নোংরা পানি পার হয়েই পর্যটকরা যান মনিপুরী পাড়ায়
জীবন পাল
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ভ্রমণে নীলকণ্ঠ চা কেবিনে কিংবা মনিপুরী পাড়ায় ঢুঁ মারেননি এমন পর্যটক হয়তো একটিও খুঁজে পাওয়া যাবে না। আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত পেয়েছে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার রামনগর মনিপুরী পাড়া। অথচ পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় এই এলাকার রাস্তার প্রবেশ মুখেই ময়লা ও নোংরা পানি জমে থাকে বেশিরভাগ সময়। বৃষ্টি হলে তো রীতিমতো ডোবায় পরিণত হয়।
নোংরা পানি পার হয়েই এলাকাবাসীসহ আগত পর্যটকরা এলাকার ভেতরে প্রবেশ করেন। এই দৃশ্য শুধু এলাকাবাসীর কাছে নয়, পর্যটকদের কাছেও অপ্রত্যাশিত। শুধু মনিপুরী পল্লী নয়, এই এলাকার প্রবেশ মুখেই আছে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় নীলকণ্ঠ চা কেবিন। যেখানে পাওয়া যায় সাতরঙা চা।
শুধু যে পর্যটকরায় এখানে ভিড় করেন তা নয়, স্থানীয়রাও এ স্থানে অবসর কাটান। আর সেখানেই কি না এই বেহাল দশা। এ কারণে অনেক পর্যটকই মন্তব্য করেন, এলাকাবাসীর একতা না থাকায় এর সমাধান হচ্ছে না। এছাড়া এর আশপাশে ময়লা, নোংরা পানি জমে থাকার ফলে শিক্ষার্থীদেরকেও স্কুলে যাওয়া আসার পথে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে।
এমনকি নারীরাও হেঁটে চলাফেরার ক্ষেত্রে পড়ছেন বিড়ম্বনায়। এদিকে জমে থাকা পানির কারণে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে নতুন তৈরি এ রাস্তা। এলাকার আভ্যন্তরীণ কোন্দল ও ক্ষমতার দাপটে এ সমস্যার সমাধান হচ্ছে না বলে মন্তব্য এলাকাবাসীর অনেকের।
আরও পড়ুন
অথচ এটি এমন এক এলাকার প্রবেশপথ যেখানে ঘুরে গেছেন ৩৫ দেশের ৫৩ জন রাষ্ট্রদূত। ঢাকার বাইরে বাংলাদেশের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখাতে কূটনীতিকদের নিয়ে চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলে এসেছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ২০১৯ সালের ৫ এপ্রিল (শুক্রবার) বিকেলে উপজেলার রামনগর মনিপুরী পাড়ায় ঘুরতে এসেছিলেন রাষ্ট্রদূতরা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিমন্ত্রণে শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসা রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, সিঙ্গাপুর, ব্রাজিল, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মরক্কো, নেপাল, ভুটান, কুয়েত, তুরস্ক, ওমান, ফিলিপাইন, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানসহ ৩৫টি দেশের কূটনীতিক। এছাড়া উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইউএনডিপি, সার্ক, বিমস্টেক, ইউএনএফপিএ, ইউসিকেইএফ বিডি, ইউএনএইচসিআর, ইউএসডিএসএস কর্মকর্তারাও এসেছিলেন।
এ সমস্যার সমাধানে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ না করে একে অন্যকে দোষারোপ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয় অনেক এলাকাবাসীই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এলাকার প্রবেশমুখের এ সমস্যার দ্রুত সমাধান করার আহ্বান আগত পর্যটকসহ সবার। ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ এ দৃশ্য পরিবর্তনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশাবাদী এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে ওই এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান রনেন্দ্র প্রসাদ বর্ধন জানান, এমন দৃশ্য আসলেই কাম্য নয়। বিষয়টি আমাকে অবগত করা হয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে এলাকার মানুষের সঙ্গে বসে রাস্তার দু’পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে এর চিরস্থায়ী সমাধান করা যায় কি না সে বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জেএমএস/এএসএম