্রিল) নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ভোটের প্রাথমিক কাজ শেষ করে জুন-জুলাইয়ে ‘কর্মপরিকল্পনা বা অ্যাকশনপ্ল্যান’ ঘোষণা করা হবে ইনশাহআল্লাহ। এ নির্বাচন কমিশনারের ভাষ্য, ডিসেম্বরে নির্বাচন- এটা আয়নার মতো পরিষ্কার হয়ে আছে। যাতে আর কোনো কনফিউশন না থাকে, সেজন্য তো জুন-জুলাইয়ে (অ্যাকশনপ্ল্যান প্রকাশ) করতে হবে।

আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, আমাদের খসড়া কিন্তু মোটামুটি করা। শুধু ডেট, টাইমটা (এর জন্য অপেক্ষা)। সিডিউল ঘোষণার আগে তো (প্রস্তুতিমূলক কাজ) সব করে ফেলতে হবে। জুলাই-আগস্টে দিতেই হবে। ৬০-৭০ দিন আগে অক্টোবরে তফসিলের পরিকল্পনা রয়েছে। ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।

সবশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধে ‘কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ’ অনুষ্ঠান করে তৎকালীন ইসি। এর আগে একাদশ সংসদ ২০১৮ সালে অক্টোবরের মাঝামাঝি ভোটের কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়নসূচি অনুমোদন করে তৎকালীন কমিশন। দশম সংসদ নির্বাচনের দুই বছর আগে রোডম্যাপ ঠিক করে তৎকালীন ইসি। (প্রাক নির্বাচন ও তফসিল পূর্ববর্তী) প্রাথমিক কর্মপরিকল্পনা’ এবং (তফসিল ঘোষণার পর) নির্বাচন পরিচালনার জন্য কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের সূচি’ সংক্রান্ত চেক লিস্ট করা হয়ে থাকে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

২০০৭-২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো রোডম্যাপ ঘোষণা করার প্রচলন করে তৎকালীন ইসি। ২০০৭ সালের ১৫ জুলাই দেড় বছরের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়, যাতে ২০০৮ সালে অক্টোবর-ডিসেম্বরে তফসিল ও ভোটের সময়সূচি ধরা হয়। ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন শুরু হয়। ব্যাপক আইন-বিধি সংস্কার, দল নিবন্ধন ও এ তালিকা দিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচন হয়। এ ধারাবাহিকতা পরবর্তী সময়ে রোডম্যাপ বা অ্যাকশনপ্ল্যান বা কর্মপরিকল্পনা বা চেকলিস্ট নামে প্রচলিত রয়েছে। যা ইসি এখনো অব্যাহত রাখছে।

বর্তমান ইসি গেলো বছর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে দায়িত্ব নেয়। মে মাসে ছয় মাস পূর্ণ হবে। এরই মধ্যে হালনাগাদ ভোটার তালিকার কাজও শেষ হচ্ছে। এটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মেয়াদের এক বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের কাজ সারতে হবে এ কমিশনকে।

এরই মধ্যে চলমান সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে ডিসেম্বরে ভোটের বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে সম্ভাব্য সময়সীমার কথাও জানানো হয়েছে। সংস্কার কাজ বেশি করতে চাইলে পরের বছর জুনের মধ্যে ভোটের কথা বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তবে নির্বাচন কমিশন বলছে, এ বছরের ডিসেম্বেই টার্গেট; এ জন্যে জুলাই-আগস্টের মধ্যে সব প্রস্তুতিমূলক কাজ গুছিয়ে রাখা হবে। মতবিনিময় হবে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে। অক্টোবরের দিকে তফসিলের পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। আগেও ডিসেম্বরে ভোট করতে নভেম্বরের দ্বিতীয়-তৃতীয় সপ্তাহে তফসিলের নজির রয়েছে।

নতুন দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক নীতিমালা, ভোটকেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার, নির্বাচনী সরঞ্জাম কেনাকাটাসহ সংশ্লিষ্ট আইন-বিধি সংস্কারের পদক্ষেপ চলমান বলে জানিয়েছে ইসি।

রাজনৈতিক দল, অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময়, আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা, ভোটের বাজেট চূড়ান্ত, আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ও মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠক, রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের ব্রিফিং, নির্বাহী-বিচারিক হাকিম নিয়োগ নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত, প্রশিক্ষণ, ম্যানুয়াল মুদ্রণ, মনোনয়নপত্র মুদ্রণসহ আনুষাঙ্গিক বিষয়াদি নিয়ে কাজের শুরু ও শেষ করার সম্ভাব্য সময় পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তফসিলের আগে ও পরে ভোটার তালিকা মুদ্রণ, কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা, ব্যালট বাক্স সরবরাহ, ব্যালট পেপার ছাপানো থেকে ফলাফল গেজেটে প্রকাশের মতো কাজের শতাধিক ফর্দ থাকে অ্যাকশনপ্ল্যানে। নির্বাচন আয়োজনের পথে ইসির প্রস্তুতির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানান, এটাকে রোডম্যাপ না বলে কর্মপরিকল্পনা বা অ্যাকশনপ্ল্যান হিসেবে তুলে ধরা হবে।

