রোমাঞ্চকর ভ্রমণে সুবলং ঝরনা
রোমাঞ্চকর ভ্রমণে আনন্দের ফোয়ারা রাঙামাটির সুবলং ঝরনা। অবসরের বিনোদনে সেখানে প্রতিদিন পদচারণা ঘটে প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসুর। প্রকৃতির নৈসর্গিক আধার উপভোগ করতে ঘুরে আসতে পারেন সুবলং ঝরনা। ঝরনা ছাড়াও দেখতে পাবেন কাপ্তাই লেক আর আকাশ ছোঁয়া ঘন সবুজ পাহাড়ের সমাবেশ।
অবস্থান
সুবলং ঝরনার অবস্থান রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়নের চিলের ধাক নামক দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়। পর্যটন শহর রাঙামাটি থেকে ১৫-১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বরকলের সুবলং এবং সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা ও বালুখালী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ওই পাহাড়ি এলাকাটি গড়ে উঠেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলরাশি কাপ্তাই হ্রদ ঘেঁষে।
বৈশিষ্ট্য
সারিবদ্ধ পাহাড়ের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হয় সুবলং ঝরনা। অনেক উঁচু পাহাড় থেকে অনবরত নামে ঝরনাধারা। পানি গড়িয়ে যায় সরাসরি কাপ্তাই হ্রদে- যা সকলের মন কাড়ে। এক সময় এটি ছিল সবুজ পাহাড় আর ঘন অরণ্যে ঘেরা। পাশ দিয়ে শোনা যেতো কেবল ঝরনার কলতান। আর এখন সুবলং ঝরনা ঘিরে গড়ে উঠেছে একটি দর্শনীয় স্পট। নদীপথে আসা-যাওয়ার সময় সবার নজর কাড়ে স্পটটি। প্রায় দুই দশক আগে ঝরনাটি আবিষ্কার করেছিলেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। পরে পর্যটকদের আকর্ষণ দেখে সেটিকে সংস্কার করে বরকল উপজেলা প্রশাসন। সেটিকে রূপায়িত করা হয় পর্যটন স্পটে।
উপকরণ
ঝরনাধারার ওপর দিয়ে নির্মিত হয়েছে একটি সেতু। এছাড়া পর্যটকদের সুবিধার জন্য সেখানে কয়েকটি অবকাঠামো নির্মাণ করে টিকিট কাউন্টার, বিপণী বিতান, বিশ্রামাগার, ওয়াশ রুম করে দেওয়া হয়েছে। ঝরনাধারার চারদিক ঘিরে রয়েছে সবুজ পাহাড়ের সমারোহ। আশেপাশে রয়েছে আরও অনেক ছোট ছোট ঝরনা। গিরিনির্ঝর বড় ঝরনাধারাসহ কাছাকাছি রয়েছে ৮টি ঝরনাধারার সমাবেশ। তার মধ্যে মূল ঝরনাধারাটি প্রায় ৩শ’ ফুট উচ্চতা হতে প্রবাহিত।
প্রবেশ মূল্য
সুবলং ঝরনা স্পটে প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা।
কীভাবে যাবেন
রাঙামাটি শহর থেকে ইঞ্জিনবোট বা স্পীডবোট নিয়ে যেতে হবে। তবে লোকাল কোনো নৌ-যান সার্ভিস নেই। যেকোনো নৌ-পরিবহন নিয়ে যেতে হবে রিজার্ভ করে। ইঞ্জিনবোট নিয়ে যাওয়া-আসায় সময় লাগে প্রায় ৩ ঘণ্টা। রিজার্ভ বোট ভাড়া করলে লাগে এক-দেড় হাজার টাকা। আর স্পীডবোট নিয়ে গেলে আসা-যাওয়ায় সময় লাগে পৌনে এক ঘণ্টার মতো। ভাড়া লাগে ৩-৪ হাজার টাকা।
কোথায় থাকবেন
শহরে রয়েছে পর্যটন মোটেলসহ অনেকগুলো আবাসিক হোটেল। সর্বনিম্ন রুম ভাড়া ২শ’ এবং সর্বোচ্চ ২-৩ হাজার টাকা।
খাবার
সুবলং ঝরনা স্পটে লাঞ্চের কোনো ব্যবস্থা নেই। যাওয়া-আসার পথে শহর থেকে অদূরে পেদাটিংটিং ও চাংপাং নামে দুটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। ইচ্ছা করলে ওই দুটির যেকোনো রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ সেরে নেওয়া যেতে পারে। দুটিতেই আদিবাসীদের নিজস্ব সংস্কৃতির রান্না করা খাবার পাওয়া যায়। এসব খাবারের মধ্যে ব্যাম্বো চিকেন, ফিস দারুণ স্বাদের। সেগুলো রান্না করা হয় বাঁশের চোঙায় ভরে আগুনে ছেঁকে।
এসইউ/এমএস