তিন মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি রক্ষা না হওয়ায় হতাশ সম্পাদক পরিষদ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩০ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০১৮

>> সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি
>> আলোচনা হতে পারত
>>আইন সংশোধনের দাবি
>> ১৩ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন

বহুল আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সরকারের তিনজন মন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রুতি তারা রক্ষা না করায় হতাশা প্রকাশ করেছে সম্পাদক পরিষদ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে সম্পাদক পরিষদের সভায় এই হতাশা প্রকাশ করা হয়।

দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেনের সভাপতিত্বে এই সভায় বক্তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে রাষ্ট্রপতির সম্মতির মাধ্যমে প্রতিশ্রুত আলোচনা শুরুর একটি সুযোগ হারিয়ে গেছে। সাংবিধানিক এখতিয়ার বলে রাষ্ট্রপতি বিলটি পুনর্বিবেচনার জন্য পাঠালে ওই আলোচনা হতে পারত।

সাইবার স্পেস ও ডিজিটাল নিরাপত্তায় আইনের প্রয়োজনীয়তার কথা সম্পাদক পরিষদ সর্মথন করে বলে সভায় তুলে ধরা হয়। তবে সম্প্রতি, রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষরিত ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩-এর মতো ধারাগুলোকে মুক্ত সংবাদমাধ্যমের পরিপন্থী, বাক-মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রবিরোধী বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ।

সভা শেষে দেশের ২০ জন প্রথিতযথা সম্পাদক স্বাক্ষরিক বিবৃতিতে বলা হয়, সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগের কথা মন্ত্রিসভায় উত্থাপন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি সংশোধিত খসড়া প্রণয়নের ব্যাপারে তিনজন মন্ত্রীর দেয়া সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি রক্ষা না হওয়ায় সম্পাদক পরিষদ গভীর হতাশা প্রকাশ করছে। 

এর আগে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর উদ্যোগে সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে তিনি প্রস্তাবিত আইন নিয়ে নতুন এক দফা আলোচনা শুরুর প্রতিশ্রুতি দেন এবং সম্পাদক পরিষদকে তাতে আমন্ত্রণ জানান। ওই সভায়  একই প্রতিশ্রুতি দেন আইনমন্ত্রী এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ  তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী।

বিবৃতিতে উল্লেখ বলা হয়, সম্পাদক পরিষদ অচিরেই শুরু হতে যাওয়া বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের দাবি জানাচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটিকে বাকস্বাধীনতার প্রতি গুরুতর হুমকি বিবেচনা করে সম্পাদক পরিষদ। সাংবাদিক ও নাগরিক সম্প্রদায় যে উদ্বেগ জানিয়েছে, তা নিরসনের এটাই শেষ সুযোগ। 

পুলিশি হস্তক্ষেপ ও খেয়াল-খুশিমতো গ্রেফতারের কবল থেকে বাকস্বাধীনতা এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের সুরক্ষায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করতে সংবাদ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সভায়।

সম্পাদক পরিষদ তাদের অবস্থান এবং উদ্বেগ গণমাধ্যমকে জানানোর জন্য আগামী ১৩ অক্টোবর (শনিবার) বেলা ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা আগেও বলেছি এবং আবারও বলছি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটিকে আমরা (এক). সংবিধানের ৩৯ (ক) ও (খ) ধারায় প্রদত্ত বাকস্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, (দুই). আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জড়িয়ে থাকা মূল্যবোধ ও স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার, (তিন). জাতিসংঘ সনদ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তিতে সুরক্ষিত গণতন্ত্র, মুক্ত সমাজ ব্যবস্থা ও মৌলিক অধিকারের নীতি  এবং (চার). নৈতিক ও স্বাধীন সাংবাদিকতার মৌল মূল্যবোধগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে করছি।

বিবৃতিদাতারা হলেন- দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, নিউজ টুডের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউএজের সম্পাদক নূরুল কবীর, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন, আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, করতোয়ার সম্পাদক  মো. মোজাম্মেল হক, ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, দ্য ইনডিপেনডেন্টের সম্পাদক এম শামসুর রহমান, সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনিরুজ্জামান, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শহীদুজ্জামান খান ও বাংলাদশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম

এইচএস/জেডএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।