ড্যাপ বাতিল ও ইমারত বিধিমালা বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৩৭ পিএম, ১৮ মার্চ ২০২৫

বৈষম্যমূলক ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) বাতিল ও ইমারত বিধিমালা ২০২৫ বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আবাসন কোম্পানি, অ্যাসোসিয়েশনের নেতা ও ভূমির মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

মানববন্ধনে রিহ্যাব সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, পতিত সরকারের কতিপয় দোসরদের প্রেসক্রিপশনে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে পাশ কাটিয়ে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে কোভিড চালাকালীন তাড়াহুড়ো করে দেশের স্বার্থবিরোধী বেআইনি ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) প্রকাশ করা হয়। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেড়ে নেওয়া হয় ঢাকা মহাগরে ভবন নির্মাণের অধিকার। নগরবাসীর মধ্যে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সৃষ্টি করা হয় চরম বৈষম্য। যার ফলে দ্রুতগতিতে কমছে কৃষিজমি। ফলশ্রুতিতে ভবিষ্যতে দেশে খাদ্য সংকট দেখা দেবে, পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হবে ও ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, এই ড্যাপের কারণে ঢাকা মহানগরের ৮০ শতাংশ এলাকাই অপরিকল্পিত থেকে যাবে। শহর একটা মরনফাঁদে পরিণত হতে যাচ্ছে। যেখানে কোনো রকমের প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা দুর্ঘটনা ঘটলে অসংখ্য প্রাণহানি ঘটবে। কাণে সরু রাস্তা দিয়ে কোনোভাবেই উদ্ধারকর্মীর গাড়ি দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারবে না। অথচ এই বৈষম্যমূলক ড্যাপের জন্য এখনও পতিত সরকারের সুবিধাবাদী কয়েকজন নগর পরিকল্পনাবিদ মায়াকান্না করে বেড়াচ্ছেন নিজস্ব স্বার্থ হাসিলের জন্য।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এ সময় আবাসন ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, ড্যাপ ২০২২-২০৩৫ বাস্তবায়নের কারণে ঢাকা শহরের পরিবেশের উন্নয়ন ও রাস্তাঘাট প্রশস্তকরণের পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কারণ ফার কমিয়ে দেওয়ার ফলে ভূমি মালিকরা ভবন নির্মাণে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এতে পাড়া-মহল্লার রাস্তাঘাটগুলো অপ্রশস্তই থেকে যাচ্ছে এবং ফাঁকা জায়গাগুলো, সেমি-পাকা জায়গাগুলো বা পুরাতন জরাজীর্ণ ভবনগুলো অস্বাস্থ্যকরই থেকে যাচ্ছে। যেখানে মাদক সেবন এবং অবৈধ কার্যকলাপসহ বহুরকমের পরিবেশ বিপর্যয়কর কাজ হচ্ছে। এক কথায় ঢাকা শহরের ৮০ শতাংশ এলাকাকে অপরিকল্পিত রেখে নগরবাসীকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের বিপর্যয় হবে, অন্যদিকে নগরবাসীরা আবাসনের মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন।

তাদের দাবি, ড্যাপের কারণে নির্মাণখাত ইতোমধ্যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সরকারের রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে, বেকারত্বের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে এবং লিংকেজ প্রতিষ্ঠানগুলো স্থবির হয়ে যাচ্ছে। অতএব, এই বেআইনি ড্যাপ অতিদ্রুত বাতিল করে দেশের বাইরের বিশেষজ্ঞ কমিটি নিয়োগ দিয়ে জনবান্ধব নতুন ড্যাপ প্রণয়নের জন্য দাবি জানাই আমরা।

ড্যাপ বাতিল করার কারণ হিসেবে বক্তারা বলেন, মহানগরীর ২০ ফিটের কম প্রশস্ত রাস্তাগুলো ন্যূনতম ২০ ফিট প্রশস্ত করার জন্য নির্মাণ বিধিমালাতে যা উল্লেখ করা ছিল, গেজেটকৃত ড্যাপে তা বাদ দেওয়া হয়েছে! ভবনের উচ্চতা কম রেখে রাস্তার পাশে নির্মাণের সব অনুমোদনসমূহ বৈধভাবেই রূপ দেওয়ার বিধি লেখা হয়েছে! আপাতদৃষ্টিতে এ বিষয়টি সহায়ক একটি উদ্যোগ মনে হলেও ভবিষ্যতের জন্য খুব খারাপ। এই সরু রাস্তাগুলোর আগামীতে প্রশস্ত হওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে গেল এবং মহানগরীর অতি দামি জমি তার প্রাপ্য গুণগতমান ও মূল্য হারালো। আগামীতে মহানগরীর উন্নয়নের জন্য এ এক অশনি সংকেত।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বক্তারা জানান, গেজেটকৃত ড্যাপের বিধি অনুযায়ী ঢাকা মহানগরীজুড়ে আবাসিক এলাকাতে আবাসিক ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমতি অর্থাৎ মিশ্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অতিক্ষুদ্র রাস্তার পাশেও এ বিধিকে বৈধতায় রূপ দেওয়া হয়েছে! অর্থাৎ এখন থেকে সব জমি বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত এবং আইনত শুদ্ধ। ফলে এখন থেকে মহানগরীতে আর শুদ্ধ কোনো আবাসিক এলাকা থাকবে না।

ইএআর/এএমএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।