১২ মে’র মধ্যে সব টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০৮ পিএম, ১১ মার্চ ২০১৯

আগামী ১২ মে’র মধ্যে দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

সোমবার সচিবালয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টিভি চ্যানেল ওনারস’র (এটকো) নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘১২ মে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের এক বছর পূর্তি হবে। ১২ মে নাগাদ বাংলাদেশের সমস্ত টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে করা হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কর্তৃপক্ষ তিন মাস বিনামূল্যে সেবা দেবে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১২ মে নাগাদ তারা ফাইবার অপটিক ক্যাবলের মাধ্যমে গাজীপুরের সজিব ওয়াজেদ গ্রাউন্ড স্টেশনে নিয়ে যাবে, সেখান থেকে আপলিঙ্ক ও ডাউনলিঙ্ক করা হবে। সেজন্য বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কর্তৃপক্ষ সবার সঙ্গে আলোচনা করে (সেবার) দর নির্ধারণ করবে’ বলেও জানান হাছান মাহমুদ।

সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, কেবল অপারেটরদের বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে প্রথমে সিরিয়ালে রাখার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আজও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমরা সব ক্যাবল অপারেটরকে নোটিফাই (অবহিত) করব যে, বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে তারা প্রথমে সিরিয়ালে রাখবে। প্রথমে সরকারি চ্যানেল, এরপর সম্প্রচারের তারিখ অনুযায়ী চ্যানেলগুলো সিরিয়ালে থাকবে। অর্থাৎ যে চ্যানেল আগে সম্প্রচারে গেছে তারা সিরিয়ালে আগের দিকে থাকবে। পরে বিদেশি চ্যানেলগুলো থাকবে।’

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আরেকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যদিও বা এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাবলিক নোটিফিকেশন করা হয়েছে। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বিদেশি চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এটি অন্যান্য দেশেও দণ্ডনীয় অপরাধ। এটি ভারত, ইংল্যান্ড, ইউরোপেও দণ্ডনীয় অপরাধ।’

‘আমরা ইতোমধ্যে ক্যাবল অপারেটরদের নোটিফাই করেছি। আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর দুবার নোটিস জারি করেছি। আমরা পুনরায় নোটিস জারি করব। ১ এপ্রিলের পর থেকে কেউ যদি এ আইন ভঙ্গ করে, সরকারের এ নির্দেশনা পালন না করে, তাহলে আমরা এনফোর্সমেন্টে (আইনানুযায়ী শাস্তি) যাব।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে ৪৪টি টেলিভিশন চ্যানেলের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩০টি বা এর চেয়ে একটু বেশি সম্প্রচারে আছে। ৪৪টির বাইরে টেলিভিশন চ্যানেল নামে যেগুলো করা হয়, সেগুলো সব অননুমোদিত। সেগুলোর কোনো অনুমোদন নেই।’

এটকোর সিনিয়র সহ-সভাপতি একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু সাংবাদিকের বলেন, ‘আপনারা জানেন, টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি অত্যন্ত সিক হয়ে পড়ছে। বিজ্ঞাপন মার্কেট ছোট এবং বিজ্ঞাপন যতটুকু ছিল তার একটা বড় অংশ বিদেশে পাচার হচ্ছে। আরেকটা বড় অংশ ডিজিটাল মিডিয়ায় অবৈধভাবে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এগুলো বন্ধের ব্যাপারে আমরা তার (তথ্যমন্ত্রী) সঙ্গে কথা বলেছি এবং তার কাছ থেকে অত্যন্ত সহানুভূতিশীল সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটকো সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা যে কয়টা চ্যানেল আছি, সম্মিলিতভাবে একটা বা দুটা বান্ডিলে অথবা একই বান্ডিলে পে-চ্যানেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চাই। কেবল আপারেটররা যে সাবস্ক্রিপশন দর্শকদের কাছ থেকে নেয়, অত্যন্ত যৌক্তিক একটা অংশ আমাদের দেয়ার জন্য আবেদন করব এবং সেভাবে আমরা লঞ্চ করব।’

সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তথ্য সচিব আব্দুল মালেক, বাংলাদেশ কমিউনিকেশন্স স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এটকোর সদস্য অঞ্জন চৌধুরী, এশিয়ান টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ, ডিবিসি নিউজের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরীসহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরএমএম/এসএইচএস/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।