ঘাড়ের স্পাইনাল কডে অতিরিক্ত চাপে প্যারালাইজড আলতাফ মাহমুদ
সাংবাদিক নেতা আলতাফ মাহমুদ সার্ভিক্যাল কমপ্রেসিভ মাইলো রেডিকিউলোপ্যাথি নামক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
চিকিৎসকের ভাষায় ঘাড়ের স্পাইনাল কডের ওপর অতিরিক্ত চাপের কারণে তার দুই পা সম্পূর্ণভাবে ও দুই হাত আংশিক প্যারালাইজড হয়ে গেছে।
প্রবীণ এই সাংবাদিক নেতার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানের নির্দেশে গত রোববার নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়াকে প্রধান করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠিত হয়।
মেডিকেল বোর্ড প্রধান অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া মঙ্গলবার বিকেলে জাগো নিউজকে বলেন, আলতাফ মাহমুদকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য না পাঠালে বৃহস্পতিবার তার অস্ত্রোপচার করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেডিকেল বোর্ড সদস্যরা।
তিনি বলেন, সাধারণত এ ধরনের রোগীদের দ্রুত অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু আলতাফ মাহমুদ উচ্চমাত্রার ডায়াবেটিস ও জটিল হৃদরোগজনিত সমস্যায় আক্রান্ত থাকার কারণে তাকে অস্ত্রোপচারের জন্য উপযুক্ত করতে দ্রুত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
রোগটি জটিল হলেও সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাকে সম্পূর্ণরুপে সুস্থ করে তোলা সম্ভব বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেডিকেল বোর্ডের সদস্য হিসেবে আলতাফ মাহমুদকে নিয়মিত যারা দেখছেন তারা হলেন- কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি, নিউরোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম আনোয়ার উল্লাহ, নিউরো সার্জারি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আফজাল হোসেন ও ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মঈনুজ্জামান। মেডিকেল বোর্ডের বাইরেও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দবিরউদ্দিন নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আলতাফ মাহমুদকে অস্ত্রোপচারের জন্য শারীরিকভাবে ফিট করে তুলতে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও হৃদরোগজনিত ঝুঁকি হ্রাসের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ভর্তির পর আলতাফ মাহমুদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ছিল না। তার হার্টে তিনটি স্টেন্ট বসানো থাকায় রক্ত পাতলা করার জন্য নিয়মিত ওষুধ খেতেন তিনি। ওই সময় অস্ত্রোপচার করলে বেশি ব্লিডিং হয়ে মৃত্যুঝুঁকিও থাকতে পারতো। এ কারণে ওই সময় তারা অস্ত্রোপচারের তাগিদ অনুভব করলেও শেষ পর্যন্ত রোগীর জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।
আলতাফ মাহমুদ এখন অস্ত্রোপচারের জন্য শারীরিকভাবে সমর্থ রয়েছেন বলেও জানান ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
এমইউ/একে/আরআইপি