ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ভ্রমণ

রহস্যময় ‘পারকি বিচ’ সত্যিই কি ভুতুড়ে?

ভ্রমণ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২:৪৯ পিএম, ১১ মার্চ ২০২১

সমুদ্রসৈকতের দৃশ্য সবাইকে মুগ্ধ করে। তাই তো ২-৩ দিনের ছুটি পেলে সবাই সমুদ্রে দেখতে যান! বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে কক্সবাজার বা পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত শীর্ষে অবস্থান করছে।

তবে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের আনোয়ারার পারকি সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এ সৈকতের সবুজ ঝাউবন, লাল কাঁকড়া ও নীলাভ জলরাশি যেন ভ্রমণকারীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।

চট্টগ্রাম শহর থেকে পারকি সৈকতের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এটি মূলত কর্ণফুলী নদীর মোহনায় অবস্থিত। কর্ণফুলী নদীর মোহনার পশ্চিম তীরে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এবং পূর্ব-দক্ষিণ তীরে পারকি সমুদ্রসৈকত।

jagonews24

এটি একটি উপকূলীয় সমুদ্রসৈকত। এ সৈকত চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানায় অবস্থিত। বারাসত ইউনিয়ন পরিষদ ২০১৩ সাল থেকে এ সৈকতকে পর্যটন স্পট হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।

লম্বায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার; ৩০০-৩৫০ ফিট চওড়া এবং ২০ কিলোমিটার ঝাউবনযুক্ত সৈকতটি অত্যন্ত নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অধিকারী। পারকি সমুদ্রসৈকতে যাওয়ার পথেই আপনি মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।

আঁকা-বাঁকা পথ ধরে ছোট ছোট পাহাড়ের দেখা মেলে রাস্তার দু’ধারে। চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড এবং কাফকোর দৃশ্যও পর্যটকদের প্রাণ জুড়ায়। পারকি সৈকতে যাওয়ার পথে কর্ণফুলী নদীর উপরে ঝুলন্ত ব্রিজটিও আপনার নজর কাড়বে।

jagonews24

পর্যটকদের বিনোদনের জন্য পারকি সমুদ্রসৈকতে আছে স্পীড-বোট, সী-বাইক এবং হর্স রাইডিংয়ের আয়োজন। কর্ণফুলী নদীর চ্যানেলে অবস্থিত পারকি সমুদ্রসৈকত থেকে উত্তর দিকে হেঁটে গেলে বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলি নদীর মোহনার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।

ধীরে ধীরে ভ্রমণ গন্তব্য পারকি সমুদ্রসৈকত পর্যটকবান্ধব করে গড়ে তোলা হচ্ছে। ফলে উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থার পাশাপাশি পর্যটকদের কেনাকাটার জন্য দোকান নির্মাণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। অনেক পর্যটকই সেখান থেকে ঘুরে আসার পরে জানিয়েছেন, স্থানটির ভুতুড়ে কর্মকাণ্ড সম্পর্কে। স্থানীয়দেরও ধারণা, পারকি সমুদ্রসৈকত না-কি ভুতুড়ে!

সৌন্দর্যে ভরপুর পারকি সমুদ্রসৈকতকে ঘিরে বিভিন্ন রহস্যময় গল্প শোনা যায়। সবচেয়ে বেশি যে বিষয়গুলো শোনা যায়, তা হলো সন্ধ্যার পর এ স্থানে মাঝে মধ্যে অদ্ভুত পদশব্দ, চিৎকার ও ভুতুড়ে আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়।

অনেক পর্যটক ও স্থানীয় ব্যক্তি কৌতূহলবশত অনুসরণ করে এসব শব্দের উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করেও কোনো উৎসই খুঁজে পাননি। অনেক সময় মনে হয় শব্দগুলো পানির ভেতর থেকে আসছে। আবার কখনো সেটি পার্শ্ববর্তী বন থেকে আসছে বলে মনে হয়। শব্দগুলো যেন কৌতূহলী মানুষকে পানিতে টেনে নিয়ে যেতে চায়!

jagonews24

এক পর্যটক দম্পতি সেখানে ঘুরতে গিয়ে জানান, বিচে সূর্যাস্তের পর সান্ধ্যকালীন ভ্রমণের সময় তাদের দু’জনেরই না-কি মনে হয়েছিল কেউ হয়তো অনুসরণ করছে তাদের। এ অনুভূতি মোটেলে ফেরার আগ পর্যন্ত হয়েছে। একই ঘটনার কথা অনেকেই বলেছেন। তবে কারো কোনো ক্ষতি হয়নি এখনো।

এ ছাড়াও সেখানকার স্থানীয় মাছ ধরার নৌকা নিয়ে সাগরে যাওয়া মাঝিদের মতে, সেদিকের গভীর সাগরে নৌকাসহ এক বুড়ো নাবিকের দেখা মেলে। কখনো একজনকে আবার কখনো বা একাধিক ব্যক্তিকে নৌকা নিয়ে গভীর সাগরে যেতে দেখা যায়।

নাবিকরা ধারণা করেন, সাইক্লোনের সময় নৌকা পাড়ে আনতে ব্যর্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করা নাবিকদের আত্মাই না-কি এখনো নৌকা নিয়ে মাঝ সাগরে পাড়ি জমায়। যদিও এসব ঘটনার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই, তবুও অনেক পর্যটক ও স্থানীয় মানুষের দাবি, তারা এগুলো দেখেছেন।

jagonews24

চট্টগ্রাম শহর থেকে পারকি সমুদ্রসৈকতের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো স্থান থেকে পতেঙ্গা ১৫ নম্বর জেটি দিয়ে কর্ণফুলী নদী পার হয়ে অটোরিকশা ভাড়া করে পারকি সমুদ্রসৈকতে যেতে পারবেন।

আবার চট্টগ্রাম থেকে বাসে আনোয়ারা বাসস্ট্যান্ড পৌঁছে সেখান থেকে সিএনজি বা অটোরিকশা নিয়ে পারকি সমুদ্রসৈকতে যেতে পারবেন। এ ছাড়াও চট্টগ্রাম শহর থেকে রেন্ট-এ-কার, ক্যাব, মাইক্রোবাস বা সিএনজি রিজার্ভ নিয়ে পারকি যেতে পারবেন।

চট্টগ্রাম শহরের স্টেশন রোড, জেএসসি মোড় এবং আগ্রাবাদ এলাকায় বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল আছে। পারকি সমুদ্রসৈকতে সাধারণ মানের কিছু খাবারের দোকান আছে। চট্টগ্রাম শহরে বাঙালি, চাইনিজ ও ফাস্ট ফুডসহ বিভিন্ন ধরনের খাবারের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে। বাজেটের মধ্যেই থাকতে ও খেতে পারবেন।

জেএমএস/এসইউ/এমকেএইচ

আরও পড়ুন