প্রত্যাহারের পর দপ্তরও বদলে দেওয়া হলো দুদকের সেই পরিচালকের

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি সংক্রান্ত অনুসন্ধান তদারককারী কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাশাপাশি তার দপ্তরও বদল করে দেওয়া হয়েছে।
তাকে বীমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পরিচালক থেকে সরিয়ে এনআইএস এবং ইউএনসিএসি ফোকাল পয়েন্টের পরিচালক পদে বসানো হয়েছে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দুদকের উপ-পরিচালক আজিজুল হকের সই করা এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে দুপুরের দিকে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন তদারককারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন থেকে তাকে প্রত্যাহার করার কথা জানিয়েছিলেন। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসন্ধান ও তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে লেখালেখির কারণে তাকে কারণ দর্শানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, কোনো বিতর্ক যাতে না হয় সেজন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আক্তার হোসেন বলেন, তদারককারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন থেকে তাকে (সায়েমুজ্জামানকে) প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখির কারণে তাকে কারণ দর্শানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এই পরিচালক বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট দুর্নীতি অনুসন্ধানের দায়িত্বে ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসন্ধান সম্পর্কিত তথ্যাদি প্রকাশ করার কারণে তাকে প্রত্যাহার করেছি।
- আরও পড়ুন
দুর্নীতি অনুসন্ধানের দায়িত্ব থেকে কাজী সায়েমুজ্জামানকে সরালো দুদক
সমাজবিরোধীরা কোনো ব্যক্তিকে হুমকি দিলে কঠোর ব্যবস্থা
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের লকারে অভিযান চালানো দুদক পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া কাজী সায়েমুজ্জামানের বিভিন্ন মন্তব্যের বিষয়ে আপত্তি জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, এ ধরনের মন্তব্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার সংক্রান্ত নীতিমালার পরিপন্থি। গত সপ্তাহে দুদক চেয়ারম্যানের কাছে এই চিঠি পাঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়ের পরিচালক।
চিঠিতে বলা হয়, কাজী সায়েমুজ্জামান বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধারণাপ্রসূত বিভিন্ন মন্তব্য করে যাচ্ছেন। এ ধরনের মন্তব্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জারি করা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারসংক্রান্ত নীতিমালার পরিপন্থি। চিঠির সঙ্গে কাজী সায়েমুজ্জামানের দেওয়া বিভিন্ন মন্তব্যও যুক্ত করে দেওয়া হয়।
এর আগে রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযান চালায় দুদক। বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ ২৫ কর্মকর্তার নামে কোনো লকার খুঁজে পায়নি দুদক। অভিযান শেষে এ তথ্য জানান অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া দুদক পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামান। তিনি জানান, ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান যে ২৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানের জন্য এসেছিলাম, তাদের নামে কোনো লকার পাওয়া যায়নি। তবে আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। আদালতের অনুমোদনের ভিত্তিতে পরবর্তী অভিযান চালাবে দুদক।
এসএম/কেএসআর