সচেতনতায় বড় দুর্ঘটনার হার কমেছে: ফায়ার সার্ভিস

অগ্নিকাণ্ডসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় সতর্কতা ও করণীয় স্লোগান সংবলিত ব্যানার নিয়ে স্থির সমাবেশ করেছে ফায়ার সার্ভিস। একই সঙ্গে উপস্থিত পথচারীদের ফায়ার এক্সটিংগুইসার ব্যবহার করে অগ্নিনির্বাপণ পদ্ধতি প্রদর্শন করা হয়।
সাধারণ মানুষের মধ্যে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মসূচিতে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে অগ্নিকাণ্ডে বড় ধরনের দুর্ঘটনার হার কমেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) জাতীয় জাদুঘরের সামনে স্থির সমাবেশ ও অগ্নিনির্বাপণ পদ্ধতি প্রদর্শন শেষে এসব জানান ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন।
এদিন ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিনের নেতৃত্ব বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ১১ দিনব্যাপী স্থির সমাবেশের সমাপ্তি করা হয়। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই ১১ দিনে ঢাকা মহানগরীর ৩৭টি স্থানে স্থির সমাবেশ করা হয়। স্থির সমাবেশের পাশাপাশি উপস্থিত পথচারীদের ফায়ার এক্সটিংগুইসার ব্যবহার করে অগ্নিনির্বাপণ পদ্ধতি প্রদর্শন করা হবে।
- আরও পড়ুন
- গাজীপুরে চার ঘণ্টা পর মহাসড়ক ছাড়লেন শ্রমিকরা
- সাভারে বিদ্যুতের পাওয়ার গ্রিডের আগুন নিয়ন্ত্রণে
মো. ছালেহ উদ্দিন বলেন, এই অগ্নিনির্বাপণ কর্মসূচি আমাদের কন্টিনিয়াস প্রসেস। এই কার্যক্রমটা আমাদের বিভিন্ন স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি বিভিন্ন মিল কল কারখানা ইন্ডাস্ট্রি সব জায়গায় আমাদের এই ট্রেনিং প্রোগ্রাম চলছে এবং বছরব্যাপী আমাদের অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম চলে।
এই কর্মসূচির কারণে জনগণ অনেকটাই লাভবান হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা দেখতে পান আগে বিভিন্ন গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিয়ত আগুন লাগতো এবং অনেক মানুষ মারা যেত। এখন কিন্তু গার্মেন্টসে আগুন লাগলেও সেই আগুন এতটা বড় হয় না কারণ তারা অনেকটা সচেতন এবং অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা তারা রেখেছে। আমরা পৌঁছানোর আগেই তারা অনেকটা অগ্নি নির্বাপণ করতে পারে। নির্বাপণ করতে না পারে তাহলেও আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। পরে আমরা গিয়ে সেটাকে নির্বাপণ করি।
সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা দেশব্যাপী ভালো একটা উপকার পাচ্ছি। মানুষ সচেতন হচ্ছে এবং আমাদের যেতে যতটা সময় লাগে সেই সময়ের মধ্যে আগুনটা তারা কন্ট্রোলে নিয়ে আসতে পারে। আমরা গিয়ে নির্বাপণ করতে পারি।
এ সময় উপস্থিত সাধারণ মানুষদের দুর্ঘটনা রোধে অগ্নিনির্বাপণ পদ্ধতি শেখানো হয়।
কর্মসূচিতে যেসব স্থির চিত্র প্রদর্শন করা হয়-
যেখানে সেখানে বিড়ি-সিগারেটের শেষ অংশ ফেলা থেকে বিরত থাকুন, আগুন নিয়ে খেলা হতে বিরত থাকুন।
ভবনকে নিরাপদ রাখতে ফায়ার সেফটি প্ল্যান গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করুন, ভবনের রিজার্ভারে সর্বদা পানি সংরক্ষণ করুন।
অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র রাখুন এবং পরিচালনার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করুন, জলাশয় ভরাট হতে বিরত থাকুন।
গ্যাসের তোলা জ্বালানোর আগে রান্না ঘরের দরজা জানালা খুলে দিন, রান্নার কাজে মানসম্পন্ন সিলিন্ডার ব্যবহার করুন।
বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম মানসম্পন্ন ও নিরাপদ নিয়মিত পরীক্ষা করুন, অনিরাপদ বৈদ্যুতিক সংযোগ গ্রহণ ও প্রদান হতে বিরত থাকুন।
দুর্ঘটনাস্থলে গমন কাল সড়কে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িকে আগে যেটা দিন, দুর্ঘটনাস্থলে অযথা ভিড় করে ফায়ার সার্ভিসের কাজে বাধা সৃষ্টি করা হতে বিরত থাকুন।
হোটেল রেস্টুরেন্টসহ সকল ভবনে অগ্নিনির্বাপণ সামগ্রী রাখুন, জরুরি নির্গমন সিঁড়ি বাঁধামুক্ত রাখুন।
অসাবধানতাই অগ্নিকাণ্ডের প্রধান কারণ। অগ্নি প্রতিরোধ সচেতন হোন। জরুরি সাহায্যের জন্য ফায়ার সার্ভিসের ১০২ হটলাইন নম্বরে ফোন করুন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ওয়ারহাউজ ইনস্পেক্টর মো. আনোয়ারুল ইসলাম, সিদ্দিক বাজার ফায়ার স্টেশনের স্টেশন স্টেশন অফিসার খাইরুল ইসলাম, সিদ্দিক বাজার ফায়ার স্টেশনের লিডার আনিসুর রহমান।
কেআর/এমআরএম/জিকেএস