ভ্রমণকাহিনি লিখবেন যেভাবে
ভ্রমণ করতে সবারই ভালো লাগে। কেউ কেউ তা আবার লিখে রাখতে ভালোবাসেন। তবে কোথাও ঘুরতে গিয়ে তা লিপিবদ্ধ করে রাখতে কিছু নিয়ম জেনে রাখা জরুরি। কেননা সেখানে কীভাবে গেলেন, কী কী দেখলেন, সেখানকার সংস্কৃতি, জীবনযাপন সম্পর্কে জেনে নিতে হয়। সেসব কাহিনি আকারে তুলে ধরাই ভ্রমণকাহিনির মূল লক্ষ্য।
তাই ভ্রমণকাহিনি লেখার আগে কিছু নিয়ম জানা একজন ভ্রমণ লেখকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আসুন এবার ভ্রমণকাহিনি লেখার নিয়মগুলো জেনে নেই-
লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি: ভ্রমণকাহিনি লেখার আগে পর্যটকের দৃষ্টিভঙ্গি খুবই জরুরি। কেননা একই স্থানের ভ্রমণকাহিনি সবার দৃষ্টিতে একই রকম না-ও হতে পারে। যেহেতু একেকজনের দৃষ্টিভঙ্গি একেকরকম। আবার একেকজনের গল্প বলার ধরনও একেকরকম। ভ্রমণকাহিনিনির্ভর করবে কে লিখছেন তার ওপর।
শুরুটা হোক চমকপ্রদ: লেখাটি যেহেতু পাঠকের জন্য, তাই পাঠকের আগ্রহের কথা মাথায় রেখেই লেখাটি শুরু করুন। পাঠক যেন প্রথমেই কিছু অংশ পড়ে চলে না যায়। সে জন্য ভ্রমণের বিশেষ অংশ বা চমকপ্রদ অংশটুকু শুরুতেই বলে রাখুন। এতে পাঠক ভ্রমণকাহিনিটি পড়ার প্রতি আগ্রহী হবেন।
ধারাবাহিকতা রাখুন: যেকোনো লেখার ক্ষেত্রেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি। এলোমেলো কথা বা কাহিনি দিয়ে পাঠককে আকৃষ্ট করা যায় না। যতটা সম্ভব লেখাটি গুছিয়ে উপস্থাপনের চেষ্টা করবেন। অযথা লেখা বাড়ানোর কোনো দরকার নেই। পাঠককে বোঝাতে যতটুকু দরকার; ততটুকুই পরিবেশন করুন।
ভাষা হবে প্রাঞ্জল: রচনার প্রধান গুণ হচ্ছে তার প্রাঞ্জল ভাষা। আপনি যতটা সহজ করে লিখবেন; পাঠক তত সহজেই লেখাটি গ্রহণ করতে পারবেন। তাই যে ভাষায়ই লিখুন না কেন, লেখার সময় অবশ্যই ভাষার প্রতি খেয়াল রাখবেন। যতদূর পারা যায় আঞ্চলিক ভাষা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। এ ক্ষেত্রে বিকল্প শব্দ খুঁজে নিতে পারেন।
গুরুত্ব বোঝাতে হবে: মানুষ কেন নিজের টাকা খরচ করে স্থানটি ভ্রমণ করবে, তা আপনাকে বোঝাতে হবে। লেখা থেকে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বাদ দিতে হবে। পাঠক উপকৃত হবেন না বা আগ্রহ হারাবেন এমন প্রসঙ্গ লেখা না আনাই ভালো। কেননা ভ্রমণে গেলেই যে সব কথা লিখতে হবে, এমন নয়। আবার সব ভ্রমণ যে আনন্দময় হবে, সেটাও ঠিক নয়।
লেখায় রস আনুন: সাহিত্যের নন্দনতত্ত্বে রসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ভ্রমণকাহিনির ক্ষেত্রে ‘অদ্ভুত রস’ ব্যবহার করতে পারেন। আরেকটু সহজভাবে বলতে গেলে, আমরা কম-বেশি রসাত্মক লেখা বা কথা পছন্দ করি। ভ্রমণকাহিনি বেরসিক হলে পাঠক পড়ে মজা পাবেন না। ফলে আপনার লেখা পড়েও ভ্রমণে আগ্রহ দেখাবেন না।
প্যারা হবে ছোট: ভ্রমণকাহিনিকে সিরিয়াস আকারে উপস্থাপন করবেন না। অন্যান্য প্রবন্ধ-নিবন্ধের মতো বিশাল আকারের প্যারা না রাখাই ভালো। যথাসম্ভব ছোট ছোট প্যারা রাখার চেষ্টা করবেন। এমনকি ছোট ছোট টাইটেলও ব্যবহার করতে পারেন। এতে পাঠক আপনার লেখা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাবেন। পাশাপাশি পড়তেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন।
বাস্তবতা তুলে ধরুন: পাহাড়-পর্বত, নদী-ঝরনা, দর্শনীয় স্থানসহ যেকোনো বিষয়ে ভ্রমণকাহিনি লিখতে গেলে বিষয়বস্তুর বাস্তবতা তুলে ধরার চেষ্টা করবেন। এমনভাবে লিখুন যাতে পাঠক লেখা পড়ে বাস্তব চিত্র অনুধাবন করতে পারেন। পারলে লেখায় একাধিক ছবি এবং ভিডিও সংযুক্ত করেন। ফলে লেখা পড়ার পাশাপাশি ছবি ও ভিডিও দেখে কাহিনি সম্পর্কে বাস্তব ধারণা পেয়ে যাবেন।
প্রকাশের সুযোগ: ভ্রমণের পাশাপাশি লিখে ফেলুন আপনার ভ্রমণকাহিনি। পাঠিয়ে দিন জাগো নিউজে। কেননা আপনিও লিখতে পারেন জাগো নিউজে। লেখা তৈরি থাকলে আজই পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়। লেখা মনোনীত হলে তা যত্নসহকারে প্রকাশ করা হবে।
এসইউ/এমকেএইচ