ফেরাউনের গ্রামে গিয়ে যা দেখবেন
ফেরাউনকে নিয়ে মানুষের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই! তখনকার সময় কেমন ছিলো তার জীবন ব্যবস্থা তা নিয়ে সবারই জানার কৌতূহল তুঙ্গে। বিশেষ করে মিশর সম্পর্কে জানার আগ্রহ আছে সবার মনেই।
কৌতূহলের এক দেশ হলো মিশর। এজন্যই প্রতিবছর সারাবিশ্বের লাখ লাখ মানুষ মিশর ভ্রমণে বের হন। জানেন কি, পৃথিবীর সব দেশের পর্যটন শিল্পে মোট যে আয় হয় তার প্রায় ২৫ শতাংশই মিশর থেকে আসে।
মিশরের অতীত জীবন ব্যবস্থা কেমন ছিল, আর ফেরাউনের ভূমিকাসহ তখনকার সব ঐতিহ্য নিয়ে উঠেছে এক গ্রাম। যার নাম দেওয়া হয়েছে ফেরাউনিক ভিলেজ। সেখানে গেলে দেখা যাবে, প্রাচীন মিশর কেমন ছিলো? কায়রো জাদুঘরের একটি অংশ এই ফেরাউনিক ভিলেজ বা ফেরাউনের গ্রাম।
ফেরাউনের এই গ্রামে ঢুকতে আপনাকে গুনতে হবে ৩২৫ পাউন্ড। এটি তৈরি করেছেন ড. রাগাব হোসেন। ফেরাউনের সময়কার মিশর দেখতে কেমন ছিল তারই বাস্তব চিত্র দেখা যাবে এখানে।
প্রাচীন মিশরীয়দের আচার, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক, জীবনযাপনের সব নমুনাই দেখা যাবে এই ভেরাউনিক ভিলেজে। মেনকি তখনকার সময়ে মিশরীদের বিবাহ কীভাবে হত, তাও দেখতে পাবেন।
তখনকার সময়ের বিভিন্ন ঘটনার বাস্তবিক রূপ দেখতে পারবেন এই গ্রামে গেলে। যেমন- মূসা (আ.) কে তার মা ঝুড়িতে করে পানিতে ভাসিয়ে দিচ্ছেন। ঝুড়িটি ভাসতে ভাসতে গিয়ে পৌঁছালো ফেরাউনের স্ত্রী আছিয়ার কাছে।
সেই তাকে পরবর্তীতে লালন পালন করেন। এসব ঘটনা আপনি ফেরাউনিক ভিলেজে দাঁড়িয়ে চোখের সামনেই দেখতে পাবেন। এজন্য সেখানে তৈরি করা আছে মঞ্চ।
মিশরীয় সভ্যতার সব জীবন ব্যবস্থার দর্শানার্থীদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। কীভাবে মিশরীয়রা চাষাবাদ করতেন, পশু পালন, ফসল তোলা, হিসাব রাখাসহ সেখানকার বিখ্যাত মধু চাষের দৃশ্যও স্বচক্ষেই দেখতে পারবেন।
এক দল মৎসজীবীকে দেখতে পাবেন, যারা ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ তুলছেন নীল নদ থেকে। আরও দেখা যাবে, নারীরা কীভাবে আঙুর দিয়ে সুরা তৈরি করছেন, কাপড় তৈরির র্শ্যই চোখে পড়বে আপনার।
নীলনদের মাঝেই একটি টানেল করে নৌকা ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়েছে ফেরাউনিক ভিলেজে। তার দুই পাশেই নমুনা রাখা হয়েছে সবকিছুর। নৌকা ভ্রমণ করতে করতে যত সামনে এগিয়ে যাবেন, ততই আপনার কৌতূহল বাড়বে মিশরীয় সভ্যতার নিদর্শন দেখে। হয়তো ভাববেন, টাইম মেশিনে চড়ে সেই হাজারও বছর আগে ফিরে গিয়েছেন!
সেখানে নেই আধুনিক সময়ের ছোঁয়া। বর্তমানে মিশরের কায়রো জাদুঘর বেশ জনপ্রিয় পর্যটকদের কাছে। মিশরের মমি সম্পর্কে নিশ্চয়ই আপনার জানার কৌতূল আছে। ফেরাউনিক ভিলেজে গেলে, স্বচক্ষেই দেখতে পারবেন, কীভাবে ধাপে ধাপে মমি করা হচ্ছে একটি মৃতদেহকে।
ফেরাউনিক ভিলেছে আরও আছে লাক্সুরে ফেরাউনের ইবাদাতের ঘর। সেখানে গেলে দেখবেন, ফেরাউনের তৈরি বা তার সময়কার নানা নিদর্শন। প্যাপিরাস গাছ থেকে তৈরি করা হচ্ছে কাগজ। মন্দিরের ভেতরে ফেরাউনের মূর্তি দেখা যাবে।
সে সময় রানিরা কীভাবে সাজতেন; সে দৃশ্যও উপভোগ করতে পারবেন বাস্তবে। মিশরের কায়রো জাদুঘরের নতুন সংযোজন এই ফেরাউনিক ভিলেজ বা ফেরাউনের গ্রাম এরই মধ্যে জনপ্রিয় কুড়াচ্ছে। হাজারো বছর আগের মিশরকে তুলে ধরতেই প্রতিষ্ঠাতা তৈরি করেছেন ফেরাউনিক ভিলেজ।
জেএমএস/এমকেএইচ