ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ভ্রমণ

দুবাই প্রবাসীদের মুশকিল আসানে ‘জাহেদ ভাই’

ভ্রমণ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২:১২ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

রুমেল আহসান, সাংবাদিক

দেশটির নাম সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে বিশ্বের সব দেশের মানুষের কাছে এটি দুবাই নামেই পরিচিত। বিলাসবহুল জীবনযাপন, চোখ ধাঁধানো রঙিন আলোকরশ্মি, আকাশচুম্বি অট্টালিকা, বিলাসবহুল হোটেল, কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জসহ ব্যবসায়িক কারণে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য পছন্দের শীর্ষে আছে দুবাই।

গত বছরের ১৭ অক্টোবর গিয়েছিলাম ‘চাকচিক্যের নগরী দুবাই’ ভ্রমণে। ১৬ দিনের দুবাই ট্যুরে দেখেছি নানা বিস্ময়। পরিচয় হয়েছে প্রবাসী অনেকের সঙ্গেই। উঠেছিলাম শারজাহ প্রদেশের খোরফাক্কানে আল বিদিয়ায় আমার ভাইয়ের বাসায়। সেখানেই একদিন সন্ধ্যায় চা চক্রে প্রবাসী এক ভাইয়ের সমস্যার কথা ওঠে।

তিনি কথা প্রসঙ্গে বলে ফেললেন, এক মানবতার ফেরিওয়ালার কথা। আমারও আগ্রহ বাড়লো ওই ব্যক্তি সম্পর্কে জানার। প্রবাসে ব্যস্ত জীবনে প্রতিটি মুহূর্ত যেন রুটিনবাঁধা। প্রতিটি মানুষ জীবন আর জীবিকার তাগিদে প্রতিনিয়ত লড়াই করে যাচ্ছে স্ত্রী-সন্তান আর পরিবারের সদস্যদের জন্য।

আত্মকেন্দ্রিক জীবন ব্যবস্থায় নিজের পরিবার-পরিজন ছাড়াও অনেকে কমিউনিটির বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করছেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন কমিউনিটির অতিপরিচিত মুখ এম জাহেদ হাসান। কমিউনিটিতে যিনি ‘জাহেদ ভাই’ হিসেবে পরিচিত।

দীর্ঘ তিন দশক ধরে নীরবে-নিভৃতে দুবাই, শারজাহ, ফুজাইরা, খোরফাক্কান, আল বিদিয়া, আল দিব্বা এলাকা সহ সাতটি প্রদেশের বাংলাদেশি কমিউনিটির বিপদগ্রস্থ মানুষের মুশকিল আহসানে আর্বিভূত হয়েছেন একজন জাহেদ।

আরও পড়ুন

বিপদগ্রস্ত যে কোনো ব্যক্তি বা পরিবার মুঠোফোনে কল দিলেই বিপদগ্রস্থদের ঠিকানায় হাসিমুখে ছুটে যান সবার প্রিয় জাহেদ ভাই। সাধ্যমতো সহযোগিতা করে আবার অন্য বিপদগ্রস্থদের ডাকে সাড়া দিয়ে ছুটে যান অন্যখানে। এভাবে কমিউনিটিতে ছড়িয়ে পড়েছে জাহেদ ভাইয়ের মানবতার গল্প। বিভিন্ন প্রবাসী সংগঠনের সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি।

প্রথমিক বিপদগ্রস্থ মানুষদের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের চেম্বার, গুরুতর অসুস্থতাজনিত কারণে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া, বিভিন্ন কাজের জন্য জব এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া তার কাজ। কোনো প্রবাসী আরব আমিরাতে মারা গেলে তার মরদেহ দেশে পাঠানোর জন্য সাহায্য সহযোগিতা করেন তিনি। কারো চাকরি না থাকলে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির ব্যবস্থাও করে দেন এম জাহেদ হাসান।

এ পর্যন্ত প্রায় ৩২৫ জন প্রবাসীর মরদেহ বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে দেশে পাঠাতে সহযোগিতা করেছেন জাহেদ। ১৫৬ জন অসুস্থ প্রবাসীকে দেশে পাঠিয়েছেন কফিলের (স্পন্সর) কাছ থেকে সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে। প্রচুর বেকার প্রবাসীকে যোগ্যতা অনুযায়ী নিঃস্বার্থভাবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

জাহেদ হাসানের এই মানবিক কর্মকাণ্ড কমিউনিটির মানুষের কাছে প্রশংসা কুড়াচ্ছে। মানবিক এই কর্মকাণ্ড শারজাহ, ফুজাইরা শহর সহ সাতটি প্রদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশি কমিউনিটির বিপদগ্রস্তদের মাঝে তার এই মানবিক সেবা অব্যাহত আছে।

বাংলাদেশি কমিউনিটিতে ‘জাহেদ ভাই’ হিসেবে খ্যাত এম জাহিদ হাসানের বাড়ি চট্টগ্রাম মহানগরের বন্দর থানার দক্ষিণ মধ্যেম হালি ৩৮নং ওয়ার্ডের ধুম পাড়া গ্রামে। ১৯৯২ সালে আরব আমিরাত যান তিনি। আরব আমিরাতের ফুজাইরাহ এলাকায় তিনযুগ ধরে বসবাস করছেন। দীর্ঘ তিন দশক ধরে কমিউনিটির বিপদগ্রস্থ মানুষের কল্যাণে নীরবে কাজ করে যাচ্ছেন এম জাহেদ হাসান।

একদিন মানবতার ফেরিওয়ালা এই ব্যক্তি এম জাহেদ হাসানের সঙ্গে দেখা হলো। একটি ক্যাফেতে বসে তিনি (জাহেদ) আর আমি কফি খাচ্ছিলাম। প্রবাসী ভাইয়েরা তাকে দেখা মাত্র সালাম দিচ্ছেন, খোঁজখবর নিচ্ছেন। অনেকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তার উপকারের কথা স্বীকার করছেন। কথা বলে জাহেদ ভাইয়ের সঙ্গে একটি আনন্দময় মূহুর্ত পার করলাম।

জেএমএস/জেআইএম

আরও পড়ুন