বৃষ্টিতে ঘুরে আসুন দেশের ৩ ঝরনায়
ঝরনার সৌন্দর্য প্রকৃতির অন্যতম এক বিস্ময়। পাহাড়ের চূড়া থেকে নেমে আসছে দুধ সাদা জলের ধারা। বিস্ময়কর এক অনুভূতির শিহরণ জাগে ঝরনার সামনে দাঁড়ালে। শরীর ও মনের ক্লান্তি নিমিষেই দূর করে দেয় ঝরনার সৌন্দর্য।
ঝরনার পানি, পাহাড় ও সবুজ অরণ্যের দৃশ্য সবার মনোযোগ কাড়ে। এই বর্ষায় সুযোগ পেলেই ঘুরে আসতে পারেন দেশের বেশ কিছু ঝরনায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক ঝরনাগুলো সম্পর্কে-
হামহাম
হামহাম ঝরনার চোখজুড়ানো দৃশ্য দেখতে আপনাকে যেতে হবে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টের কুরমা বন বিটের গহীন অরণ্যঘেরা দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়। তবে সেখানে একা নয়, দলীয়ভাবে গেলেই ভ্রমণ হবে উপভোগ্য।
সেখানে যেতে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ ধরে চা বাগানের ভেতরের রাস্তা দিয়ে একে একে কমলগঞ্জের কুড়মা বাজার, চাম্পারায় চা বাগান পার হয়ে পৌঁছাতে হবে কলাবন পাড়া। চা শ্রমিকদের ছোট্ট গ্রাম কলাবন। গ্রামের শেষপ্রান্ত থেকে রাজকান্দি সংরক্ষিত বনের এলাকা শুরু।
এ কলাবন থেকেই বনের মধ্যেই ট্র্যাকিং করতে হবে প্রায় আড়াই ঘণ্টা। ১৫০ ফুট উপর থেকে আছড়ে পড়া হামহাম ঝরনার সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
কীভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে সরাসরি সড়ক ও রেলপথে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ বা শ্রীমঙ্গল যেতে হবে। সেখান থেকে রিজার্ভ সিএনজি বা জিপ নিয়ে কলাবন। সেখান থেকে গাইড নিয়ে রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টের ভেতর দিয়ে হামহাম।
ধুপপানি
রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার ওড়াছড়ি নামক স্থানে অবস্থিত এই ঝরনা। কথিত আছে, ২০০০ সালের দিকে এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ধুপপানি ঝরনার নিচে ধ্যান শুরু করেন।
এক নাগারে প্রায় ৩ মাস ধ্যান করার পর ব্যাপারটি স্থানীয় লোকজনের নজরে পরে। স্থানীয়রা সন্ন্যাসীকে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে সেবা করতে গেলে ক্রমে ক্রমে তখন এই ঝরনাটি জনসম্মুখে পরিচিতি লাভ করে।
কীভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে প্রথমে কাপ্তাই যেতে হবে বাসে করে। সেখান থেকে ট্রলার ভাড়া করে যেতে হবে বিলাইছড়ি। জন প্রতি ভাড়া পড়বে ৫৫ টাকা আর রিজার্ভ ১০০০-১৫০০ টাকা।
বিলাইছড়ি থেকে আরো ২ ঘণ্টা পাহাড়ি ঢলের নদী পার হতে হবে ওড়াছড়ি পর্যন্ত। এখানে অবশ্যই গাইড নিতে হবে। গাইড ফি ৫০০ টাকার মতো পড়বে।
নাপিত্তাছড়া ঝরনা
এই ঝরনার অবস্থান চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায়। নাপিত্তাছড়া ঝরনা বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় একটি স্থান। এখানে খুব কাছাকাছি দূরত্বে তিনটি ঝরনা আছে কুপিটা খুম, মিঠাছড়ি, বান্দরখুম। যদি আপনি এখানকার গ্রাম থেকে গাইড সঙ্গে নেন, তাহলে একদিনেই সবগুলো ঝরনার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
এখানে প্রথমে আপনাকে পাহাড়ি পথ হেঁটে যেতে হবে। এসময় বনমোরগ আর হনুমান আপনার নজরে পড়তে পারে। ৩০-৪০ মিনিট হাঁটার পরই প্রথম ঝরনা কুপিটাখুমে আপনি পৌঁছে যাবেন। কিছুটা হাঁটার অভ্যাস থাকলে একদিনেই গিয়ে ঘুরে দেখে আসতে পারেন একসঙ্গে নাপিত্তাছড়ার তিনটি ঝরনা।
কীভাবে যাবেন?
বর্ষাকাল এসব ঝরনার সৌন্দর্ উপভোগ করার সেরা সময়। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো একটি বাসে উঠে মিরসরাইয়ের নয়দুয়ারী বাজারে নেমে যেতে হবে। নিজেদের সুবিধার জন্য নয়দুয়ারী বাজার থেকে স্থানীয় কাউকে গাইড হিসেবে সঙ্গে নিতে পারেন।
জেএমএস/জেআইএম