বিস্ময়কর রংধনু নদী সৃষ্টি হয়েছে কবে?
সৃষ্টিলগ্ন থেকেই মানুষের কাছে প্রকৃতির অনেক কিছু রহস্যময়। কালের পরিক্রমায় বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় অনেক রহস্যই এখন আর রহস্য নয় মানুষের কাছে। তেমনই এক রহস্যময় সৌন্দর্যের নাম ‘কানো ক্রিস্টালেস’। যা সাধারণের কাছে ‘রংধনু নদী’ নামেই বেশি পরিচিত। প্রকৃতির এ অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত রহস্যের গল্প শোনাচ্ছেন মমিনুল হক রাকিব--
রংধনু নদী নামকরণের পেছনে অবশ্য যথেষ্ট কারণ রয়েছে। গুইয়ানা শিল্ড রক ফরমেশনের মধ্য দিয়ে বেয়ে আসা জলধারাটি প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে লাল, সবুজ, নীলসহ হরেক রকম রঙে সেজে ওঠে।
বিশেষ করে জুলাই থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে কয়েক সপ্তাহের জন্য নদীর তলদেশে এ বর্ণিল রঙের সৃষ্টি হয়।
বিস্ময়কর নদীটি সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ১.২ বিলিয়ন বছর আগে। পৃথিবীর প্রাচীন ভূ-তাত্ত্বিক অবকাঠামোগুলোর মধ্যে নদীটি অন্যতম বলে মনে করেন গবেষকরা।
ধারণা করা হয়, আন্দিজ পর্বতমালার পূর্বে এটি সৃষ্টি হয়। ৬২.১ মাইল দীর্ঘ এ নদী ভেনিজুয়েলা, ব্রাজিল আর কলোম্বিয়ায় প্রবাহিত হয়েছে। তবে নদীর মূল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ধরা হয় কলোম্বিয়ার ম্যাকারেনা ন্যাশনাল পার্ককে।
নদীর এমন অদ্ভুত রঙের কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা জানান, নদীর পানিতে মাকারেনিয়া ক্লাভিগেরা নামক বিশেষ প্রজাতির শ্যাওলা জন্মে। আর এ শ্যাওলার বিভিন্ন বর্ণের কারণেই নদীর এমন রূপ দেখা যায়। এ প্রজাতির শ্যাওলা কেবল এ নদীতেই পাওয়া যায়।
২০০৯ সাল পর্যন্ত এ নদীতে পর্যটক নিষিদ্ধ ছিল। তবে এখন পর্যটকদের জন্য এ নদী উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত নদীর আশেপাশে ২০ জনের বেশি মানুষ ভিড়তে দেওয়া হয় না।
নদীর জীববৈচিত্র রক্ষা করতেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নদীর এ অপরূপ সৌন্দর্যের কারণে পৃথিবীর বহু মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে ‘রংধনু নদী’।
এ অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত জীববৈচিত্র রক্ষার জন্য পর্যটক নিয়ন্ত্রণের জোর দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা।
এসইউ/এমকেএইচ