যানজটে দিশেহারা নগরবাসী, পথেই ইফতার

অভিজিত রায় (কৌশিক)
অভিজিত রায় (কৌশিক) অভিজিত রায় (কৌশিক) , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:০৪ পিএম, ১৯ মার্চ ২০২৫
যানজটে স্থবির রাজধানী/ছবি- জাগো নিউজ

সিয়াম সাধনার মাস রমজান। দিনের কর্মব্যস্ততা শেষ করে পরিবারের সঙ্গে ইফতারের মধ্যেই যেন সারাদিনের ক্লান্তি আর পরিশ্রমের অবসান ঘটে। কিন্তু কর্মব্যস্ততা শেষে নগরীর সড়কের যানজটই যেন প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় রোজাদারদের।

বুধবার (১৯ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ও গুগল ম্যাপের সহযোগিতায় বিভিন্ন সড়কে যানজটের স্থবিরতার চিত্র দেখা গেছে। ফলে ইফতারের আগে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ।

বিজ্ঞাপন

যানজটে দিশেহারা নগরবাসী, পথেই ইফতার

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর মৎস্য ভবন, শাহবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, তেজগাঁও, বিজয় সরণি, রামপুরা, হাতিরঝিল, বাড্ডা, গুলশান, বনানী, রামপুরা অঞ্চলে যানজটের চিত্র দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এছাড়া মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, আড়ং আসাদগেট, কলেজগেট, শ্যামলী, আগারগাঁও, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘ যানজটের চিত্র দেখা গেছে।

ফলে যানজট নিরসন করে রোজাদারদের নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে অধিকাংশ সিগনালে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের ব্যস্ততার চিত্রও দেখা গেছে। এছাড়াও যাত্রীদের গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে, পায়ে হেঁটে চলাচল করতে ও গণপরিবহনে যাত্রীর চাপও দেখা গেছে।

বিকেল ৪টা বেজে ২০মিনিট। রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, রাস্তার যানজট তো দেখছেন, কী ভয়াবহ অবস্থা। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি গাড়ির অপেক্ষায়, এই যানজটে গাড়ি আসতেই পারছে না। গাড়িতে উঠতে না পারা তো পরের কথা। গাড়ি আসবে তারপর তো উঠবো।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ইফতারের আগে বাসায় পৌঁছাতে পারবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি পুরো রাস্তায় যানজটের এই পরিস্থিতি থাকে তাহলে আশা করা যায় গাড়িতেই ইফতার করতে হবে। পরিবারের সঙ্গে ইফতার সম্ভব হবে না মনে হয়।

ঠিক তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন ইব্রাহিম নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবী। রাজধানীর পল্টনের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তিনি।

তিনি বলেন, পল্টন থেকে গাড়িতে উঠেছি। জ্যাম ঠেলে ৩০-৪০ মিনিটে মৎস্য ভবন পর্যন্ত আসতে পেরেছি। এরপর যে যানজটে পড়েছি সব গাড়ি বন্ধ করে বসে আছে। কোনো গাড়ির চাকা ঘুরছে না। পরে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে শাহবাগে চলে এসেছি। ভেবেছিলাম এই জ্যামটুকু পার হয়ে গাড়িতে উঠলে পৌঁছে যেতে পারবো। কিন্তু এখানে এসেও সামনে যতদূর দেখছি শুধু যানজট।

বিজ্ঞাপন

এদিকে যানজটে গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অবশেষে অতিরিক্ত টাকা গুনে মোটরবাইক সার্ভিসের দ্বারস্থ হয়েছেন মিনহাজ। তিনি বলেন, যানজটে বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি আটকে আছে। গাড়ি পাচ্ছি না। গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই ইফতারের সময় শেষ হয়ে যাবে। তাই পাঠাও ভাড়া করেছি। অন্তত জ্যামে পড়লেও যেন অলিগলি দিয়ে বের হয়ে যেতে পারি।

যানজটে দিশেহারা নগরবাসী, পথেই ইফতার

তিনি বলেন, বাসে গেলে যেখানে মাত্র ২০ টাকা ভাড়া সেখানে ১৫০ টাকা দিয়ে পাঠাও ভাড়া করেছি। কতগুলো টাকা অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে শুধু ইফতারের আগে বাসায় পৌঁছানোর জন্য।

বিজ্ঞাপন

এদিকে পবিত্র রমজান মাসে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অফিস চলবে বলো নির্দেশনা দিয়েছিল সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছিল। রমজান মাসে সাহরি ও ইফতারের সময় বিবেচনায় এই সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছিল বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছিল।

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, ব্যাংক, বিমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ডাক, রেলওয়ে, হাসপাতাল ও রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা এবং অন্য জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জনস্বার্থ বিবেচনা করে তাদের নিজস্ব আইন বা বিধি অনুযায়ী অফিস সময় নির্ধারণ করবে। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট ও তার আওতাধীন সব আদালতের সময়সূচি সুপ্রিম কোর্ট নির্ধারণ করবে।

কেআর/এমআরএম/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।