যে শহরে চলে না গাড়ি
গাড়িমুক্ত শহরের কথা শুধু স্বপ্নেই যেন চিন্তা করা যায়! প্রতিদিনের যানজটে নাজেহাল যেখানে আমরা, সেখানে এমনো শহর আছে যেখানে নেই গাড়ি, হর্ণের শব্দ ও দূষণ।
নিশ্চয়ই ভাবছেন, এমনো শহর আছে নাকি বিশ্বে? অবশ্যই আছে, তাও আবার একটি বা দুটি নয় বেশ কয়েকটি। জেনে নিন বিশ্বের কোন কোন শহরে চলে না গাড়ি-
জারম্যাট, সুইজারল্যান্ড
জারম্যাট খুবই সুন্দর একটি জায়গা। ম্যাটারহর্নের গোড়ায় অবস্থিত শহরটি। এটি সম্পূর্ণ গাড়িমুক্ত এক শহর। জারমাট থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে সেখানকার মানুষেরা ট্রেনে চড়তে পারে।
যা প্রতি ২০ মিনিট পরপর শহরে চলে। তবে জারম্যাটের বাসিন্দারা ঘোড়ার গাড়ি বা পায়ে চলাচল করতেই পছন্দ করেন।
হাইড্রা দ্বীপ, গ্রীস
ময়লার ট্রাক ছাড়া কোনো ধরনের মোটরচালিত যানবাহন চলে না এই দ্বীপে। দর্শনার্থীরা ও সেখানকার বাসিন্দারা মূল ভূখণ্ড থেকে নৌকা বা হাইড্রোফয়েলের মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছান।
দ্বীপে পৌঁছে গেলে, ওয়াটার ট্যাক্সিতে ভ্রমণ করে বিভিন্ন স্থান দর্শন করেন তারা। সেখানে দূষণ অনেক কম। হাইড্রার প্রধান আকর্ষণ হলো সেখানকার ঘর-বাড়িগুলো। টকটকে লাল-টাইলযুক্ত ও সাদা-দেয়ালের বিল্ডিং, যা সবারই নজর কাড়ে।
ভেনিস, ইতালি
বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত শহর ভেনিস। পানিতে ভাসমান এই শহরও গাড়িমুক্ত। সেখানে সবাই নৌকায় যাতায়াত করেন। যা খুবই অভূতপূর্ব এক দৃশ্য। স্থানীয় ও দর্শনার্থীরা নৌকায় বা হেঁটে ভেনিসে বিভিন্ন গন্তব্যে যান। ভেনিসে ১৭৭টি খাল, ৪১৬টি সেতু ও অনেক বিল্ডিং আছে। যা বিশ্বজুড়ে দর্শকদের আকর্ষণ করে।
গিথোর্ন, নেদারল্যান্ডস
হল্যান্ডের উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত এক শহর হলো গির্থোন। যেখানে নৌকা ছাড়া চলার উপায় নেই। ঠিক ভেনিসের মতোই। এর পাশাপাশি সাইকেলও বেশ জনপ্রিয় সেখানে। গির্থোন একদম ছবির মতোই সুন্দর।
ক্রোয়েশিয়ার দুব্রোভনিকের ওল্ড টাউন
এই ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের ভেতরে মোটরচালিত যানবাহন নিষিদ্ধ। সূর্যাস্ত দর্শনের জন্যই সেখানে ভিড় করেন পর্যটকরা।
লামু, কেনিয়া
পূর্ব আফ্রিকার প্রাচীন ও সর্বোত্তম-সংরক্ষিত সোয়াহিলি বসতি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। এই স্থানটিও সম্পূর্ণরূপে গাড়িমুক্ত। পথচারীরা গাঁধা ও সাইকেল ব্যবহার করেন চলাচলের ক্ষেত্রে।
ঘেন্ট, বেলজিয়াম
বেলজিয়ামের দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়িমুক্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত ঘেন্ট। ১৯৯৬ সালে গাড়ি নিষিদ্ধ হয় সেখানে। বায়ু দূষণ রুখতেই এই নিয়ম চালুন করেন তারা। প্রায় ৮৬ একর বিস্তীর্ণ ঘেন্টেএকেবারেই গাড়িমুক্ত। তবে পর্যটকরা সাইকেল চালান সেখানে।
ফেস এল বালি, মরক্কো
ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এটি। এখানেও চলে না গাড়ি। সেখানকার রাস্তাগুলো বেশ সরু ও গলিপথ বেশি। বেশিরভাগ মানুষই দোকান, স্কুল, মসজিদের আশেপাশে চলাচলের জন্য গাঁধা বা সাইকেল ব্যবহার করেন। ফেস এল বালিকে বিশ্বের বৃহত্তম মধ্যযুগীয় শহর বলা হয়, যা এখনো টিকে আছে।
জেএমএস/জিকেএস