‘ডকুমেন্টারি যে রোডম্যাপটা হয়’ সে বিষয়ে তিনি বলেন, সেটা একটা হবেই ইনশাহআল্লাহ। প্রকাশনার মধ্যে থাকবে। আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, আমাদের খসড়া কিন্তু মোটামুটি করা। শুধু ডেট, টাইমটা (এর জন্য অপেক্ষা)। শিডিউল ঘোষণার আগে তো (প্রস্তুতিমূলক কাজ) সব করে ফেলতে হবে। জুলাই-আগস্টে দিতেই হবে। ৬০-৭০ দিন আগে অক্টোবরে তফসিলের পরিকল্পনা রয়েছে। ডিসেম্বরে যদি নির্বাচন করি, এটা আয়নার মতো পরিষ্কার হয়ে আছে। যাতে আর কোনো কনফিউশন না থাকে, সেজন্য তো জুন-জুলাইয়ে (অ্যাকশনপ্লান প্রকাশ) করতে হবে।

ভোটের পথে তফসিলের আগে ও পরে যত কাজ

>> ভোটার তালিকা, আইন-বিধি-নীতিমালা সংস্কার, সংলাপ, সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস, নতুন দল নিবন্ধন।

বিজ্ঞাপন

>> চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ; তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সংসদীয় আসন অনুযায়ী ৩০০ এলাকার তালিকা প্রস্তুতি, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ-তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে গেজেট প্রকাশ।

>> প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন।

>> প্রার্থীদের জন্য মনোনয়নপত্রের সঙ্গে নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক ছবি ছাড়া ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুত।

বিজ্ঞাপন

>> ছবিসহ ও ছবি ছাড়া ভোটার তালিকার প্রয়োজনীয় সংখ্যক কপি মুদ্রণ।

>> সম্পূরক ভোটার তালিকার সিডি রেজিস্ট্রেশন অফিসারকে সরবরাহ।

>> বিদেশি পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমের জন্য হেল্পডেস্ক করতে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ; নিয়মিত সংবাদ অবলোকন করে কমিশনকে জানাতে টিম গঠন; সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা; সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের জন্য কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে সভা পরিকল্পনা।

>> নির্বাচনে ব্যবহৃত সব ফরম, প্যাকেট মুদ্রণ সম্পন্ন। ব্যালট বাক্স, লকসহ নির্বাচন দ্রব্যাদির মজুদ পরীক্ষা করে জেলা নির্বাচন অফিসারদের জানানো।

>> মনোনয়নপত্র দাখিল সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক পর্যায়ের বিভিন্ন ফরম (ফরম-১, ফরম ২, ফরম-৩), প্যাক্টেসহ অন্যান্য দ্রবাদি মাঠ পর্যায়ে পাঠানো। নির্বাচনী দ্রব্য-স্ট্যাম্প প্যাড, মার্কিং সিল, ব্রাস সিল, অফিসিয়াল সিল, গালা ইত্যাদি সংগ্রহ।

>> ভোটের জন্য আগে সব ব্যালট বাক্স পুনরায় যাচাই ও ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা।

>> ম্যানুয়াল মুদ্রণ শেষ করে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠানো।

>> মাঠ পর্যায় থেকে ভোটকেন্দ্রের তালিকা কমিশনের অনুমোদনের জন্য নির্দেশনা (তফসিল ঘোষণার ৭ দিনের মধ্যে পাঠাতে হবে)।

>> বিভিন্ন প্রকার ম্যানুয়াল ও নির্দেশিকা মুদ্রণ; ভোটের ফল প্রদর্শন, প্রচার, ডিজিটাল মনিটর স্থাপন ও যন্ত্রপাতি সংযোজন (ভোটের ১৫ দিন আগে)।

>> আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক, ঋণখেলাপি সংগ্রহ তথ্য সংগ্রহ, ভোটকেন্দ্র থেকে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে ভোট গণনার বিবরণী, ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ, ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি গঠনসহ সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবনা তৈরি।

>> ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রাথমিক প্যানেল প্রস্তুতে নীতিমালা উপস্থাপন; প্যানেল প্রস্তুতে কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা সংগ্রহে নির্দেশনা; তফসিল ঘোষণার পর রিটার্নিং কর্মকর্তা প্যানেল চূড়ান্ত করবে।

