ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করে যা বললেন সাংবাদিক রোজিনা
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২৩ এএম, ১৮ মে ২০২১
‘বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং ডকুমেন্টস চুরির’ অভিযোগে দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। গতকাল রাত ১২টার দিকে শাহবাগ থানায় এ মামলা করা হয়। এরপর রাত সোয়া ২টায় রোজিনার সঙ্গে দেখা করেন তার ভাই মো. সেলিম। এ সময় তারা প্রায় আধাঘণ্টা কথা বলেন। পরে থানা থেকে বের হয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন সেলিম।
তিনি বলেন, ‘সে (রোজিনা) বারবার বলেছে, আমি এমন কোনো অন্যায় করিনি, এমন কোনো অপরাধ করিনি, আমার সঙ্গে সম্পূর্ণ অন্যায় করা হয়েছে, অপরাধ করা হয়েছে। আমি মানসিকভাবে বিপর্যন্ত। আমি আমার বন্ধুদের কাছে সাহায্য কামনা করছি।’
সেলিম আরও বলেন, ‘রোজিনা মানসিকভাবে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছে। … ও (রোজিনা) এ কথাটাই বলেছে, আমি প্রচণ্ড রকম মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।’
মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ও (রোজিনা) প্রচণ্ড সাহসী একজন মেয়ে। কিন্তু সচিবালয়ের মধ্যে ওকে নির্যাতন করা হয়েছে। ওরে শুধু মারা হয় নাই, ওর বুকের ওপরে ওই অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি এক মহিলা আছে পা চাপা দিয়ে ধরছে, গলা চাপ দিয়ে ধরছে।’
তিনি জানান, ‘রোজিনা আমাকে এই কথাটি জিজ্ঞেস করছে যে, আমার সাংবাদিক বন্ধুরা কি আমার পাশে আছে? আমার বড় ভায়েরা কি আমার পাশে আছে? আমি বলছি, সব সাংবাদিক ভাইয়েরা আছে। ও বারবার সাহায্য কামনা করছে। আমার এই দুঃসময়ে আমার ভায়েরা, আমার বন্ধুরা যাতে আমার পাশে থাকে। ও বার বার এই কথাটাই বলছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি ওর ভাই হিসেবে বলতে চাই, আপনারা রোজিনার পাশে ছিলেন, পুরো প্রক্রিয়াটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত থাকবেন।’
সোমবার বেলা তিনটার দিকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার একান্ত সচিব (পিএস) মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞার (সিনিয়র সহকারী সচিব) কক্ষে থাকা ‘রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নথি থেকে কাগজ সরানোর’ অভিযোগে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয় সাংবাদিক রোজিনাকে।
এরপর রাত ৯টার পরে তাকে সচিবালয় থেকে নেয়া হয় শাহবাগ থানায়। সেখানে রাত পৌনে ১২টার দিকে তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়। মামলার বাদী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী।
রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়ার পর তার মুক্তির দাবিতে ওই থানার সামনে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। সেখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের’ শাস্তি ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তোলেন তারা।
এমএমএ/এমএসএইচ/এএসএম