নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নে পুনরায় কমিটি গঠন : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০৯ পিএম, ২০ জানুয়ারি ২০১৯

সাংবাদিকদের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নে পুনরায় কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।

এ সময় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, সাংবাদিকদের আবাসিক সুবিধা দেওয়া, অনলাইন নীতিমালা করা ও বাস্তবায়ন, রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের কার্যকরী ভূমিকা, সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড, বিএনপির ব্যর্থতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা জানেন, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের কাজ চলছে। বর্তমানে যে কমিটি আছে, সেই কমিটিকে পুনরায় নতুন করে স্থাপন করতে হবে। যেহেতু নতুনভাবে আবার সরকার গঠিত হয়েছে, তাই আগের কমিটি নিয়ে কাজ করা যাবে না। সে কারণে আজকে এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক করার চিন্তা করেও তা করা সম্ভব হয়নি। এখন প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, সেভাবে কাজ করা হবে।’

‘এরপর সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমাদের বৈঠক আছে। আপনাদের সঙ্গে বৈঠক করে যত দ্রুত সম্ভব ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করা হবে। ইতোমধ্যে কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে, ’যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম ওয়েজ বোর্ড করার সময় বিটিভি ছাড়া অন্য টিভি না থাকায় টেলিভিশনের সাংবাদিকরা ওয়েজ বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। এখন অনেকগুলো টেলিভিশন। সেগুলো অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ওয়েজ বোর্ড করার পর, টেলিভিশনের জন্য আবার করা নাকি সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে করা ঠিক হবে, তা আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করা হবে।’

অনেক সময় দেখা যায় ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের কথা বলে, সব জায়গায় তা করা হয় না। সেগুলো সরকারের পক্ষ থেকে দেখভাল করা হবে বলেও জানান হাছান মাহমুদ।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘টেলিভিশনের যে একেবারে উন্নয়ন হয়নি, তা নয়। এখন টেলিভিশনের দু’টি কেন্দ্র, একটি ঢাকা, অন্যটি চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্রকে ছয় থেকে ১২ ঘণ্টা সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও ইতোমধ্যে আরও ছয়টি টেলিভিশন কেন্দ্র করার সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করেছে।’

বিটিভির অনুষ্ঠানগুলো আরও বেশি দর্শকপ্রিয় করতে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কিন্তু সাংবাদিকদের জন্য নয়, দেশের জন্য। দেশের সব মানুষের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। তবে সাংবাদিকদের যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আছে; আমি এক কথায় বলব, সেগুলো দূর করার লক্ষ্যে আমি কাজ করব।’

তথ্যমন্ত্রী হিসেবে যেসব বিষয়গুলোকে প্রধান্য দিয়ে কাজ করবেন বলেও সাংবাদিকদের জানান তিনি। হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, একই সাথে দায়িত্বশীলতাও নিশ্চিত করা। আমরা আমাদের ইশতেহারে সাংবাদিকদের আবাসিকতা নিশ্চিত করার কথা বলেছি। এর বাইরে কিছু কিছু নীতিমালা, যেমন অনলাইন নীতিমালা চূড়ান্ত করা। অনলাইনগুলোকে নীতিমালার মধ্যে আনা। সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করা। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে আরও কার্যকরী করা।’

তথ্যমন্ত্রী হিসেবে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরাও অন্যতম কাজ হবে বলেও জানান তিনি। উন্নয়ন বর্ণনা দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেশের মানুষ ১০ বছর আগের তুলনায় অনেক বেশি ভালো আছে। বাংলাদেশে এখন মানুষদের খালি পায়ে হাঁটতে দেখা যায় না। বাংলাদেশে ছেঁড়া কাপড় পরা মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। আগে ঢাকা শহরেই সন্ধ্যার পরে দেখা যেত, দরজায় এসে বলত, ‘মা আমাকে কিছু বাসি ভাত দে’, এগুলো দেখতে পাওয়া যায় না। আকাশ থেকে ঢাকা শহর চেনা যায় না। হাতিরঝিলে গেলে মনে হয় বিদেশে এসেছি। গ্রামে গেলে কুঁড়েঘর খুঁজে পাওয়া যায় না।’

বিএনপির ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি জনগণের স্বার্থে রাজনীতি না করে, নিজেদের স্বার্থে রাজনীতি করেছে। গত ১০ বছরে তাদের আন্দোলন দেখতে পাবেন, শুধুমাত্র মামলা থেকে তারেক জিয়াকে অব্যাহতি, তাকে দেশে ফেরত আনা, নির্বাচন কমিশন– এগুলো নিয়ে তাদের আন্দোলন। এগুলো আমজনতার বিষয় নয়। এগুলো তাদের রাজনৈতিক দলের বিষয়। এগুলো আদায় করতে গিয়ে জনগণের ওপর তারা হামলা করেছে। জনগণের ওপর হামলা করে ত্রাস সৃষ্টি করা যায়, জনগণের ভালোবাসা পাওয়া যায় না। বিএনপির দলের ভেতর ঐক্যও নাই।’

এ বিষয়ে হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমরা চাই, দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল থাক। কিন্তু তারা যদি নিজেরা দাঁড়ানোর চেষ্টা না করে, তাহলে তো তাদেরকে অন্যরা দাঁড় করিয়ে দেবে না।’

সাগর-রুনি হত্যার বিচারের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন, আমি মন্ত্রণালয়ে মাত্র নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। আমি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। যাতে এটার দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সে ব্যাপারে কাজ করব।’

পিডি/এসএইচএস/পিআর/এসজি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।