>> উপজেলা নির্বাহী অফিসারের শূন্যপদ পূরণে জনপ্রশাসনকে অনুরোধ; সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিনে এবং অফিস সময়ের পরে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা

>> ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষ অনুসারে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নির্ধারণ করে রিটার্নিং অফিসারে কাছে তথ্য সংগ্রহ; ভোটের ১৫ দিন আগে নিয়োগ চূড়ান্ত ও প্রশিক্ষণ-সংক্রান্ত নির্দেশনা।

>> আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক প্রস্তাবনা ও সভার পরিকল্পনা; বিভিন্ন বাহিনী মোতায়েন, ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ ও বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা পাঠানো সংক্রান্ত প্রস্তাব উপস্থাপন (তফসিল ঘোষণার পর কার্যক্রম গ্রহণ)।

>> প্রশিক্ষণ, প্রচার: ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা; আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ম্যাজিস্ট্রেট, ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটি ও জেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা প্রণয়ন; প্রশিক্ষণ।

>> দল ও দলীয় প্রধানদের প্রচারণা নিয়ে নীতিমালা জারি

>> ফল সংগ্রহ ও পরিস্থিতি প্রতিবেদন

আশু বাস্তবায়নযাগ্য সুপারিশ আমলে নিয়ে কাজ চলছে

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান সংলাপের মধ্যে সরকারের তরফ থেকে আইন-বিধি-নীতিমালা সংস্কারে আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবও চাওয়া হয়েছে ইসির কাছে। এ নিয়ে কোনো ধরনের জটিলতা তৈরি হবে না বলে মনে করে ইসি।

নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, এটা কোনো সাংঘর্ষিক বিষয় নয়। ইসি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ভোট উপহার দেওয়া কাজ। ভালো নির্বাচনের জন্য ইসি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। কারও সঙ্গে মুখোমুখি নয়, কারও সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়; সবাই ইসিকে সহযোগিতা করবে, আশু সংশোধনযোগ্য বিষয়গুলো আমরাও সুপারিশ করবো।

তিনি বলছেন, ডিসেম্বর ধরেই আমাদের প্রস্তুতি এগিয়ে যাচ্ছে। জুনের মধ্যে ভোটার তালিকার কাজ শেষ হবে। এরমধ্যে নতুন ও বাদ পড়া মিলিয়ে ৬২ লাখের মতো যুক্ত হবে তালিকায়; মৃত ভোটার বিদ্যমান তালিকা বাদ যাবে ২০ লাখের মতো। সাড়ে ১২ কোটিরি বেশি ভোটারের কথা বিবেচনায় নিয়ে ভোটকেন্দ্রসহ যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে হবে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে। তফসিল ঘোষণার একমাস দিন আগেই ১০-২০টা দল বা কোনো দল নিবন্ধন চাইলে দেওয়া সম্ভব হবে না। দলের নিবন্ধন গেজেট প্রকাশ তফসিল ঘোষণার আগেই শেষ করতে হবে। এ জন্য যাচাই-বাছাই শেষে জুলাই-আগস্টের মধ্যে এটা শেষ করার কথা।

নির্বাচনী আইন আরপিওর সঙ্গে সব বিধি ও নীতিমালা সম্পৃক্ত রয়েছে। এগুলো যথাসময়ে করে গেজেট করে নিতে হবে। এ নির্বাচন কমিশনার জানান, আরপিও সংশোধানসহ অন্যান্য নির্বাচনী আইন সংশোধনের বিষয়ে প্রস্তাবনা তৈরি হচ্ছে। প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার জন্য ‘প্রক্সি ভোটের’ বিধানটি যুক্ত করতেও আরপিও সংশোধন করতে হবে। আচরণবিধির খসড়াও চূড়ান্ত হয়ে আছে।

সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত সংশোধন প্রস্তাবও সরকারের কাছে দেওয়া হছে, নতুন করে সংশোধন করে না এলে আগের সীমানায় ভোট করতে হবে। নির্বাচন ব্যবস্থা সরকার কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে ‘সমন্বয়’ রেখে বেশ কিছু সংস্কার প্রস্তাব রয়েছে বলে জানান তিনি।

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

বিরাজমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক ও অনুকূল পরিবেশ রয়েছে বলে মনে করেন এ নির্বাচন কমিশনার। মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলাপরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে, নিঃসন্দেহে তুলনামুলক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এ কয় মাসে যদি পরিস্থিতির ইমপ্রুভমেন্ট হয়ে যায় এবং ডিসেম্বর পর্যন্ত এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে আশা করা যায়।

এমওএস/এসএনআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।