ফেনীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের নবনির্মিত ৮৫ বাড়ি হস্তান্তর
ফেনী জেলা সদর ও ফুলগাজী উপজেলায় বন্যার্তদের পুনর্বাসনে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে নতুন বাড়ি হস্তান্তর করা হয়েছে। নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘের প্রেসিডেন্ট নাদিয়া সুলতানার উদ্যোগে এবং নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসানের প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনায় নবনির্মিত ৮৫টি বাড়ি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করা হয়।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী নবনির্মিত এসব বাড়ি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।
এ সময় অন্যদের মাঝে ফেনীর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ স্থানীয় প্রশাসন ও নৌবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
আইএসপিআর জানায়, প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানি প্রবেশের কারণে গত বছরের ২১ আগস্ট দেশের পূর্বাঞ্চলের বৃহত্তর ফেনীসহ কয়েকটি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়।
স্মরণকালের ভয়াবহ ও আকস্মিক এই প্লাবনে বাড়ি-ঘর, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ, মন্দিরসহ সম্পূর্ণ এলাকা তলিয়ে যায়। এতে বিপুল সংখ্যক মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন।
এই মহাদুর্যোগকালে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমের আওতায় নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী দল পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছানোর পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থানে ত্রাণসামগ্রী, বিশুদ্ধ খাবার পানি, রান্না করা খাবার, বস্ত্র ও প্রয়োজনীয় উপকরণ বিতরণ করে। বন্যাদুর্গত এলাকায় ৩৫ শয্যাবিশিষ্ট ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিক্যাল টিম বন্যার্তদের চিকিৎসাসেবা দেয়।
আইএসপিআর আরও জানায়, বন্যা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘের উদ্যোগে এবং নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় ফেনী জেলার সদর ও ফুলগাজী উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে বাড়ি নির্মাণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও এ কার্যক্রমে যুক্ত হয়।
বন্যায় বাড়ি-ঘর হারিয়ে আশ্রয়হীন ও অসহায় মানুষদের নিরাপদ আবাসন ব্যবস্থা করে দিতে গত ৯ অক্টোবর এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় অত্যন্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়।
আইএসপিআর জানিয়েছে, নবনির্মিত বাড়িগুলো বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জের মতো বন্যাপ্রবণ এলাকায় খুবই উপযোগী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। দেড়তলা বিশিষ্ট বাড়িগুলোতে বন্যাকালে পানিবন্দি মানুষের পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপদে অবস্থান করার সুবিধা রয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘের পক্ষ থেকে এসব বাড়ি পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত হন।
ইতোপূর্বে নৌবাহিনী কর্তৃক ফেনী জেলার সদর ও ফুলগাজী উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ, এতিমখানা ও মন্দিরসহ ৩৯টি প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার্য বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়। নৌবাহিনীর এ ধরনের জনহিতকর কার্যক্রম ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।
টিটি/এএমএ/এমএস
