সাংবাদিক রোজিনাকে হেনস্তা করায় ইআরএফর নিন্দা
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪৫ পিএম, ১৮ মে ২০২১
পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও মামলা দায়ের করায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেছে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)।
একই সঙ্গে সংগঠনটি নির্যাতনমূলক এই ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও দায়েরকৃত মামলার নিঃশর্ত প্রত্যাহার দাবি করেছে।
মঙ্গলবার (১৮ মে) ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম এক বিবৃতিতে এই দাবি জানান।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ইআরএফ সদস্য রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা করা ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা অত্যন্ত অমানবিক। প্রজাতন্ত্রের কতিপয় কর্মচারীর এই আচরণ জনগণের তথ্য পাওয়ার সাংবিধানিক অধিকারকে বাঁধাগ্রস্ত করেছে এবং এটি গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা মাত্র। রোজিনাকে হেনস্তা করার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
রোজিনা ইসলামকে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ধারায় অভিযোগ এনে মামলা দায়ের অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা মনে করি এটি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলের কালাকানুন। একজন পেশাদার সাংবাদিককে এই আইনের কঠোর ধারায় আটক ও অভিযোগ আনায় আমরা শঙ্কিত। এসব কঠোর ধারায় সাংবাদিকদের আটক বন্ধ করতে হবে এবং রোজিনা ইসলামের নামে দায়েরকৃত মামলার নিঃশর্ত প্রত্যাহার চাই।
নেতারা বলেন, রোজিনা ইসলাম গত কয়েক বছর ধরে দেশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার বাতিঘর হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। এই বিশেষ কৃতিত্বের জন্য তিনি কানাডিয়ান অ্যাওয়ার্ডস ফর এক্সিলেন্স ইন বাংলাদেশি জার্নালিজম (২০১১), টিআইবির অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার (২০১৫), পিআইবি ও দুদকের উদ্যোগে দুর্নীতি প্রতিরোধে গণমাধ্যম পুরস্কার বাংলাদেশসহ (২০১৪) বেশ কিছু দেশি-বিদেশি পুরস্কার পেয়েছেন।
সম্প্রতি তিনি স্বাস্ব্য মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে বেশ কয়েকটি সাড়া জাগানো প্রতিবেদন করেছেন। এসব প্রতিবেদন ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে এবং করোনা অতিমারির সময়ে তার এসব প্রতিবেদন জনগণের স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি সহজ করেছে।
একইসাথে স্বাস্থ্যখাতের সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমরা মনে করি এসব প্রতিবেদনের কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ক্ষিপ্ত ছিলেন, তারা কৌশলে সরকারি নথির ছবি তোলার অভিযোগে রোজিনা ইসলামকে লাঞ্ছিত করেছেন।
ইআরএফ মনে করে রোজিনা ইসলামের অবিলম্বে মুক্তি এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দ্রুততম এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এটি খারাপ নজীর হয়ে থাকবে।
ইএআর/এমআরএম/এমকেএইচ