জুলাই আন্দোলনে শক্তি-প্রেরণা জুগিয়েছেন নারীরা

বাংলাদেশের ইতিহাসে চব্বিশের জুলাই আন্দোলন এক অনন্য ঘটনা। সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথার যৌক্তিক সংস্কার নিয়ে শুরু হওয়া আন্দোলন একসময় সরকার পতনের এক দফায় রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যাগে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। আন্দোলনের শুরুটা শিক্ষার্থীদের দিয়ে হলেও একসময় তাতে সাধারণ জনগণ ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বড় ভূমিকা রাখেন দেশের নারীসমাজ।
কথায় আছে- ‘নারীরা ঘরে থাকে, তবে ঘর থেকে বের হলে সবার সামনেই থাকে’। জুলাই আন্দোলনে এমনই এক চিত্র দেখেছে বাংলাদেশ। বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে নারী শিক্ষার্থীরা ছিল সবার সামনে। মিছিলে তাদেরই দেখা গেছে সামনের কাতারে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দেশের নানা প্রান্তে কখনো সরাসরি রাজপথে থেকে, কখনো খাবার-পানির ব্যবস্থা করে, কখনো আবার আন্দোলনে আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নারীরা দেখিয়েছেন অনন্য সাহসিকতা।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
নারীদের এই সাহসিকতার গল্প অনেক পুরোনো। দাস প্রথার বিলোপ আন্দোলন থেকে শুরু করে, শিল্প বিপ্লব, ইউরোপ আমেরিকার যুদ্ধ সব ক্ষেত্রে নারীরা সাহসিকতার ছাপ রেখেছেন। বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের দীর্ঘ ইতিহাসে ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীরা ছিলেন অদম্য, অকুতোভয় ও দুর্বিনীত।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিভিন্ন সময় দেখা গেছে, যে কোনো আন্দোলনে নারীর অংশগ্রহণ আন্দোলনকে অধিক মাত্রায় বেগবান করে তোলে। নারীর অংশগ্রহণ আন্দোলনে জনমত তৈরিতেও ভূমিকা রাখে। জুলাই আন্দোলনও এর ব্যতিক্রম নয়। আন্দোলনের শুরুর দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, পুলিশ কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নারী শিক্ষককে আহত ও হেনস্তা আন্দোলনের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
- সর্বোচ্চ বিচারালয়ে আলো ছড়ানো ১০ নারী বিচারপতি
- সুপ্রিম কোর্টে ১২ শতাধিক নারী আইনজীবী
- বিচারিক আদালতে নারী ৬ শতাধিক
তবে আন্দোলন-সংগ্রামে নারীদের এই বীরত্বের পরও তারা প্রাপ্য মর্যাদা বা অংশীদারত্ব পান না। জুলাই আন্দোলনের পরও এমনটি হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পুরুষশাসিত সমাজব্যবস্থা নারীদের বঞ্চনা বা পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ বলেও মনে করছেন তারা।
আন্দোলন-সংগ্রামের পর নারীরা আবার হারিয়ে যায়। তাদের বৈষম্যের শিকার হতে হয়। সামাজিকভাবেও নারীদের বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হতে হয়। সমাজের একটা অংশ চায় নারীরা সামনে না আসুক।- নিশিতা জামান নিহা
মধ্যরাতে হলের গেট ভেঙে আন্দোলনে নামেন ছাত্রীরা
কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৪ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে দেশের ছাত্রসমাজ। প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ওই রাতে গেটের তালা ভেঙে মিছিলে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ছাত্রীরা। যা এই আন্দোলনকে আরও গতিশীল করে।
বিজ্ঞাপন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আঞ্জুমান আরা স্বর্ণা জাগো নিউজকে বলেন, আমরা এমন অনেকেই আছি যারা কোনো ধরনের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। আমরা আমাদের নৈতিক জায়গা থেকে আন্দোলনে গিয়েছিলাম। যখন দেখেছি আমার ভাইদের ওপর হামলা করা হয়েছে তখন আমরা আর হলে বসে থাকতে পারিনি। রাজপথে নেমে এসেছিলাম। এরপর আমাদের ওপরও হামলা করা হলো। আমরা ভয় পায়নি, লড়ে গিয়েছি।
তিনি বলেন, যখন আমাদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলা হলো, প্রতিবাদে আমরা হল গেটের তালা ভেঙে মধ্যরাতে মিছিলে যোগ দিলাম। এটা ছিল সবার জন্য অনুপ্রেরণার। আমাদের এই অংশগ্রহণ আন্দোলনের স্পিরিটকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল।
জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক নিশিতা জামান নিহা। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, নারীদের অংশগ্রহণ শুধু জুলাই আন্দোলনে নয়, অতীতের অন্য সব আন্দোলনেও ছিল। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ সব জায়গায় নারীরা ভূমিকা রেখেছেন। চব্বিশের জুলাই আন্দোলনেও নারীরা অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। রাজপথে থেকে অন্য আন্দোলনকারীদের অনুপ্রাণিত করেছে।
