পৃথিবীর মাঝে ভিনগ্রহের দ্বীপ ‘সকোত্রা’

অবতার সিনেমা দেখেছেন? যেখানে ভিনগ্রহে অদ্ভূত ধরনের উদ্ভিদ, পশুপাখি আর জলজ প্রাণীদের দেখানো হয়েছিল। যদি সিনেমার মতোই বাস্তবে এমন উদ্ভিদ ও প্রাণীদের দেখা যেত তাহলে কতই না ভালো হতো, এমনটি হয়তো ভাবেন অনেকেই।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি পৃথিবীতেই আছে এমন একটি দ্বীপ, যেখানে ভিনগ্রহের স্বাদ পাওয়া এই দ্বীপের নাম ‘সকোত্রা’। কেউ যদি ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে এই দ্বীপে জাহাজ দাড় করিয়ে চমকে উঠবেন।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: একদিনেই ঘুরে আসুন মিরসরাইয়ের বোয়ালিয়া ঝরনায়
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
ভুল ভাঙাতে গাঁয়ে চিমটি কেটে দেখবেন কেউ কেউ। অদ্ভূত দেখতে এমন গাছগাছালি পৃথিবীতে যে থাকতে পারে তা বিশ্বাস হবে না। মনে হবে অবতার সিনেমার দুনিয়ায় পা রেখেছেন।
গালফ অব এডেনের কাছে ভারত মহাসাগরের মাঝে ৪টি দ্বীপ নিয়ে ‘সকোত্রা’ দ্বীপপুঞ্জ। ইয়েমেনের উপকূল থেকে প্রায় আড়াইশ মাইল দূরে অবস্থিত দ্বীপপুঞ্জটির প্রধান দ্বীপের নামও ‘সকোত্রা’। এই দ্বীপের প্রায় ৮২৫ জাতের উদ্ভিদের মধ্যে প্রায় তিন ভাগের দেড় ভাগই বিশ্বের কোথাও নেই।
বিজ্ঞাপন
সকোত্রার গাছগাছালির মধ্যে অন্যতম ‘ড্রাগন’স ব্লাড ট্রি। এর ওপরের অংশ ছাতার মতো ছড়ানো। গাছের লাল রসকে একসময়কার পৌরাণিক ড্রাগনের রক্ত ভাবা হলেও এখন ওষূধি গাছ ও রঞ্জক হিসেবে জনপ্রিয়।
আরও পড়ুন: ঘুরে আসুন সিলেটের সবুজ পাহাড়ের পাশে শাপলার রাজ্যে
এখানকার আরেকটি বিখ্যাত গাছ ‘বোতলগাছ’। এর কয়েকটি জাত আছে। এদের একটি কিউকাম্বার বা শসা গাছ। এ ধরনের গাছ একসময় আরবের মরুভূমিতে দেখা গেলেও এখন সকোত্রাতেই কেবল মেলে।
বিজ্ঞাপন
এখানকার প্রাণীদেরকেও বাইরে খুঁজে পাওয়া যায় না। দ্বীপে বাস করা প্রাণীদের মধ্যে সকোত্রা ওয়ার্বলার, সকোত্রা বান্টিং পাখি, ঘোস্ট ক্র্যাব, সকোত্রা লাইমস্টোন বা চুনাপাথর কাঁকড়া, ইজিপশিয়ার শকুন, লগারহেট কচ্ছপ অন্যতম।
এছাড়া সরীসৃপ প্রজাতির মধ্যে ৯০ শতাংশ ও ভূ-ভাগের শামুকদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ পৃথিবীর আর কোথাও আর নেই। এখানের সাগরেও আছে নাম না জানা জলজ প্রাণি। এর মধ্যে ২৫৩ প্রজাতির প্রবাল, ৭৩০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছসহ আরও অনেক কিছু।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: ঘুরে আসুন দেশের সবচেয়ে সুন্দর গ্রাম ‘মুনলাই’ থেকে
প্রায় ২৫ কোটি বছর আগে, যখন বড় বড় ভূ-খণ্ডগুলো একত্রিত হচ্ছিল, তখনও সকোত্রা দ্বিপটি সবার থেকে পৃথক থেকে যায়। পৃথক অবস্থানের কারণে এখানকার উদ্ভিদ ও প্রাণী অন্যান্য জায়গায় বিস্তার করতে পারেনি।
দ্বীপটির অর্ধেকাংশ মরুময়। প্রশস্ত বালুময় সৈকত, চুনাপাথরের গুহা আর উঁচু-নিচু পাহাড়। কখনো কখনো বৃষ্টি হয়। স্থানটি ইউনেস্কো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট।
বিজ্ঞাপন
তাই কেউ যদি ভিনগ্রহের স্বাদ পেতে চান, তাহলে আসতে পারেন এই দ্বীপে। কাটিয়ে যেতে পারেন নিজের মতো করে কয়েকটি দিন। কারণ ইয়েমেনের এই দ্বীপটির অবস্থান দুর্গম হলেও অবতার সিনেমার দুনিয়ায় যাওয়ার চেয়ে সহজ।
লেখক: ফিচার লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী
বিজ্ঞাপন
জেএমএস/জিকেএস
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন