ভ্রমণের অন্যরকম স্মৃতি
ভ্রমণ বরাবরই স্মৃতিময়। তবে কোনো কোনো ভ্রমণের স্মৃতি একেবারেই আলাদা। পরিকল্পনাহীন অজ্ঞাত ভ্রমণের মজা আরো বেশি ব্যতিক্রম। তেমনই এক ভ্রমণের অন্যরকম স্মৃতি সম্পর্কে লিখেছেন মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদার
সেদিন ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি’র বিশ্বকলা কেন্দ্রের সমাপনী ক্লাস। এক সপ্তাহ পর আমাদের পরীক্ষা। এরই মধ্যে হঠাৎ শিক্ষক ঘোষণা দিলেন আগামী সপ্তাহে আমাদের মাছ ধরার একটি প্রতিযোগিতায় নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে। সাথে থাকবে ভ্রমণ ও আনন্দ।
ঠিক এক সপ্তাহ পর নির্ধারিত দিনে আমরা ঊষাকালেই উপস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে। কারণ আমরা এখান থেকেই রওয়ানা দেব। দিনটি ছিলো শনিবার। একে একে সবাই আসতে থাকেন। কিছুক্ষণের মধ্যে নীরব টিএসসি মুখরিত হয় মিলনমেলায়।
সকালের নাস্তা সেরে আমরা গাড়িতে উঠি। তখনো জানি না কোথায় যাচ্ছি? বাসেও চলছে সীমাহীন আনন্দ। একপর্যায়ে গাড়ি থামলো রাজধানীর কদমতলী থানার একটি পরিত্যক্ত বাড়ির সামনে। ধরে নিলাম সেটিই আমাদের গন্তব্য। আসলে তা-ই হলো। বাইরে দেখতে একটু বিশ্রি হলেও ভেতরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে মনটা জুড়িয়ে গেল।
পরিত্যক্ত একটি কারখানা। হরেকরকম ফলদ, বনজ ও ওষুধি গাছের সমাহার। দু’টি ছোট ছোট পুকুর। সেখানেই বড়শি দিয়ে মাছধরা শুরু। কেউ কেউ মাছ ধরতে পারলেও অনেকে পারেননি। তবুও আনন্দের কোনো কমতি ছিলো না। পুরস্কার পেলেন সবচেয়ে বেশি মাছ শিকারকারী, সবচেয়ে কম মাছ শিকারকারী ও জীবনে প্রথম মাছ শিকারকারী। বাকিরা পেলেন সান্ত্বনা পুরস্কার।
সেদিনের আনন্দ ছিলো জীবনের অন্যান্য ভ্রমণের আনন্দের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। দুপুরের খাবারের পর কিছুক্ষণ চললো আনন্দ আড্ডা। এবার ফেরার পালা। শুরু হলো বাসের ভেতরের আনন্দ পর্ব। আনন্দমুখর পরিবেশের মধ্যদিয়ে একপর্যায়ে পৌঁছে গেলাম টিএসসিতে। জীবনের ভ্রমণস্মৃতিতে যুক্ত হলো একটি নতুন লগ্ন।
লেখক : কবি ও সাংবাদিক।
এসইউ/আরআইপি