মোগল স্থাপত্যের নীরব সাক্ষী
বরগুনার বেতাগী উপজেলা সদর থেকে আঞ্চলিক মহাসড়ক ধরে উত্তর দিকে ১০ কিলোমিটার পথ অগ্রসর হলেই বিবিচিনি গ্রাম। এই গ্রামের উঁচু টিলার ওপর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে মোগল স্থাপত্যের নীরব সাক্ষী ঐতিহাসিক বিবিচিনি শাহি মসজিদ। সময় পেলে ঘুরে আসতে পারেন বিবিচিনি থেকে।
নির্মাতা
এক গম্বুজবিশিষ্ট বিবিচিনি শাহি মসজিদ একটি অন্যতম প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শন। কথিত আছে এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিল পরীরা। তাই এ মসজিদকে অনেকেই ‘পরীর মসজিদ’ বলে জানেন। তবে এই মসজিদ যিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং যার নাম এই মসজিদের নামের সঙ্গে গাঁথা, তিনি হলেন আধ্যাত্মিক সাধক হযরত শাহ নেয়ামত উল্লাহ।
নির্মাণের কারণ
১৬৫৯ খ্রিস্টাব্দে সুদূর পারস্য থেকে হযরত শাহ নেয়ামত উল্লাহ ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে প্রথমে দিল্লি আসেন। ওই সময় মোগল সম্রাট শাহজাহানের ছেলে শাহ সুজা বঙ্গদেশের সুবেদার এই মহান সাধকের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। কয়েকজন শিষ্যকে সঙ্গে নিয়ে এই সাধক বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি গ্রামে আস্তানা গাড়েন। পরে তার শিষ্য শাহ সুজার অনুরোধে এ গ্রামেই তিনি এক গম্বুজবিশিষ্ট শাহি মসজিদটি নির্মাণ করেন।
নামকরণ ও অবস্থান
নেয়ামত শাহর মেয়ে চিনিবিবির নামের সঙ্গে মিল রেখে এই গ্রামের নামকরণ হয় বিবিচিনি। আর বিবিচিনি গ্রামে অবস্থিত বলেই এর নামকরণ করা হয় বিবিচিনি শাহি মসজিদ। সমতল ভূমি থেকে এই মসজিদটির অবস্থান প্রায় ৪০ ফুট উঁচু টিলার ওপর। এর দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট, প্রস্থ ৪০ ফুট। চার পাশের দেয়াল ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি চওড়া। উত্তর ও দক্ষিণ পাশে তিনটি দরজা খিলানের সাহায্যে নির্মিত। মসজিদের ইটের রঙ ধূসর বর্ণের। এই ইটের দৈর্ঘ্য ১২ ইঞ্চি, প্রস্থ ১০ ইঞ্চি এবং চওড়া দুই ইঞ্চি। বর্তমান যুগের ইটের চেয়ে এর আকৃতি সম্পূর্ণ আলাদা।
কীভাবে যাওয়া যায়
ঢাকা থেকে প্রথমে বরগুনা যেতে হবে। পরে বরগুনা থেকে বাসযোগে বেতাগী যাওয়ার পর মোটরসাইকেল অথবা রিকশাযোগে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যেতে পারবেন। এমনকি বরিশাল থেকে বাসযোগে সরাসরি এই দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন।
এসইউ/এমএস