ঈদের কেনাকাটায় জমজমাট মিরপুরের ফুটপাত

ঈদের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। এ কারণে প্রিয়জন ও নিজেদের জন্য কেনাকাটা করতে রাজধানীর মিরপুরের ফুটপাতগুলোতে ভিড় করছেন ক্রেতারা।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরের পর মিরপুর-১০ গোলচত্বর সংলগ্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, শাহআলী মার্কেটের সামনের ফুটপাত, হোপের গলি, ফায়ার সার্ভিসের সামনের ফুটপাত, মিরপুর স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তাসহ আশপাশের সব ফুটপাত ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত হয়ে আছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, বছরের সবসময়ই এখানকার ফুটপাতে মানুষের ভিড় লেগে থাকে। তবে ঈদ এলে এখানে বাড়তি মাত্রা যোগ হয়। নিয়মিত ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও বাড়তি লাভের আশায় বসেন ফুটপাতে।
তেমনি একজন মায়েজ হান্নান। জাগো নিউজকে এই ব্যবসায়ী বলেন, আমি গাজীপুর থেকে এসেছি। সেখানে একটা হোটেলে কাজ করি। কিন্তু ঈদের মৌসুম এলে মিরপুরের বিভিন্ন ফুটপাতে ব্যবসা করি। আমার মতো অনেক ব্যবসায়ী আছেন যারা ঈদের সময় এ ধরনের ব্যবসা করেন।
তিনি বলেন, একেক ঈদে একেক ব্যবসা করি। এবার আমি সানগ্লাসের ব্যবসা করছি। আমার এখানে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সানগ্লাস আছে।
ফুটপাতে দখল করে এই দোকানগুলো হওয়ার কারণে হাঁটার মতো জায়গাও নেই। মানুষের ভিড়ে নেই তিল ধারণের ঠাঁই। প্রচুর ধাক্কাধাক্কি, বিক্রেতাদের হাঁকডাক, ক্রেতাদের দরদাম এবং গাড়ির হর্নে এক কোলাহলপূর্ণ পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
মূলত নিম্ন এবং নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের আনাগোনা থাকে ফুটপাতের এইসব দোকানগুলোয়। তবে ঈদের এই মৌসুমে সব ধরনের শ্রেণী-পেশার মানুষই ভিড় করছেন ফুটপাতের এসব দোকানে।
মিরপুর ১০ এলাকায় অনেক পণ্যের শোরুম রয়েছে। এসব শোরুমের সামনেই যে ফুটপাত আছে সেখানেই বসেছেন ব্যবসায়ীরা।
শাহীন আলম নামের এক বিক্রেতার সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বিভিন্ন শোরুমে যে ধরনের ডিজাইন এবং মানের কাপড় পাওয়া যায় সেই একই রকমের ডিজাইন এবং কাছাকাছি মানের কাপড় পাওয়া যায় আমাদের কাছে। তাই শোরুমের মতো এইসব দোকানেও অনেক ভিড় থাকে।
এছাড়া বিভিন্ন গার্মেন্টসের এক্সপোর্ট কোয়ালিটির রিজেক্টেড পণ্যও আমরা কমদামে বিক্রি করি। এসব এক্সপোর্ট কোয়ালিটির পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে, বলছিলেন শাহীন।
কবির নামে এক ক্রেতা বলেন, শোরুমে তো দামাদামির সুযোগ নেই, ফিক্সড প্রাইস। কিন্তু এসব দোকানে দামাদামি করার সুযোগ আছে। আমি অনেকগুলো শোরুমে গিয়েছি। সেখানে যেসব ডিজাইন দেখেছি, এখানেও একই রকম ডিজাইনই দেখছি। খুব একটা পার্থক্য নেই। তবে কাপড়ের মান একটু কম-বেশি আছে।
ফুটপাতের এই সব দোকানে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের পোশাক, জুতা, বেল্ট, সানগ্লাস, গয়না, পাওয়া যায়। দামও হাতের নাগালে থাকায় অনেকে শোরুমে ডিজাইন পছন্দ করে এখান থেকে কিনে থাকেন।
মিরপুরে ফায়ার সার্ভিসের সংলগ্ন যে ফুটপাত রয়েছে সেখানে জুতার বিশাল এক বাজার বসেছে। আগে এখানে পুরাতন বইয়ের দোকান ছিল। এখানে চামড়া, ম্যানমেড ফাইবার, রেকসিন, পলিফাইবার থেকে শুরু করে সব ধরনের জুতা পাওয়া যায়। ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০০ টাকার মধ্যে পছন্দের জুতা পাওয়া যায় এখানে।
ইয়াস নামের এক ক্রেতা বলেন, বিভিন্ন অনলাইন ও ফেসবুক পেজে যেসব জুতা দেখা যায় সেগুলোর বেশিরভাগই এখানে পাওয়া যায়, দামও কম। আমি একজোড়া কিনেছি। ভাল হলে আরও একজোড়া কিনব।
এসআরএস/এএমএ/এমএস