বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় প্রগতিশীল অভিযাত্রা বিনষ্ট হয়েছে


প্রকাশিত: ০৩:১০ পিএম, ১০ আগস্ট ২০১৫

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের প্রগতিশীল অভিযাত্রা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে আমরা দেখি প্রায় সকল গণনায়কই প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তির ষড়যন্ত্রে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধেও সাম্প্রদায়িক-সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যে হত্যার ষড়যন্ত্র বিস্তার করেছিল তার ফলে শুধু তিনি প্রাণ হারাননি বরং বাংলাদেশের প্রগতিশীল অভিযাত্রা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়েছে।

সোমবার বঙ্গবন্ধুর ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষ্যে বাংলা একাডেমির মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে তৃতীয় একক বক্তৃতানুষ্ঠানে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক অনুপম সেন একথা বলেন।

একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু বিষয়ক এই একক বক্তৃতানুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অ্যামিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।

অধ্যাপক অনুপম সেন বলেন, হাজার বছরের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার স্বপ্নসাধ বাস্তবায়ন করে আমাদের অপরিসীম জাতীয় ঋণে আবদ্ধ করেছেন। তিনি যেমন আমাদের স্বাধীনতার মহানায়ক তেমনি স্বাধীনতার পর জাতীয় উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সম্পাদন করে সফল রাষ্ট্রনায়কের ভূমিকায়ও অবতীর্ণ হন।

তিনি বলেন, একটি আদর্শ সংবিধান প্রণয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং আরব-ইসরাইল যুদ্ধের প্রতিকূল আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর কাজ তিনি নীরবে করে গেছেন। আমলাতন্ত্রের মূলোৎপাটন করে সাধারণ মানুষকে শোষণহীন গণতন্ত্র উপহার দিতে চেয়েছেন।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ১৯৭৫-এর ১৫ই আগস্টের ট্র্যাজেডিকে কেবল ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু বা একটি পরিবারের হত্যাকাণ্ড নয় বরং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশকে আমরা সেদিন থেকে কক্ষচ্যুত হতে দেখেছি। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বিভিন্ন সময় তার ঘাতকদের বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠা দেয়া হয়েছে। তার অনুসারী জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আদর্শের রাজনৈতিক আদর্শকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হয়েছে।

তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তার প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে কাজ করার জন্য জাতির প্রতি আহ্বান জানান।

অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, বঙ্গবন্ধু রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত-মাও সেতুং প্রমুখের রচনা থেকে সমাজ প্রগতির পাঠ নিয়েছেন। শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতির প্রতি তার যে অপরিসীম ভালোবাসা তা আমরা ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমি আয়োজিত জাতীয় সাহিত্য সম্মেলনে প্রদত্ত ভাষণের মধ্য দিয়ে লক্ষ করি। সোনার বাংলা গড়তে হলে যে সোনার মানুষ প্রয়োজন বঙ্গবন্ধু তা গভীরভাবে বিশ্বাস করতেন। তিনি সেই সোনার মানুষ তৈরিতে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির ভূমিকাকে সবসময় গুরুত্ব দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, কবি আসাদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী, লেখক শান্তনু কায়সার, সাবেক ছাত্রনেতা সুভাষ সিংহ রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।