একদিনেই বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকত ভ্রমণ
সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে সবারই ইচ্ছে করে। সমুদ্রপ্রেমীরা কিন্তু চাইলেই একদিনে ঘুরে আসতে পারেন বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকত থেকে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার মধ্যভাগে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের অবস্থান।
সীতাকুণ্ড থেকে বাঁশবাড়িয়ার দূরত্ব প্রায় ৯ কিলোমিটার। সেখানে দেখার মতো আরও এক স্থান হলো বাঁশবাড়িয়া রাবার বাগান। তবে বেশিরভাগ পর্যটক সেখানকার সমুদ্রসৈকত দেখতেই ভিড় জমায়।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মত এইখানে বড় বড় ঢেউ নেই। তবে সুসজ্জিত ঝাউগাছের উপর বিশাল আকাশ আর নীল জলরাশি বাঁশবাড়িয়া সি বীচকে করেছে অনন্য।
এখানকার প্রধান আকর্ষণ বাঁশবাড়িয়া ব্রিজ। এই ব্রিজটির দৈর্ঘ্য সমুদ্রের ভেতর প্রায় আধা কিলোমিটার পর্যন্ত। জোয়ারের সময় ব্রীজটি পানির সঙ্গে সম্পূর্ণ মিশে যায়। আবার ভাটার সময় চোখে পড়ে দৃষ্টিনন্দন ইস্পাতের তৈরি এই ব্রীজ।
তবে হালকা জোয়ারের সময় ব্রিজটি যখন পানিতে ভাসমান থাকে তখনই দেখতে বেশি সুন্দর লাগে। পর্যটকরা এই ব্রিজে চড়েই হেঁটে যেতে পারেন সমুদ্রের অনেকখানি ভেতরে।
বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকতের পাড়েও আপনার গুলিয়াখালি সি বিচের মতো ঘাস দেখতে পাবেন। জোয়ারের পানি ঘাসের উপর প্লাবিত হয়ে তৈরি হয়েছে অনেকগুলো উঁচু নিচু টিলা আর গর্ত। যা এই বিচের সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রতিদিন সমুদ্রপাড়ের গাছগুলো জোয়ারের পানিতে ভিজে আর রোদে শুকিয়ে যাওয়ার করণে এর বেশিরভাগেরই শ্বাসমূল বেরিয়ে এসেছে। এসব গাছের তলায় বসে অনেক পর্যটক বিশ্রাম নেন।
বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকতে চাইলে যে কোনো সময়ই যেতে পারবেন। তবে শীতের সময় পর্যটকের সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। কারণ তখন খেজুরের রস পাওয়া যায় ও সাগরের পানিও থাকে শান্ত।
সাধারণত দুপুরের দিকে জোয়ারের পানি কমায় ব্রিজটি ভাসমান অবস্থায় দেখা যায়। আর ভাঁটার সময় ব্রিজটি লোহার লম্বা রডের মতো দেখায়। তবে সমুদ্রসৈকতে হাঁটাহাঁটি কিংবা সৌন্দর্য্য উপভোগ করার প্রকৃত সময় হলো বিকেল।
চাইলে সীতাকুণ্ড ভ্রমণে আরও ঘুরে আসতে পারেন খৈয়াছড়া ঝর্ণা, নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা, কমলদহ ঝর্ণা, গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত, কুমিরা সন্দ্বীপ ঘাট, সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক ও চন্দ্রনাথ পাহাড় থেকে।
কীভাবে যাবেন ও কোথায় থাকবেন-খাবেন?
ঢাকা-চট্টগ্রামগামী যে কোনো বাসে চড়ে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া বাজারে নামতে হবে। সেখান থেকে লোকাল সিএনজিতে জনপ্রতি ২০-২৫ টাকা ভাড়ায় যেতে পারবেন বাঁশবাড়িয়া সি বিচে।
বনভোজন কিংবা পিকনিকের জন্য এই স্থানটি উপযুক্ত। সেখানকার অনেক স্থানীয় হোটেল থেকে চাইলেই এখানে সমুদ্রের স্থানীয় মাছ, কাঁকড়া, চিংড়ির পাশাপাশি মাংস ও পাওয়া যায়।
প্রয়োজন ও বাজেট অনুযায়ী অর্ডার করে স্থানীয় খাবারের স্বাদও নিতে পারেন। হোটেলের পাশে খুব সুন্দর একটি মসজিদ আছে। সেখানে নামাজ আদায় করেতে পারবেন।
সাধারাণত বাঁশবাড়িয়াতে থাকার কোনো হোটেল বা রিসোর্ট নেই। তবে বাজারের আশেপাশে বেশ কিছু হোটেল আছে। চাইলে পছন্দমতো হোটেল ভাড়া করে থাকতে পারবেন।
টিপস: বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকত ভ্রমণে একদিনের বেশি প্রয়োজন নেই। আর যদি সীতাকুণ্ডের আরও কিছু স্থান ঘুরতে চান তাহলে কমপক্ষে হাতে ২-৩ দিন সময় নিয়ে যেতে হবে।
জেএমএস/জিকেএস