হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সাংবাদিক কাজী রফিকের মৃত্যু
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তরুণ সাংবাদিক কাজী রফিক। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত সহকর্মীরা তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরই কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে কাজী রফিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
কাজী রফিকের পরিবার ও সহকর্মীরা জানান, ২০১৭ সালে সাংবাদিকতা শুরু করেন কাজী রফিক। অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা টাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমে নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা মেইলের নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে যোগ দেন। এরপর থেকে তিনি এ অনলাইন নিউজ পোর্টালে কর্মরত ছিলেন।
আজ শুক্রবার দিনভর কাজী রফিক সংবাদ সংগ্রহ ও লেখার কাজও করেছেন বলে জানান তার সহকর্মী ঢাকা মেইলের নিজস্ব প্রতিবেদক মাহফুজ উল্লাহ হিমু।
জাগো নিউজকে হিমু বলেন, কাজী রফিক সকাল থেকে বিভিন্ন সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। সাপ্তাহিক বাজার দর নিয়ে তার প্রতিবেদনও ঢাকা মেইলে আজ দুপুরে প্রকাশিত হয়েছে। তার মৃত্যুর খবরের আকস্মিকতায় সহকর্মীরা হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন। ঢাকা মেইল পরিবার তাকে হারিয়ে শোকাহত।
- আরও পড়ুন
বিটিভির সংবাদ পাঠক সালেহ আকরাম মারা গেছেন
মানা হয়নি ফায়ার সার্ভিসের সুপারিশ, সাজসজ্জায় বেড়েছে অগ্নিঝুঁকি
শুধু ঢাকা মেইল পরিবার নয়, তরুণ এ সংবাদকর্মীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে। তার অকালমৃত্যুতে শোক জানিয়ে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিচ্ছেন। অনেকে স্মৃতিচারণা করছেন।
কাজী রফিকের বন্ধু ও সাবেক সহকর্মী দৈনিক মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার শরীফ রুবেল তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টে লিখেছেন, সাংবাদিকতা জীবনে যত মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে তার মধ্যে রফিক ছিলেন আমার সেরা বন্ধু। দীর্ঘদিনের সম্পর্ক আমাদের। ছাত্র আন্দোলনেও দুজন একসঙ্গে নিউজ কাভার করেছি। আজ সন্ধ্যায় শুনলাম রফিক স্ট্রোক করে মারা গেছেন। আমি ৩ বছরে এমন বিরক্তিকর সংবাদ আর শুনিনি।
তিনি আরও লেখেন, কাজী রফিক আমার সাংবাদিকতা জীবনের বড় একটি অংশ জুড়ে ছিলেন। মানতে পারছি না প্রিয় বন্ধুর এ অকাল প্রয়াণ। এমন ভালো বন্ধু আর হয়তো পাবো না। নিরেট খাঁটি লোক ছিলেন রফিক। আমার মনে পড়ে না রফিক কখনো কারো ক্ষতি করেছেন, কাউকে কষ্ট দিয়েছেন। এত সুন্দর মানুষ হয় না। রফিকের এই ছবিটি আমারই তোলা। আল্লাহ রফিককে জান্নাতবাসী করুন।
কাজী রফিকের একটি ছবি শেয়ার করে দৈনিক জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার আসিফ হাসান কাজল লিখেছেন, ছেলেটা ছিল অত্যন্ত চঞ্চল। পরিচয় বেশ আগেই। পরে ঢাকা মেইলে কিছুদিনের জন্য সহকর্মী ছিলাম। একসঙ্গে কক্সবাজার গিয়েছি। হৈ-হুল্লোড় করেছি। আজ শুনলাম সে আর নেই। পাড়ি জমিয়েছে ওপারে। আল্লাহ কাজী রফিককে জান্নাতবাসী করুন।
ঢাকা মেইলের হেড অব নিউজ হারুন জামিল বলেন, কাজী রফিক শুরু থেকেই ঢাকা মেইলের অপরিহার্য কর্মী ছিলেন। গত শনিবারের মিটিংয়েও রফিক প্রাণবন্ত ছিলেন। প্ল্যানিংয়ের সময় খুব সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। আমাদের এ সহকর্মী সব সময়ই ছিলেন প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও দুর্দান্ত পারফর্ম ছিল। তার এ অকাল প্রয়াণে আমরা একজন নিষ্ঠাবান সৎ সহকর্মীকে হারালাম।
কাজী রফিকের নামাজে জানাজা আজ রাত সাড়ে ১০টায় মোহাম্মাদীয়া হাউজিংয়ের (লিমিটেড-৩) তাকওয়া মসজিদের সামনে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে তার পরিবার। শনিবার রায়েরবাজার বধ্যভূমি সংলগ্ন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
এএএইচ/কেএসআর/এএসএম