পর্যটকদের নতুন আকর্ষণ লোভাছড়া
ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নানা ব্যস্ততার কারণে একটু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করার সময় পাচ্ছেন না। হঠাৎ করে একদিন বের করে নিলেন সময়। এবার একটু কোথাও ঘুরে আসা যাক। এখন নতুন কোন জায়গার খোঁজে? পাহাড়ের কোলজুড়ে সবুজ গাছপালার ঘন রঙে আচ্ছাদিত হয়ে আছে লোভাছড়া চা-বাগান। এর চারিদিকে সবুজের সমারোহ। সীমান্তের ওপারে মেঘালয়ের পাহাড়গুলো হাতছানি দিয়ে ডাকছে। আপনি তাই লোভাছড়া’র প্রেমে মুগ্ধ হবেন!
অবস্থান
সিলেট শহর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ ইউনিয়নের লোভাছড়া নদীর পাশেই ব্রিটিশ আমলে প্রায় ১৮৩৯ একর জমির উপর গড়ে ওঠে লোভাছড়া চা-বাগান। বাগানের উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য এবং পশ্চিমে বাংলাদেশের একটি পিকনিক স্পট ও লালাখাল চা-বাগান।
যা দেখবেন
দর্শনীয় স্থানের মধ্যে চা বাগান, প্রাকৃতিক লেক ও ঝরনা, ঝুলন্তসেতু, মীরাপিং শাহের মাজার, মোগল রাজা-রানীর পুরাকীর্তি, প্রাচীন দীঘি, পাথর কোয়ারী ও বন বিভাগের সামাজিক বনায়ন ঘুরতে ঘুরতে কখন যে একটা দিন পেরিয়ে যাবে তা বুঝে উঠতে পারবেন না। এখানকার ঝরনার ছল ছল শব্দ শুনে পর্যটকদের মনে আনন্দে নেচে ওঠে।
আবাসিক সুবিধা
লোভাছড়ায় পর্যটকের জন্য থাকার কোনো সু-ব্যবস্থা না থাকলেও বাগান কর্তৃপক্ষের জন্য রয়েছে ৪টি বাংলো। আপনি লোভাছড়ায় রাত কাটাতে পারবেন না। এজন্য দিনে দিনেই ফিরতে হবে। থাকতে হবে সিলেট শহরে।
কোথায় খাবেন
খাওয়ার জন্য কানাইঘাট বাজারে তেমন উন্নত মানের কোনো রেস্টুরেন্ট নেই। সেক্ষেত্রে লোভাছড়া যাওয়ার সময় সিলেট শহর থেকে খাবার নিয়ে যেতে হবে।
সময় নির্বাচন
চাইলে যেকোনো মৌসুমে আপনি লোভাছাড়া ঘুরতে পারেন। তবে সবুজময় লোভাছড়া বর্ষায় এক অপূর্ব রূপ ধারণ করে। বৃষ্টির দিনে লোভাছড়ার সবুজ বুকে ঝাঁপ দেয়া কিংবা শীতে এপাশ-ওপাশ কুয়াশাময় পাহাড় আর বাগানে রোদের খেলা যেকোনো পর্যটকের হৃদয় জয় করবে।
অবশিষ্ট
লোভাছড়ার পাশেই রয়েছে সুরমা, লোভা ও বরাক নদীর মিলনস্থল। তিনটি নদীর মিলন এখানে ব-দ্বীপের সৃষ্টি করেছে। নদীগুলোর মিলনস্থলে নদীর এক পাশের পানি খুবই স্বচ্ছ এবং অপর পাশের পানি খুবই ঘোলা। একই নদীতে দুই ধরনের পানি দেখে অনেকেই পুলকিত হন।
যেভাবে যাবেন
প্রথমে আপনাকে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সিলেট আসতে হবে। এরপর লোভাছড়া যেতে হলে সিলেট শহরের কদমতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রথমে কানাইঘাট যেতে হবে। ভাড়া নেবে জনপ্রতি ৪৫-৫০ টাকা। তারপর কানাইঘাট বাজার থেকে নৌকাঘাটে গিয়ে সুরমা নদীর পথ ধরে লোভাছড়ার উদ্দেশ্যে যেতে হবে নৌকায় করে। জনপ্রতি ৩০ টাকা এবং রিজার্ভ নিলে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। কানাইঘাট উপজেলা সদর থেকে লোভাছড়ার দূরত্ব মাত্র ৯ কিলোমিটার। উপজেলা সদর থেকে সড়ক ও নদী পথে লোভাছড়ায় যাওয়া যায়।
প্রয়োজনে যোগাযোগ
ইন্টেলিজেন্ট ট্যুরিস্ট এইড (আইটিএ), খান প্লাজা, ৪র্থ তলা, ৩২/১, মিরপুর রোড (টিচার্স ট্রেনিং কলেজের ছাত্রাবাসের বিপরীতে), ঢাকা ১২০৫। আলাপ: ০১৮৪০-৪৭৭৯৭৮, ০১৮৪০-৪৭৭৭০৯, ০১৮৪০-৪৭৭৯৯০।
এসইউ/এমএস