বিজ্ঞাপন
আন্দোলনে ছাত্রীরা অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে৷ কিন্তু উপদেষ্টা নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ছাত্রীর জায়গা হয়নি৷ অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে নানা সংস্কার হলেও নারীদের নিয়ে কাজ হচ্ছে না৷ গত সাত মাসে দেখছি নারীদের আরও বেশি দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে৷- ডা. নুসরাত জাহান চৌধুরী
তিনি বলেন, দেশের অর্ধেকের বেশি জনগোষ্ঠী নারী, কিন্তু নারীদের সেই স্পেসটা দেওয়া হয় না। আন্দোলন সংগ্রামের পর নারীরা আবার হারিয়ে যায়। নারীদের বৈষম্যের শিকার হতে হয়। সামাজিকভাবেও নারীদের বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হতে হয়। সমাজের একটা অংশ চায় নারীরা সামনে না আসুক। নারীদের প্রাপ্য বা অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সৈয়দা সুমাইয়া পারভীন জাগো নিউজকে বলেন, আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা ছিল অনন্য। আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে আন্দোলন করতে হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি যে বাসায় থাকতাম সেখান থেকে সতর্কতার সঙ্গে বের হতে হতো। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের লোকজন, পুলিশ খোঁজখবর নিতো। তাই আন্দোলনে যেতে নানা কৌশল নিতে হতো।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আমি রামপুরা এলাকায় আন্দোলন করেছি। আমরা মেয়েরা সবসময় একসঙ্গে থাকার চেষ্টা করতাম। মিছিলের সামনে থাকতাম। আন্দোলনকারী কেউ আহত হলে সেবা করা বা দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতাম। আন্দোলনের সময় নারী-পুরুষ ভেদাভেদ ছিল না। সবাই একসঙ্গে লড়াই করেছি।
গত ৩১ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচি মার্চ ফর জাস্টিসে পুলিশের হাতে আটক হওয়া শিক্ষার্থীকে ছাড়াতে গিয়ে আহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক শেহরীন আমিন মোনামী। এসময় তার সঙ্গে থাকা আরেক শিক্ষক ড. নুসরাত জাহান চৌধুরীও হেনস্তার শিকার হন। ওইদিন দুপুরে দোয়েল চত্বর ও হাইকোর্টের মাঝামাঝি জায়গায় পুলিশ এক ছাত্রকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের একজন সদস্য জোরপূর্বক শারীরিক শক্তি প্রয়োগ করেন এবং ওই নারী শিক্ষককে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সবাই ফুঁসে ওঠেন৷
ওইদিনই আন্দোলন ঘিরে সারাদেশে হত্যা, গণগ্রেফতার, মামলা, গুম-খুন ও শিক্ষকদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদ, জাতিসংঘের তদন্তপূর্বক বিচার এবং ৯ দফা দাবিতে ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোস’ (আমাদের নায়কদের স্মরণ) কর্মসূচি দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষকদের ওপর হামলা করা হচ্ছে উল্লেখ করে কর্মসূচিতে বলা হয়, আগামীর বাংলাদেশ গড়ার কারিগর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকমণ্ডলীর ওপর ক্যাম্পাসের ভেতরে হামলা করেছে পুলিশের সন্ত্রাসীরা। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষিকা শেহরীন আমিন মোনামী ও নুসরাত জাহান চৌধুরীর গায়েও হাত তুলেছে পুলিশের কিছু কর্মকর্তা।
কর্মসূচি ঘোষণা করে বলা হয়, এমন ভয়ানক অন্ধকার পরিস্থিতিতে সারাদেশে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেফতার, হামলা-মামলা, গুম-খুন ও শিক্ষকদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে; জাতিসংঘ কর্তৃক তদন্তপূর্বক বিচারের দাবিতে এবং ছাত্রসমাজের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘Remembering our Heroes’ (রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোস) কর্মসূচি ঘোষণা করছে। এ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্দোলন নতুন রূপ নেয়। ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে ছাত্র-জনতা।
ইতিহাসের মূল্যায়ন করে পুরুষরা। তাই নারীদের অবদান স্বীকার করতে তারা একটু কুণ্ঠাবোধ করে। নারীরা সবসময় সুযোগ সুবিধা কম পেয়ে থাকে। আন্দোলন বা যুদ্ধ শেষেও নারীদের অংশীদারত্ব থাকে না।- ডা. ফওজিয়া মোসলেম
