১ এপ্রিল থেকে কোনোভাবেই বিদেশি চ্যানেলে দেশীয় বিজ্ঞাপন নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:১৯ পিএম, ৩০ মার্চ ২০১৯

বাংলাদেশে ডাউনলিংকপূর্বক সম্প্রচারিত সব বিদেশি টিভি চ্যানেলে দেশীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার আগামী ১ এপ্রিল থেকে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, এ জন্য ইতোমধ্যেই আমরা দুই বার পরিপত্র জারি করেছি। এটি আগামী ১ এপ্রিল থেকেই বাস্তবায়ন করতে চাই।

শনিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার আয়োজিত ‘সংকটে বেসরকারি টেলিভিশন’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

ডিস্ট্রিবিউটারদের সহযোগিতা কামনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করছি এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই আপনারা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। কারণ দুই মাস আগে থেকে আপনাদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৪৪টি টেলিভিশনকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩টি সম্প্রচারে রয়েছে, অন্যগুলো সম্প্রচারের অপেক্ষায়। আমাদের দেশে চ্যানেলের সংখ্যা কলকতার চেয়ে অনেক বেশি।

মন্ত্রী বলেন, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো যেন টিকে থাকে, চ্যানেলে যারা চাকরি করে তাদের চাকরির যেনো নিশ্চয়তা থাকে, এসব বিষয়ে আমাদের সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। এজন্য চ্যানেলগুলোর আয় বাড়াতে হবে। টেলিভিশনগুলো এখনো বিজ্ঞাপন নির্ভর। কিন্তু দেশে বিজ্ঞাপনের মার্কেট কমে যাচ্ছে, আর টেলিভিশেনের সংখ্যা বড়ে যাচ্ছে। টেলিভিশনগুলো নিজেরাও অসম প্রতিযোগিতা করে বিজ্ঞাপনের রেট কমিয়ে দিয়েছে। আবার অনলাইন, ফেসবুক, ইউটিউবেও বিজ্ঞাপন চলে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এসব সমস্যার বড় সমাধান ডিস্ট্রিবিউটারদের হাতে রয়েছে। কারণ, আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে ডাউনলিংকপূর্বক সম্প্রচারিত সব বিদেশি টিভি চ্যানেলে দেশীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তারপরও বাংলাদেশে যেসব বিদেশি চ্যানেল জনপ্রিয়, সেগুলোতে বহুজাতিক ও বেশকিছু বাংলাদেশি কোম্পানির বিজ্ঞাপন অবৈধভাবে প্রচার করা হয়। এ আইনটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হলেই, বছরে ৫০০ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দেশীয় টেলিভিশনগুলো পাবে বলে আমি মনে কির। এ পরিমাণ বিজ্ঞাপন পেলে আজকে টেলিভিশনে যে সংকট রয়েছে, সেটা কেটে যাবে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ক্যাবল অপারেটররা লাইন দিয়ে যে টাকা আয় করে সেখান থেকে একটা অংশ টেলিভিশন মালিকদের দেয়া যায় কিনা, সে বিষয়টি খুঁজে বের করা হচ্ছে। এ জন্য ক্যাবল অপারেটর ও টেলিভিশন মালিকদের বসে একটি প্রস্তাব তৈরির পরার্মশ দেন তথ্যমন্ত্রী।

এর আগে গত ১৩ মার্চ তথ্য মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে। নির্দেশনায় বলা হয়, বাংলাদেশে ডাউনলিংকপূর্বক সম্প্রচারিত সব বিদেশি টিভি চ্যানেলে দেশীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এ নির্দেশ অমান্য করলে ডিস্ট্রিবিউশন লাইসেন্স বাতিল/স্থগিত এবং ২৮ ধারা মোতাবেক ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

তথ্য মন্ত্রণালয় এর আগে জারিকৃত এক পত্রে বলে, কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন-২০০৬ এর ধারা ১৯ এর ১৩ নম্বর উপধারায় বিদেশি টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

কিন্তু বাংলাদেশে ডাউনলিংকপূর্বক সম্প্রচারিত কোনো কোনো বিদেশি টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে মর্মে জানা গেছে, যা ওই আইনের পরিপন্থী।

বিদেশি টিভি চ্যানেল ডাউনলিংকপূর্বক সম্প্রচারের জন্য প্রদত্ত অনুমতি বা অনাপত্তিপত্রে ‘কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন ২০০৬’ যথাযথভাবে প্রতিপালনের শর্ত আরোপ করা হয়েছে। তাই বিদেশি কোনো টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে দেশীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে ওই আইনের ১১ ধারা মোতাবেক ডিস্ট্রিবিউশন লাইসেন্স বাতিল/স্থগিত এবং ২৮ ধারা মোতাবেক ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন, স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসির চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী, চ্যানেল২৪ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের সভাপতি রেজওয়ানুল হক, সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ, সারাবাংলা ডটনেট, দৈনিক সারাবাংলা ও জিটিভির এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা প্রমুখ।

এমইউএইচ/এসএইচএস/এমএসএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।