ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ভ্রমণ

বিচ্ছিন্ন দুবলার চরে যা দেখে মুগ্ধ হবেন

ভ্রমণ ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৫:৪২ পিএম, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থানসমূহ। বছরজুড়েই সেসব স্থানে থাকে ভ্রমণপিপাসুদের আনাগোনা। তবে দেশের বেশ কিছু স্থান আছে যেখানে শীতেই প্রকৃতি সবচেয়ে সুন্দরভাবে পর্যটকের কাছে ধরা দেয়। তেমনই এক স্থান হলোসুন্দরবনের দুবলার চর।

দুবলার চর বাংলাদেশ অংশের সুন্দরবনের দক্ষিণে, কটকার দক্ষিণ-পশ্চিমে ও হিরণ পয়েন্টের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত একটি দ্বীপ। হরিণের জন্য বহুল পরিচিত এই স্থান। কুঙ্গা ও মরা পশুর নদের মাঝে এটি ৮১ মাইলের একটি বিচ্ছিন্ন চর এটি। আলোরকোল, হলদিখালি, কবরখালি, মাঝেরকিল্লা, অফিসকিল্লা, নারকেলবাড়িয়া, ছোট আমবাড়িয় ও মেহের আলির চর নিয়ে দুবলার চর গঠিত।

বিচ্ছিন্ন দুবলার চরে যা দেখে মুগ্ধ হবেন

দুবলার চরে কী কী দেখবেন?

শুটকি পল্লী

দুবলার চর মূলত জেলে গ্রাম। মাছ ধরার সঙ্গে চলে শুঁটকি শুকানোর কাজ চলে সেখানে। দুবলার চরে গেলে দেখতে পাবেন শুটকি পল্লী ও কীভাবে শুটকি প্রক্রিয়াজাত করা হয়। শুঁটকি পল্লীর ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চারদিকে শুঁটকির কড়া গন্ধ আপনার নাকে এসে লাগবে। গন্ধ সহ্য করেই হাঁটতে থাকুন ও দেখতে থাকুন।

কিছু দূর গেলেই চোখে পড়বে শুঁটকির বাজার। সেখানেও দেখতে পাবেন হরেক রকমের শুঁটকির পসরা সাজিয়ে বসে আছে দোকানদাররা। দুবলার চরের শুঁটকি দামেও তুলনামূলক সস্তা আবার সেরাও বটে। ঘুরে ঘুরে আপনিও কিনে ফেলতে পারেন পছন্দমতো শুটকি।

বিচ্ছিন্ন দুবলার চরে যা দেখে মুগ্ধ হবেন

নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী

এই চরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। বিশেষ করে চরে লাল বুক মাছরাঙা, মদনটাক পাখির দেখা পাওয়া যায়। পর্যটকরা সবচেয়ে বেশি উদগ্রীব থাকে হরিণ দেখার জন্য।

দুবলার চরে হাঁটলে আপনি নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণীর দেখবেন। এছাড়া চরের চারপাশে পানি থাকায় এখানে নানা প্রজাতির মাছ ও জলজ উদ্ভিদের দেখা পাবেন।

বিচ্ছিন্ন দুবলার চরে যা দেখে মুগ্ধ হবেন

মাছ ধরার দৃশ্য

আরও হাঁটলে সেখানকার জনজীবন দেখতে পাবেন। সেখানকার মানুষের জীবনধারা কতটা বৈচিত্র্য তা অনুধাবন করতে পারবেন। মাছ ধরাও দেখতে পাবেন খুব কাছ থেকে।

রাসমেলা ও পূণ্যস্নান

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাসমেলা ও পূণ্যস্নানের জন্যও দ্বীপটি বিখ্যাত। প্রতি বছর কার্তিক মাসে সেখানে রাসমেলা অনুষ্ঠিত হয়। ২০০ বছর ধরে এ রাসমেলা চলছে। প্রতিবছর অসংখ্য পুণ্যার্থী রাসপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে ভিড়েন এই দ্বীপে।

বিচ্ছিন্ন দুবলার চরে যা দেখে মুগ্ধ হবেন

দুবলার চরের রাসমেলায় স্থানীয় লোকজন ছাড়াও দূর-দূরান্তের শহরবাসী এমনকি বিদেশি পর্যটকেরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে থাকেন। তিনদিনব্যাপী এ মেলায় অনেক বিদেশি পর্যটকও ছুটে আসেন দুবলার চরে।

কীভাবে যাবেন?

দুবলার চরের অবস্থান মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে সুন্দরবনের দক্ষিণে। দুবলার চর সুন্দরবনের ৪৫ ও ৮ নম্বর কম্পার্টমেন্টে অবস্থিত।

দেশের যে কোনো স্থান থেকে দুবলার চরে পৌঁছাতে প্রথমে বাগেরহাটে যেতে হবে। বাগেরহাট পৌঁছে বাস অথবা সিএনজি অটোরিকশায় করে দুবলার চরে পৌঁছানো যাবে। এছাড়া খুলনার মোংলা বন্দরে গিয়ে সেখান থেকেও আপনি ট্রলার কিংবা লঞ্চ ভাড়া করে যেতে পারবেন এই চরে।

বিচ্ছিন্ন দুবলার চরে যা দেখে মুগ্ধ হবেন

কোথায় থাকবেন?

পর্যটন জাহাজ বা নৌযান ছাড়াও সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে বন বিভাগের রেস্টহাউজে থাকার ব্যবস্থা পাবেন। নীলকমলে দেশি পর্যটকদের জন্য রুম প্রতি ৩০০০ টাকা, ৪ রুম ১২ হাজার টাকা ও কচিখালীতে রুমপ্রতি ৩০০০ টাকা, ৪ রুম ১০ হাজার টাকা, কটকাতে রুমপ্রতি ২০০০ টাকা, ২ রুম ৪ হাজার টাকায় পেয়ে যাবেন।

সুন্দরবনের পাশে সাতক্ষীরা শহরে সাধারণ মানের হোটেল ও শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জে এনজিও সুশীলনের রেস্টহাউস ও ডরমেটরিতে একক, পরিবার ও গ্রুপ নিয়ে থাকার সুবিধা আছে।

মংলায় পর্যটন কর্পোরেশনের হোটেল, পশুর বন্দরে সাধারণ হোটেল আছে পর্যটকদের জন্য। খুলনা মহানগরে হোটেল রয়েল, ক্যাসেল সালাম, হোটেল টাইগার গার্ডেন, হোটেল ওয়েস্ট ইন, হোটেল সিটি ইন, হোটেল মিলিনিয়াম ইত্যাদি মানসম্পন্ন হোটেল ছাড়াও সাধারণ মানের হোটেল আছে।

জেএমএস/জিকেএস

আরও পড়ুন