ইস্তাম্বুলের সরু রাস্তায়ও মিনিটে মিনিটে চলে মেট্রোরেল
পুরান ঢাকার অলিগলির মতো অপ্রশস্ত অপেক্ষাকৃত সরু রাস্তাঘাট তুরস্কের অন্যতম প্রধান শহর ইস্তাম্বুলে। দু’পাশে দোকানপাট। রাস্তায় একসঙ্গে দু’চারটি ভারী যানবাহন চলাচল করা দায়। কিন্তু এ অপ্রশস্ত রাস্তার মাঝেই তৈরি হয়েছে পাশাপাশি দু’টো মেট্রোরেল লাইন।
কয়েক মিনিটের বিরতিতেই ঝিক ঝিক শব্দে হুইসেল বাজিয়ে ছুটে চলছে মেট্রোরেল। স্টেশন থেকে টিকেট কিনে যাত্রীরা উঠে পড়ছেন রেলে। যখন রাস্তায় রেলগাড়ি থাকছে না তখন রাস্তায় প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহন ও লোকজন যাতায়াত করছে। এ ছাড়া দু’পাশের ফুটপাথেও নির্বিঘ্নে যাতায়াত করছেন পথচারীরা।
টার্কিশ এয়ারলাইন্সের আমন্ত্রণে সম্প্রতি তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহর পরিদর্শনকালে এ দৃশ্য চোখে পড়ে। সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে যে ছোটখাট অলিগলিকেও যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তোলা সম্ভব তা এখানে এসে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, ইস্তাম্বুল শহরের বিভিন্ন ছোট বড় সড়কে অন্যান্য যানবাহনের পাশাপাশি কোথাও মেট্রোরেলের জন্য পৃথক সড়ক আবার কোথাও শহরের রাস্তার মাঝখান দিয়ে মেট্রোরেল যাতায়াত করছে। শহরে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য নিরাপত্তা প্রহরীও চোখে পড়েনি।
ইস্তাম্বুল শহরেও রয়েছে রাজধানী ঢাকার মতো যানজট। কিছু কিছু সময় সাপের লেজের মতো এঁকেবেঁকে যানবাহনের সারি বহুদূর পর্যন্ত আটকে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের রাস্তাঘাটের মতো চালকরা হর্ন বাজান না। নিয়মতান্ত্রিকভাবে সবাই লাইনের পেছনে পেছনে চলাফেরা করেন। তিনদিন অবস্থানকালে ইস্তাম্বুল শহরে তিনবারও হর্নের শব্দ কানে আসেনি। সেখানকার রাস্তাঘাটেও হকার রয়েছেন। তবে হকাররা কেউ উচ্চস্বরে চিৎকার করে পণ্য বিক্রি করেন না। ব্যস্ততম যানজটের রাস্তার মাঝখানে তারা দাঁড়িয়ে থাকেন। যার প্রয়োজন ইশারা করলে তারা খাবার কিংবা পানীয় পৌঁছে দেন।
টার্কিশ এয়ারলাইন্সের জেনারেল ম্যানেজার (বাংলাদেশ) ইমরাহ কারকা এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলছিলেন, ‘সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে সরু রাস্তাঘাটেও সব ধরনের যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে গড়ে তোলা সম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে যানবাহন চলাচল দেখলে রীতিমতো ভয় লাগে। কোন গাড়ি কোন লাইনে চলছে, হুট করে ডানে বায়ে চলে আসা, সাইড দেয়ার জন্য ক্রমাগত হর্ন বাজানো ভয়ঙ্কর ব্যাপার।’
ইমরাহ আরও বলেন, ‘মেট্রোরেল চালু হলে কিছুটা যানজট কমবে। তবে রাস্তাঘাট যানবাহন ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে সরকারের পাশাপাশি মানুষকে আরও বেশি সচেতন হওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।’
এমইউ/এনডিএস/এমকেএইচ