দাবি আদায়ে আজও রাস্তায় শিক্ষকরা

এমপিওভুক্ত (স্কুল, কলেজ মাদরাসা ও কারিগরি) শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে নবম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। বিকেলে আন্দোলনকারীরা শিক্ষা ভবন অভিমুখে পদযাত্রাও করবেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এসময় তারা সরকারি নিয়মে বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, শতভাগ উৎসব ভাতা এবং প্রতিষ্ঠান প্রধান থেকে কর্মচারী পর্যন্ত সর্বজনীন বদলিরও দাবি জানান। দাবি আদায় না হলে আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছে তারা।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের সভাপতি প্রিন্সিপাল দেলাওয়ার হোসেন আজীজী বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের ভাতাসমূহ পরিবর্তনের মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা বারবার প্রতারিত হয়ে আশ্বাসের ওপর বিশ্বাস করে আবারও প্রতারিত হতে চান না। সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে বৈঠক করেন। নেতারা অবিলম্বে শতভাগ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারির জোর দাবি জানান।
- আরও পড়ুন
- দিনভর আন্দোলনে ক্লান্ত ইবতেদায়ি শিক্ষকরা শীতের রাতেও রাস্তায়
- লাঠিপেটার তিন ঘণ্টা পরও অবস্থান ছাড়েননি ইবতেদায়ি শিক্ষকরা
তিনি বলেন, বাড়িভাড়া এবং মেডিকেল ভাতা বৃদ্ধির সুস্পষ্ট ঘোষণা দাবি করেন। এসময় সচিব বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত পরে জানানোর কথা বলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। শতভাগ উৎসবভাতার প্রজ্ঞাপন জারি এবং বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির ব্যাপারে আজ এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে ৩য় দিনের মতো পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে আন্দোলনকারীরা বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা বাড়িভাড়ার জন্য মাসিক ১ হাজার, চিকিৎসা ভাতার জন্য ৫০০ এবং উৎসব ভাতা হিসেবে বেতনের ২৫ শতাংশ পেয়ে থাকেন যা অত্যন্ত অযৌক্তিক ও অমানবিক। ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা হিসেবে একজন এন্ট্রি লেভের শিক্ষক ৩১২৫ টাকা উৎসব ভাতা পেয়ে থাকেন যা দিয়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে কোনোভাবেই একজন শিক্ষকের পক্ষে ঈদ উৎসব উদযাপন করা সম্ভব নয়। এই কর্মসূচির সঙ্গে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরও স্বার্থ জড়িত রয়েছে। কারণ বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে ১ জন শিক্ষার্থীকে মাসে ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দিতে হয়। এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ করা হলে শিক্ষার্থীরা ১০ থেকে ১৫ টাকা মাসিক বেতনে পড়াশোনা করতে পারবে।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহ আলম, অধ্যক্ষ আবু সায়েম মোল্লা, সমন্বয়ক মো. জহিরুল ইসলাম, জোটের যুগ্ম সদস্য সচিব প্রকৌশলী আবুল বাশার, আব্দুল হাই সিদ্দিকী, রবিউল ইসলাম, তোফায়েল সরকার, ফররুখ শেরাহ, মো. কাইয়ুম, আফরোজা শ্রাবন, মোতাফিজুর রহমান নবিয়াবাদী আব্দুর রহমান, উপাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, মো ইলিয়াস, আ. হালিম, ফয়েজ আহমদ, মো. রুহুল আমিন, রাশেদ মোশারফ, উপাধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম, কাইয়ুম, মিজানুর রহমান, মো. জিয়াউল, মুজিবুর রহমান, ফজলুল হক, আহসান হাবীব, জিএম শাওন, হাবিবুর রহমান রাজু মিজানুর রহমান প্রমুখ।
এএএম/এমআইএইচএস/এএসএম