ছুটির দিনে ঘুরে আসুন ৪০০ বছরের পুরোনো নগরীতে
অতীতে ঐতিহাসিক এক শহর ছিল পানাম নগরী। পৃথিবীর ১০০ ধ্বংসপ্রায় ঐতিহাসিক শহরের মধ্যে একটি হলো পানাম নগরী। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের ৪০০ বছরের এই পুরোনো নগরীর মঠবাড়িতে ভিড় করেন পর্যটকরা।
ঢাকার খুব কাছেই ২৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত পানাম নগরী একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহরের নাম। সোনারগাঁওয়ে ২০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে ওঠে এই নগর।
আরও পড়ুন: যে দেশে নেই রাস্তা, মধ্যরাতেও আকাশে থাকে সূর্য
বড় নগর, খাস নগর, পানাম নগর- প্রাচীন সোনারগাঁওয়ের এই তিন নগরের মধ্যে পানাম ছিলো সবচেয়ে আকর্ষণীয়। হারানো নগরী নামেও পরিচিত এই ঐতিহাসিক স্থান। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলার বারো ভূঁইয়াদের ইতিহাস।
পানাম নগরীতে আছে ৪০০ বছরের পুরোনো মঠবাড়ি, নীলকুঠি, পোদ্দার বাড়ি, কাশিনাথের বাড়ি, সোনারগাঁয়ের একমাত্র আর্টগ্যালারি আর নানা প্রাচীন ভবনসহ পঙ্খীরাজ খাল।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ঈসা খাঁর আমলে বাংলার রাজধানী ছিল এই পানাম নগর। পানাম নগরী থেকেই তখন সোনারগাঁয়ের রাজকার্য পরিচালিত হতো। পানামের পূর্বে মেঘনা আর পশ্চিমে শীতলক্ষ্যা নদীপথে বিলেত থেকে আসতো বিলাতি থানকাপড় ও দেশ থেকে মসলিন কাপড় যেতো।
আরও পড়ুন: ভাসমান পেয়ারা বাজরে কীভাবে যাবেন ও কত খরচ?
বর্তমানে পানাম নগরের দু’ধারে ঔপনিবেশিক আমলের মোট ৫২টি স্থাপনা রয়েছে। এর উত্তরদিকে ৩১টি ও দক্ষিণদিকে ২১টি স্থাপনা অবস্থিত। স্থাপনাগুলোর স্থাপত্যে ইউরোপীয় শিল্পরীতির সঙ্গে মোঘল শিল্পরীতির মিশ্রণ দেখতে পাওয়া যায়।
পানাম নগরীর নকশা নির্মাণ করা হয়েছে বেশ নিখুঁত আকারে। নগরীর প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই আছে কূপসহ আবাস উপযোগী নিদর্শন। পানি সরবরাহের জন্য দু’পাশে খাল ও পুকুর আছে।
মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা দিয়ে একটু দক্ষিণ দিকে গেলে দেখা যায় আরো কিছু ইমারত, বারো আউলিয়ার মাজার, হযরত শাহ ইব্রাহিম দানিশ মন্দা ও তার বংশধরদের মাজার, দমদম গ্রামে অবস্থিত দমদমদুর্গ ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: হাজার ফুটের ‘দুধসাগর’ ভ্রমণের আগে যা জানা জরুরি
তাছাড়া নগরীর আশপাশে ছড়িয়ে আছে ঈসা খাঁ ও তার ছেলে মুসা খাঁর প্রমোদ ভবন, ফতেহ শাহের মসজিদ, সোনাকান্দা দুর্গ, পঞ্চপীরের মাজার, কদম রসুল, চিলেকোঠাসহ বহু পুরাতাত্ত্বিক গুরুত্ববহ স্থাপনা। পানামের চারপাশের সবুজের সমারোহ প্রতিনিয়ত তার নয়ন জুড়িয়ে দেয়।
কীভাবে যাবেন?
ঢাকার গুলিস্তান থেকে স্বদেশ, বোরাক, দোয়েল ও সোনারগাঁ নামক বাসে উঠে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁ মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় নামতে হবে। গুলিস্তান থেকে জনপ্রতি বাস ভাড়া ৪০ হতে ৫০ টাকা লাগবে।
মোগরাপাড়া থেকে লোকশিল্প জাদুঘরের দূরত্ব প্রায় ২ কিলোমিটার। চাইলে রিকশা অথবা সিএনজিতে করেও যেতে পারেন। এছাড়া নিজস্ব পরিবহন থাকলে তা দিয়েও সহজে যেতে পারেন।
জেএমএস/জিকেএস