ব্যাঙ্গালুরু ভ্রমণে ঘুরে আসতে ভুলবেন না যে ৫ স্পট
বেঙ্গালুরু ভারতের সিলিকন ভ্যালি নামে পরিচিত। ভারত ভ্রমণে গিয়ে অনেকেই ঘুরে আসেন এই সিলিকন ভ্যালি থেকে। বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশি পর্যটকদেরও আনাগোনা বেড়েছে সেখানে। ভারতের কর্ণাটকের প্রাণবন্ত এক রাজধানী হলো বেঙ্গালুরু।
আইটি শিল্প ও প্রাণবন্ত সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত ব্যাঙ্গালুরু। এটি দক্ষিণ ভারতের সবচেয়ে মন্ত্রমুগ্ধকর গন্তব্যগুলোর প্রবেশদ্বার হিসেবেও পরিচিত। সেখানে আছে আকর্ষণীয় সব দর্শনীয় স্থান। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক ব্যাঙ্গালুরু ভ্রমণে কোন ৫ স্পট ঘরে আসতে ভুলবেন না।
নন্দী পাহাড়
বেঙ্গালুরু থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নন্দী হিলস একটি জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। এই সবুজ পার্বত্য এলাকার ঘূর্ণায়মান রাস্তাগুলো উপর থেকে দেখতে দারুণ আকর্ষণীয়।
প্রায় এক হাজার ৪৭৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত নন্দী পাহাড় পর্যটকদের জন্য রোমাঞ্চকর এক গন্তব্য। সেখানকার শীতল আবহাওয়া ও পার্শ্ববর্তী গ্রামাঞ্চলের মনোরম দৃশ্য সবাইকে মুগ্ধ করে।
আর নন্দী পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় দেখার অনুভূতি আপনি কখনো স্মৃতির পাতা থেকে মুছতে পারবেন না। এই পাহাড়েই আছে টিপু সুলতান দ্বারা নির্মিত নন্দী পাহাড়ের দুর্গ ও প্রাচীন দ্রাবিড় স্থাপত্যের নিদর্শন ভোগা নন্দীশ্বরা মন্দির। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়রা চাইলে প্যারাগ্লাইডিং বা বিভিন্ন ট্রেইল বরাবর ট্রেকিংয়েও যেতে পারেন।
মাইসুরু
মাইসুরু হলো ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে পরিপূর্ণ একটি শহর। বেঙ্গালুরু থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাইসুরু। সেখানকার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতির নিদর্শন দেখতে পাবেন সেখানে।
মাইসুরুর পাহাড়ে চামুন্ডি মন্দির। এই পাহাড়ের চূড়া থেকে শহরের মনোরম দৃশ্য দেখা যায়। সেখানে গেলে হস্তশিল্পের বাহারি পণ্য, সিল্কের শাড়ি ও সেখানকার বিখ্যাত স্থানীয় মিষ্টি খেতে দেবরাজ মার্কেট ঘুরে আসতে ভুলবেন না।
আরও পড়ুন
শিবনসমুদ্র জলপ্রপাত
প্রকৃতি প্রেমী ও ফটোগ্রাফারদের জন্য শিবানসমুদ্র জলপ্রপাত সেরা এক স্থান। বেঙ্গালুরু থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এটি। কাবেরী নদীর তীরে অবস্থিত শিবনসমুদ্র হলো একটি খণ্ডিত জলপ্রপাত, যা পাথুরে পাহাড়ের উপর দিয়ে আছড়ে পড়ে দুর্দান্ত এক দৃশ্যের সৃষ্টি করে। সেখানকার গগনাচুক্কি ও ভরচুক্কি জলপ্রপাত, শিবানসমুদ্রের জোড়া ক্যাসকেড, শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য ও নির্মল পরিবেশ আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
দর্শনার্থীরা জলপ্রপাতের দৃশ্য দেখতে বা নদীর তীরে বসে পিকনিক উপভোগ করতে ভিউ পয়েন্টগুলোতে সংক্ষিপ্ত ট্রেক করতে পারেন। এই এলাকায় একটি জলবিদ্যুৎকেন্দ্রও আছে, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে আধুনিক প্রকৌশলের একটি উপাদান যোগ করে।
নৃত্যগ্রাম
বেঙ্গালুরু থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, নৃত্যগ্রাম হলো একটি অনন্য গন্তব্য যেটি শাস্ত্রীয় ভারতীয় নৃত্যের জন্য নিবেদিত।
১৯৯০ সালে বিখ্যাত ওডিসি নৃত্যশিল্পী প্রতিমা গৌরি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় গ্রামটি। দর্শকরা নৃত্যগ্রামের শান্ত পরিবেশ অনুভব করতেই সেখানে যান। সেখানকার ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর ও নির্মল পরিবেশ সবাইকে মুগ্ধ করে।
ভীমেশ্বরী
বেঙ্গালুরু থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, ভীমেশ্বরী হলো একটি ইকো-পর্যটনকেন্দ্র। কাবেরী নদীর তীরে অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ভীমেশ্বরী আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
ঘন মরুভূমির মধ্য দিয়ে কোরাকেল রাইড, মাছ ধরা ও প্রকৃতির মাঝে হাঁটতে পারবেন সেখানে। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়রা কাবেরী নদীতে রিভার রাফটিং করতে পারেন। আশপাশের বনে ট্রেকিং করে হাতি, হরিণসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখতে পারেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/এএসএম