বিশ্বকে নারীদের জন্য সর্বোত্তম স্থানে পরিণত করার অঙ্গীকার
শেষ হয়ে গেল বিশ্বের বৃহত্তম নারী অধিকারবিষয়ক উইমেন ডেলিভার কনফারেন্স-২০১৯। সোমবার স্থানীয় সময় বিকেলের দিকে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ভ্যানকুভার কনভেনশন সেন্টারে চারদিনের বৈশ্বিক এ সম্মেলনে বিশ্বের ১৬০টি দেশের আট হাজারের বেশি সমাজ অধিকার কর্মী, প্রভাবশালী অ্যাকটিভিস্ট, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, নেতা, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক অংশ নিয়েছেন।
এছাড়া অনলাইনে সংগঠনটির ওয়েবসাইটে আরো প্রায় ১ লাখ মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উইমেন ডেলিভারের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও ভার্চুয়াল কনফারেন্সে অংশ নিয়েছেন।
ভ্যানকুভারে এবারের এই সম্মেলনে ১৩৯টি দেশের প্রায় ১ হাজার ৪০০ তরুণ প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন। সম্মেলন শুরুর আগে উইমেন ডেলিভারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাতিজা ইভারসেন বলেছিলেন, ‘ক্ষমতা, অগ্রগতি এবং পরিবর্তনের ব্যানারে কীভাবে নারী ও তরুণীদের উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করা যায়; এবারের সম্মেলনে সেটিই হচ্ছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।’
নারীদের উন্নয়নের বিষয়ে বক্তৃতা রেখে সম্মেলনের ইতি টেনেছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্ত্রী সোফি গ্রেগওয়ার ট্রুডো। তিনি বলেন, এই সম্মেলনের সমাপ্তির মাধ্যমেই বিশ্বকে নারী ও তরুণীদের জন্য সর্বোত্তম স্থানে পরিণত করার যাত্রা শুরু হলো।
তিনি বলেন, এটা খুব কঠিন কিন্তু এটা সম্ভব। আমরা কি করব সেটা আমরা বিশ্বকে নির্ধারণ করতে দেব না। বরং সেটা আমরাই নির্ধারণ করে দেব। লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে বিদেশি সহায়তার অংশ হিসেবে বছরে ১শ কোটির বেশি অর্থ তহবিল চালু রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। প্রতি বছর এই তহবিল বাড়ানো হবে।
এই সম্মেলনের শেষে উইমেন ডেলিভারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাতিজা ইভারসেন বলেন, এই অনুদান হচ্ছে সামান্য কিছু। যখন আমরা নিজেদের দেশে ফিরে যাব এবং নীতি পরিবর্তনের জন্য লড়াই করব তখন এই সহায়তা আমাদের কাজকে আরও শক্তিশালী করবে।
চার দিনব্যাপী এই সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখা কর্মী ও নারী অধিকার কর্মীরা অংশ নিয়েছেন। বাংলাদেশ থেকেও বেশ কয়েকজন সাংবাদিক, অধিকার কর্মী এবং সরকারি কর্মকর্তা এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।
ভ্যানকুভারের এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং তার স্ত্রী সোফি ছাড়াও ইথিওপিয়ার প্রেসিডেন্ট সাহলেওর্ক জিওদে, পাকিস্তানের আলোচিত শিক্ষা অধিকার কর্মী মালালা ইউসুফ জাইয়ের বাবা ও মালালা ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউদ্দিন ইউসুফ জাইসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদ্যোক্তারা আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
২০১৬ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেন শহরে সর্বশেষ এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। নারী ও তরুণীদের সুরক্ষা এবং অধিকার ইস্যুতে কানাডার সুনামের জন্য চলতি বছরের সম্মেলনের জন্য ভ্যানকুভারকে বেছে নেয়া হয়। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এই সম্মেলন শেষ হয়েছে।
টিটিএন/পিআর