সেদিন হেনস্তার শিকার হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. নুসরাত জাহান চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, নারীরা সমাজের একটা পার্ট। সবার মধ্যে একটা টেনডেনসি থাকে তাদের দমিয়ে রাখার৷ নারীরা আন্দোলন-সংগ্রামে অংশগ্রহণ করে, কিন্তু আন্দোলনের পর তাদের আবার আগের জায়গায় ফেরত পাঠানো হয়৷ নারীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়, পুরুষেরা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে৷ যখন অর্জন শেষ হয় নারীকে আবার ব্যাকে ফেরত পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন
- নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা বেড়েছে
- বাবাকে বলেছিলাম বিসিএস দিলে চয়েস দেবো একটাই ‘পুলিশ’
- ১৮ বছরের আগেই যৌন নির্যাতনের শিকার ৩৭ কোটি নারী
তিনি বলেন, আমি বা আমরা নৈতিক জায়গা থেকে গিয়েছিলাম৷ জুলাই আন্দোলনে নারীদের অনেক বড় ভূমিকা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পাশাপাশি ছাত্রীরাও অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু উপদেষ্টা নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ছাত্রীর জায়গা হয়নি। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে নানা সংস্কার করা হচ্ছে। কিন্তু নারীদের নিয়ে কাজ করা হচ্ছে না। এই সাত মাসে দেখছি নারীদের আরও বেশি দমিয়ে ।রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ড. নুসরাত বলেন, রাজনীতিতে নারীদের কর্মী হিসেবে ব্যবহার করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করা হয়। যদিও আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান পদে নারীরা ছিল। কিন্তু নারীরা টপ পজিশনে থাকা মানেই তারা ডিসিশন মেকার না। আমরা সংসদে জেন্ডার কোটা দিয়েও নারীদের সামনে আনতে পারিনি। নির্বাচনে সঠিকভাবে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া হয় না। নারী যখন একটু ক্যাপাবল হয় তখন তাকে কেউ ছাড় দিতে চায় না।
তিনি আরও বলেন, কারাগার থেকে পুরুষরা বের হলে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। আর নারীদের নানা কটু কথা শুনতে হয়। নারী কারাগার থেকে বের হয়ে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। নারীদের যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রাপ্য জায়গা দেওয়ার জন্য একেবারে পরিবার থেকে শুরু করতে হবে। পলিটিক্যাল কালচার পরিবর্তন করতে হবে, যার জন্য প্রয়োজন শিক্ষা।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম জাগো নিউজকে বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামে নারীদের অংশগ্রহণ ইতিহাসের বাস্তবতা। দেশে যখন কোনো আন্দোলন শুরু হয় নারীরা তখন আর ঘরে বন্দি থাকে না, আন্দোলনের মূল ধারায় চলে আসে। শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বযুদ্ধ বা ইউরোপের বিভিন্ন যুদ্ধের ইতিহাস বলে নারীরা কখনো পিছিয়ে থাকেনি। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং সবশেষ জুলাই আন্দোলনেও নারীরা পিছিয়ে নেই।
‘দাস বিরোধী আন্দোলনে নারীরা মূল ভূমিকায় ছিল। শিল্প বিপ্লবেও রয়েছে অগ্রণী ভূমিকা। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামসহ সব ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ছিল।’
তিনি বলেন, ইতিহাসের মূল্যায়ন করে পুরুষরা। তাই নারীদের অবদান স্বীকার করতে তারা একটু কুণ্ঠাবোধ করে। নারীরা সবসময় সুযোগ সুবিধা কম পেয়ে থাকে। আন্দোলন বা যুদ্ধ শেষেও নারীদের অংশীদারত্ব থাকে না।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর জাগো নিউজকে বলেন, বহু বছর ধরে সংগ্রাম এবং পুরুষের পাশাপাশি লড়াইয়ের মাধ্যমে এদেশের নারীদের সামাজিক মর্যাদা অর্জিত হয়েছে। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে রাজপথে নারীদের ভূমিকা ছিল অনবদ্য। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে নারীরাই পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে। ৫২-এর ভাষা আন্দোলন পরবর্তী ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ৯০-এর স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে আন্তরিকতা, সাহসিকতা, বিচক্ষণতা, শ্রম, মেধা-মননশীলতা ও সৃজনশীলতা দিয়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে মহীয়সী নারীরা। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও বৈষম্যহীন জাতি নির্মাণের লক্ষ্যে স্থিরচিত্তে জীবনকে তুচ্ছ করে সম্মুখপানে এগিয়ে গেছেন নারীরা। এরই ধারাবাহিকতায় ২৪-এর জুলাই আন্দোলনের শুরু থেকেই রাজপথে বিভিন্নভাবে নারীদের অংশগ্রহণ দেখতে পাই।
