ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ভ্রমণ

অবহেলায় পড়ে আছে কাশিপুরের জমিদার বাড়ি

আবু আফজাল সালেহ | প্রকাশিত: ০৫:২৭ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০২০

এখানে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কালজয়ী ‘মহেশ’ গল্পের প্লট নির্মাণ করেছিলেন। বিখ্যাত দুই চরিত্র ‘গফুর’ ও ‘আমিনা’ এখানেই সৃষ্টি হয়েছিল। যেখানে নির্যাতিত মুসিলম পরিবারের কথা উঠে এসেছে। গল্পে ‘কাশিপুর’ নামে একটি গ্রাম উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে মূলত জমিদার বাড়ি। জমিদার ছিলেন বিনয় কুমার চট্টোপাধ্যায়। তিনি শরৎচন্দ্রের মামা। সে কারণেই এ বাড়িতে যাতায়াত ছিল তাঁর।

jagonews24

জমিদার বাড়ি: চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলায় অবস্থিত জমিদার বাড়িটি। সেখানে ভ্রমণে বের হলাম একদিন। অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে। ভাবতেই কেমন রোমাঞ্চ লাগছে! দর্শনা থেকে এসব ভাবতে ভাবতেই পৌঁছে গেলাম কাশিপুর। গিয়ে হতাশ হলাম। জমিদার বাড়িটি চরম অবহেলায় পড়ে আছে। লাল দেয়াল ধূসর হয়ে গেছে। দেখে বোঝা যায়, এখানে আভিজাত্য ছিল একদিন। লোকমুখে শোনা যায়, এখানকার জমিদার বিনয় কুমার চট্টোপাধ্যায় খুবই অত্যাচারী ছিলেন। শরৎচন্দ্র এসব দেখে মর্মাহত হয়েছিলেন। তাই মামাকে কেন্দ্র করেই মহেশ গল্প লেখা শুরু করেন।

ইতিহাস: জমিদার বাড়িটি ১৮৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারত বিভাগের সময় এটি এদেশের লোকের সাথে বিনিময় করা হয়। জমিদারের পরিবার ভারতে চলে যান। ‘জমিদার বিনয় ভারতের ১২০০ বিঘা জমির বিনিময়ে এটি ছেড়ে দেন’ বলে এলাকাবাসী জানান। বাড়িতে জমিদারের ব্যবহৃত খাট, সোফা, টেবিলসহ কিছু জিনিসপত্র রয়েছে।

jagonews24

বিনিময়সূত্রে অন্য পরিবার ব্যবহার করছে জমি, বাড়ি বা সম্পদ। সেরকমই এক সদস্য হাবিল। আন্দুলবাড়িয়া বাজারে ব্যবসা আছে তার। তিনি বললেন, বাড়ির বর্তমান মালিকরা ঢাকায় থাকেন। বেশিরভাগ অংশ পরিত্যক্ত। আশেপাশে নতুন স্থাপনা তৈরি হয়েছে। অবহেলা আর অনাদরে পড়ে আছে জমিদার বাড়ি। সরকারিভাবেও কোনো ব্যবস্থা হয়নি।

অন্য দর্শনীয় স্পট: ৮-১০ কিলোমিটারের মধ্যেই দেশের বড় চিনিকল কেরু অ্যান্ড কোম্পানি ও ডিস্টিলারি কারখানা। এখানকার ফরেন লিকারের ইংল্যান্ডে চাহিদা খুব। দেশের প্রথম রেল লাইন দর্শনা থেকে শুরু। ১৮৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ঐতিহাসিক এ রেলপথ দেখতে পারবেন। স্থলবন্দর ও রেলবন্দর পাশাপাশি। স্থলপথে দু’দেশের প্রচুর মানুষ এপার-ওপার হয়ে থাকেন। এগুলো একবেলাতেই দেখতে পারবেন। তারপর রাতের বাস বা ট্রেনে গন্তব্যে ফিরে যেতে পারবেন।

jagonews24

কীভাবে যাবেন: ঢাকার গাবতলী থেকে দর্শনাগামী বাসে জীবননগর বা সন্তোষপুর মোড়ে নামতে হবে। ট্রেনে গেলে দর্শনা স্টেশনে নামতে হবে। এরপর অটো, বাস, সিএনজি যোগে সন্তোষপুর মোড়ে। এরপর অটোরিকশায় দেহাটি হয়ে কাশিপুর জমিদার বাড়ি। জমিদার বাড়ি বললেই অটোচালক পৌঁছে দেবেন। ঢাকা, খুলনা বা উত্তরবঙ্গ থেকে ট্রেনে দর্শনায় নামা যাবে।

থাকা-খাওয়া: কাশিপুর একটি গ্রাম। সেখান থেকে দর্শনা বা জীবননগর ৮-১০ কিলোমিটার দূরে। এ দুই জায়গায় খাওয়া যাবে। মাঝারিমানের আবাসিক সুবিধা পাবেন। একটু দূরের চুয়াডাঙ্গা বা যশোরে সব সুবিধাই পাবেন।

jagonews24

লেখক: কবি, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।

এসইউ/এএ/এমকেএইচ

আরও পড়ুন