চায়না বাঁধে গিয়ে যা দেখবেন
মো. রাকিবুল হাসান
কয়েকদিন ধরে বেশ গরম পড়েছে। এর মধ্যেই স্কুলের বন্ধুরা ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। অতঃপর সবাই সিদ্ধান্ত নিয়ে ভ্রমণে গেলাম সিরাজগঞ্জের চায়না বাঁধের সৌন্দর্য দেখতে। পিচ ঢালা রাস্তার একদিকে অথৈ পানি অন্যদিকে বালি।
নদীর চরে সাদা উইন্ডমিল। নীল আকাশে উইন্ডমিলের সাদা পাখাগুলো দৃষ্টি কাড়ছে অনেকের। গরমেও ২৫ মে’র বিকেল ছিল শীতল। যমুনা নদীতে সারি সারি নৌকা দোল খেলছে। চারদিকে বাতাসের শো শো শব্দ।
দু’পাশেই নদী। সবুজ ঘাসে দাঁড়িয়ে আমরা নদীর অন্য ঘাট খুঁজি। যতদূর চোখ যায় পানি আর পানি। এ বাঁধের রুপ মনকে নাড়িয়ে দেয়। এই মূহুর্তগুলোকে ফ্রেমে বন্দি করছে মুশফিকুর রহমান।
গল্প, গান ও ফটোসেশনের জন্য দারুণ এক জায়গা এটি। বাঁধে অসংখ্য মানুষ বেড়াতে এসেছে। কেউ চেয়ার পেতে পরিবার নিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। কেউ মোটরসাইকেলে ছোটাছুটি করছেন।
শিশুরা আনন্দে মাতোয়ারা। অনেক মানুষ একসঙ্গে তবুও কোলাহল নেই। আছে সতেজ হাওয়া। বেশ কয়েকটি ভাম্যমান দোকানও দেখা গেল। বাঁধের একদিকে দোলনা ও নাগরদোলা বেঁধে রাখা।
বগুড়ার ‘ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হাই স্কুল জাহাঙ্গিরাবাদ’ এর এসএসসি ২০১৩ ও ২০১৪ ব্যাচের ৬ জন মিলে বেড়াতে যাই। দুপুরবেলা বগুড়া শহরের ফুলতলা মোড় থেকে প্রাইভেট কারে রওনা দিই আমরা। ঘণ্টা দুয়েক পর পৌঁছে গেলাম সিরাজগঞ্জে। শহর থেকে পরিচিত এক অনুজ শুভকে নিয়ে চায়না বাঁধে যাই।
শহর থেকে ২ কিলোমিটার দূরে নদীর কূল ঘিরে তৈরি করা হয়েছে এই বাঁধ। এই বাঁধের ধাঁর ঘেষে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সীমানা। মূল ফটক থেকে আরও ২ কিলোমিটার গভীরে চলে গেছে বাঁধের শেষ প্রান্ত।
এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নদীর তীর রক্ষা (বাঁধ) নির্মাণের কাজ চলছে। সংরক্ষিত এই এলাকায় সর্বসাধারণের চলাচল নিষেধ। ফটকের আশপাশ পর্যটনের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
যমুনার এ পাড় থেকে বিশ্বের ১১তম বঙ্গবন্ধু সেতু স্পষ্ট দেখা যায়। স্থানীয় এক মাঝি বলেন, চায়না বাঁধের কাছেই আরও কয়েকটি বাঁধ আছে। সব বাঁধই একেক রকম সুন্দর। বিকেলের দিকে নদীর তীরে মানুষ বেশি আসেন। তবে এই বাঁধে মানুষ বেশি দেখা যায়।
গোটা বিকেল এ বাঁধেই কেঁটে যায়। সূর্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের গাড়িও সিরাজগঞ্জ শহরের দিকে ছুঁটতে থাকে। এসএসসি ২০১৩ ব্যাচের নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, অনেকদিন পর শহর থেকে একটু দূরে ঘুরতে এলাম। ছোটবেলার বন্ধুদের সঙ্গে দারুণ সময় কাঁটালো।
সবাই একসঙ্গে আসতে পেরে আনন্দিত বন্ধুরা। তিনি আরও বলেন, একটি নদীর তীর এতো সুন্দর হয়, না আসলে বিশ্বাস হবে না৷ চায়না বাঁধ মুগ্ধ করেছে আমাদের।
সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ শহরে গিয়ে এক রেস্তোরাঁয় ঢুকলাম। ঠান্ডা পরিবেশে গরম খিচুড়ি খেলাম সবাই একসঙ্গে। পরে অনুজকে বিদায় দিয়ে দইয়ের শহর বগুড়ার পথে রওনা হই।
জেএমএস/জিকেএস