জুলাইয়ের আন্দোলন প্রসঙ্গে হুমায়রা নূর বলেন, প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থী দেখলাম, তাদের ওপর আক্রমণ হলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা সামনে আসছেন। তাদের ওপর আক্রমণ হলে স্কুল-কলেজের নারী শিক্ষার্থীরা এসেছে। শুধু ঢাকা নয়, দেশের সব জায়গায় এটি দেখা গেছে। নীতিনির্ধারণ থেকে শুরু করে সশস্ত্র আক্রমণ মোকাবিলা করতে শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছে নারীরা। এই মাত্রায় নারীর অংশগ্রহণ জানান দিচ্ছে, জাতীয় রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা পালনের ডাক তারা শক্তিশালীভাবে গ্রহণ করছিলো। ১১ জন নারী এই আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন। নির্যাতন এবং আহত হয়েছেন হাজারো নারী।
তিনি বলেন, আন্দোলন পরবর্তী সময়ে সংস্কার কমিশনসহ রাষ্ট্রীয় সর্বক্ষেত্রে নারীদের প্রতিনিধিত্ব আশানুরুপ দেখতে পাইনি। অতীতে আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছি বলেই সব ধরনের বৈষম্য নিরসনের জন্য আন্দোলন করেছিলাম। তাই সামাজিক, রাজনৈতিক এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে নারীদের সমতা এবং ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করাটা অপরিহার্য।
পাওয়ার ডায়নামিকসে নারীদের অংশীদারিত্ব খুবই অপ্রতুল এবং সেটা বাড়াতে হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের গল্প পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করাসহ হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি ও নিহতদের যথাযথ মূল্যায়ন চান এই আইনজীবী।
এনএস/এমকেআর/এমএস
টাইমলাইন
- ০৯:৫৬ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নই নারীর আসল ক্ষমতায়ন
- ০৯:৫৫ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ নারী দিবসে জ্যাকুলিনের চমক
- ০৯:৩৩ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ প্রতিটি বাধাই উদ্যোক্তার বিকাশের একটি সুযোগ
- ০৮:৪০ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ পরিবেশ নিয়ে খুশি নন খোদ শিল্পীসংঘের সভাপতি
- ০৮:৩৮ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ হাইকোর্টে ১০ নারী বিচারপতি, আপিল বিভাগে নেই কেউ
- ০৭:৫৬ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ নারীর ওপর কোনো হস্তক্ষেপই কাম্য নয়
- ০৭:৪৯ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ নারী দিবসে জায়েদ খানের প্রত্যাশা
- ০৭:১১ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ ‘যদি নিজেকে নারী হিসেবেই ভাবতাম, এই পর্যায়ে আসতে পারতাম না’
- ০৬:৩৯ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ পুরুষতান্ত্রিক সমাজের উদ্দেশে যে বার্তা দিলেন কঙ্গনা
- ০৫:৪৯ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ অন্য উদ্যোক্তাদের নকল না করে নিজের সম্ভাবনা খুঁজতে হবে
- ০৫:১৪ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ দেশে দেশে প্রথা ভাঙা নারী তারকারা
- ০৪:৫৪ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মাননা
- ০৪:৫৩ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ শুটিংয়ের দুই বিড়ম্বনা, জানালেন অপু বিশ্বাস
- ০৪:৪৬ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ ‘সমাজটা নারীবান্ধব হতে হতে থেমে গেছে’
- ০৪:২২ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ মা-স্ত্রী ও মেয়ে আমার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ তিন নারী: তারেক রহমান
- ০৩:৫৮ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ সমতার পথে নারীর অগ্রযাত্রা: বাধা নয়, সুযোগ চাই
- ০৩:১৭ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ সর্বোচ্চ সংখ্যক ডিসি ও সচিব এখন নারী
- ০৩:০৫ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ ছন্নছাড়া জীবন ছেড়ে ১৮ বেদে নারীর রূপান্তরের গল্প
- ০২:৫২ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ ৫০০০ নারী কর্মী যুক্ত হবে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের টেলি মার্কেটিংয়ে
- ০২:১৯ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ নারী উদ্যোক্তা হওয়ার অনুকূল পরিবেশ অনুপস্থিত
- ০১:৫৭ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ জীবন সাজে-ফের চোখের জলে ভাসে
- ০১:১৮ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ নারী দিবস উৎসব নাকি প্রতিবাদ?
