সিএনজিচালকদের অবরোধে নগরীতে তীব্র যানজট, ভোগান্তি চরমে

কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে পায়ে হেঁটে মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড়ে এসেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম। প্রায় ২ কিলোমিটার পথ হেঁটে ক্লান্ত আমিনুল বলেন, সড়কে একটাও গাড়ি চলে না। সবকিছু বন্ধ। বছিলা ব্রিজ থেকে আবার জটলা। গাড়ি-ঘোড়া নড়ে না। তাই বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে আসছি। এত আন্দোলন আর ভালো লাগে না।
নগরী সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মিটারে সিএনজিচালিত অটোরিকশা না চালানোর দাবিতে ঢাকার বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেছেন যানবাহনটির চালকরা। এতে ওইসব এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষেরা। অনেককে পায়ে হেঁটে অফিসে যেতে দেখা গেছে।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড়, ঢাকার রামপুরা, মিরপুর-১, মিরপুর-১৪ ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অবরোধ করে রাখা হয়েছে।
সড়ক অবরোধের যৌক্তিকতা তুলে ধরে সিএনজিচালক রিপন বলেন, আমরা মিটারে সিএনজি কীভাবে চালাব? আমাদের মিটার ২০১২ সালের। এখন চলে ২০২৫ সাল। আপডেট না করে মিটারে চালানো সম্ভব না। এই আইন মানি না, মানব না। আমাদের ঢাকা মেট্রো সিএনজি। অথচ এই শহরে অনেকের প্রাইভেট সিএনজি আছে যারা মাসে তিন হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে চলে। তাদের মিটার লাগে না।
সড়ক অবরোধের কারণে এসব এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করলেও জটলা কাটেনি। অবরোধের কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
মোহাম্মদপুরে ট্রাফিক পুলিশের মোবাইল ডিউটি পালনকারী মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, সিএনজিচালকেদর একটাই দাবি- তারা মিটারে চালাবেন না। এই কারণে সড়ক অবরোধ করেছে।
যাত্রীসহ সড়কে চলমান সিএনজি অটোরিকশা আটকে দিতে দেখা গেছে অবরোধকারীদের। চালকরা নতুন নিয়ম বাতিল, ভাড়া বৃদ্ধি ও পুলিশের হয়রানি বন্ধসহ একাধিক দাবি জানিয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে পেট্রোল বা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় মিটারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে দেওয়া নির্দেশনা স্থগিত করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর পুলিশকে এক চিঠি পাঠিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারির আদেশটি স্থগিত করার বিষয়টি জানিয়েছে বিআরটিএ।
এমওএস/এএমএ/এমএস