সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে যানজটে নগরবাসীর ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৪৩ পিএম, ২০ মার্চ ২০২৫

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে কর্মঘণ্টা শেষ হতেই যানজটে আচ্ছন্ন হয়ে আছে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক। একই সঙ্গে স্থানভেদে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর মেঘলা আকাশের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন কাজ শেষে ঘরে ফেরার অপেক্ষায় থাকা সাধারণ মানুষ।

ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সিয়াম সাধনার মাস রমজান। দিনের কর্মব্যস্ততা শেষ করে পরিবারের সঙ্গে ইফতারের মধ্যেই যেন সারাদিনের ক্লান্তি আর পরিশ্রমের অবসান ঘটে রোজাদার সাধারণ মানুষের। কিন্তু নগরীর অসহনীয় যানজটে ইফতারের আগে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত সরেজমিনে রাজধানীর, নীলক্ষেত, নিউমার্কেট এলাকা, এলিফ্যান্ট রোড, সাইন্সল্যাব, কলাবাগান, ধানমন্ডি, কলেজগেট, শিশুমেলাসহ বিভিন্ন স্থানে যানজটের এই চিত্র চোখে পড়ে।

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে যানজটে নগরবাসীর ভোগান্তি

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও গুগল ম্যাপের সহযোগিতায় রাজধানীর মৎস্য ভবন এলাকা, শাহবাগ এলাকা, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, তেজগাঁও, বিজয় সরণি, মহাখালী, রামপুরা, হাতিরঝিল, বাড্ডা, গুলশান, বনানী, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউসহ বিভিন্ন স্থানে তীব্র যানজটের চিত্র দেখা যায়। এ সময় যাত্রীদের গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে, পায়ে হেঁটে চলাচল করতে ও কিছুু কিছু গণপরিবহনে যাত্রীর মাত্রাতিরিক্ত চাপ দেখা গেছে।

নিউমার্কেট থেকে মিরপুর ১ নম্বরগামী আসাদুল বলেন, নিউমার্কেট থেকে গাড়িতে উঠেছি প্রায় ৩০ মিনিট আগে। মিরপুর এক নম্বরে যাব। কিন্তু রাস্তায় যে জ্যাম, সিটি কলেজের সামনে পৌঁছাতেই আধা ঘণ্টা লেগেছে। পুরো রাস্তায় যদি এমন জ্যাম পাই তাহলে ইফতারের আগে বাসায় যাওয়া সম্ভব নয়।

গাড়ির অপেক্ষায় এলিফ্যান্ট রোড সিনন্যালে দাঁড়িয়ে আছেন জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, অধিকাংশ গাড়ি যানজটে আটকে আছে। দীর্ঘক্ষণ পরপর যে গাড়িগুলো আসছে সেগুলোতেও ভিড়। ইফতারেরও সময় হয়ে যাচ্ছে। বাসা থেকে ফোন দিচ্ছে, কিন্তু কত সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে বলতে পারি না।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

রাজধানীর নিউমার্কেট থেকে মৌমিতা পরিবহনের একটি গাড়িতে উঠেছেন আবির হোসেন, গন্তব্য সাভার। যানজটের কারণে প্রতিনিয়ত ইফতারের পরে বাসায় পৌঁছান তিনি। কিছুটা আক্ষেপ প্রকাশ করে আবির বলেন, কী আর বলব, এটাই বাংলাদেশ। এ দেশের কোনোকিছুই সমাধান করা সম্ভব না। প্রতিটা দিন অফিস শেষ করে গাড়িতে উঠি। আর গাড়িতে ওঠার সময় এক বোতল পানি কিনে নিই। কারণ জানি যে ইফতারের আগে পৌঁছাতে পারব না। ছুটির দিন বাদে একটা দিনও পরবারের সঙ্গে ইফতার করতে পারি না। আমিনবাজার পার হতে হতেই ইফতারের সময় হয়ে যায়। তাই এই যানজট নিয়ে আর কিছু বলে লাভ নেই। ঢাকা শহরের এই যানজটের সমাধান হবে না কোনোদিন।

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে যানজটে নগরবাসীর ভোগান্তি

এদিকে পবিত্র রমজান মাসে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অফিস চলবে বলে নির্দেশনা দিয়েছিল সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছিল। রমজান মাসে সেহরি ও ইফতারের সময় বিবেচনায় এই সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছিল বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, ব্যাংক, বিমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ডাক, রেলওয়ে, হাসপাতাল ও রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা এবং অন্যান্য জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জনস্বার্থ বিবেচনা করে তাদের নিজস্ব আইন বা বিধি অনুযায়ী অফিসের সময় নির্ধারণ করবে। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট ও তার আওতাধীন সব আদালতের সময়সূচি সুপ্রিম কোর্ট নির্ধারণ করবে।

কেআর/এএমএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।