- ১২:৫২ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে ছিল নারীরা: ড. ইউনূস
- ১২:৪৬ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ নারীদের পোশাক নিয়ে কারও বক্তব্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে না: রিজভী
- ১২:৪৩ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ মুখ বুজে নির্যাতন সহ্য করেন ৬৪ শতাংশ নারী
- ১২:৪০ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ ডিজিটাল দুনিয়ায় নারীর অবস্থান
- ১২:৩২ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ যশোরে প্রান্তিক নারীদের দিন বদলের গল্প
- ১২:২৬ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ মনে হয়নি এলাকার কোনো বড়ভাই আমার দিকে তাকাবেন: ন্যান্সি
- ১২:১৮ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ নারী উদ্যোক্তাদের কল্যাণে নতুন দিগন্ত
- ১২:১৮ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ গুগল ডুডলে স্টেম শিক্ষায় নারীদের অবদান
- ১২:০৫ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ আইন পেশায় এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরা
- ১১:২৬ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ নারীশিল্পীদের পারিশ্রমিক কম, একে আমি বৈষম্য হিসেবে দেখি না
- ১১:০৯ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ রোজা রেখেও রক্ত দিয়েছেন নিগার
- ১০:৪৮ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ বিভিন্ন দেশে যেভাবে পালিত হয় নারী দিবস
- ১০:৪৪ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ নারী শ্রমিকদের বিদেশে যাওয়া কমছে, নেপথ্যে অত্যাচার-প্রতারণা
- ১০:৩৩ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ তিনবার আত্মহত্যা করতে যাওয়া দোলা এখন সফল উদ্যোক্তা
- ১০:১৫ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ ফেসভ্যালু নয়, আর্টভ্যালুকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত
- ১০:০৭ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ বৈষম্যই নারীমুক্তির প্রধান অন্তরায়
- ১০:০৪ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার গল্প শোনালেন সাদিয়া
- ০৯:৫৯ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ নারীরা শক্তি, সাহস আর সম্ভাবনার প্রতীক
- ০৯:২৭ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ নারী দিবস: শুধু একদিনের উদযাপন নাকি বছরের প্রতিদিন?
- ০৯:১৮ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ শত শত প্রতিবন্ধীকে স্বাবলম্বী করে চলেছেন ৩৯ ইঞ্চির অদম্য হোসনা
- ০৯:১২ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ কেন, কীভাবে শুরু নারী দিবসের?
- ০৯:০৩ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ
- ০৮:৩৯ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫ জুলাই আন্দোলনে শক্তি-প্রেরণা জুগিয়েছেন নারীরা
- ০৯:২৭ পিএম, ০৭ মার্চ ২০২৫ যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশেও অদম্য বাংলার নারী
- ০৮:১২ পিএম, ০৭ মার্চ ২০২৫ নারীরা শুধু সুযোগের অপেক্ষায় থাকবে না, সুযোগ সৃষ্টি করবে
- ০৬:৪৬ পিএম, ০৭ মার্চ ২০২৫ শিক্ষায় এগিয়ে থেকেও চাকরিতে পিছিয়ে নারী
বিজ্ঞাপন