হামহাম জলপ্রপাতে পৌঁছাবেন কীভাবে, কত খরচ?
বুনো সৌন্দর্যের অসাধারণ এক স্থান হলো হামহাম জলপ্রপাত। মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে হামহাম জলপ্রপাতের অবস্থান। ২০১০ সালের শেষে পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মাকে সঙ্গে নিয়ে একদল পর্যটক এই অনিন্দ্য সুন্দর জলপ্রপাতটি আবিষ্কার করেন।
স্থানীয়দের কাছে, এই ঝরনা চিতা ঝরনা হিসেবে পরিচিত। তাদের মতে, এই জঙ্গলে আগে চিতা বাঘ পাওয়া যেত। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে মোটামুটি ঘণ্টাখানেকের রাস্তা পাড়ি দিয়ে পৌঁছাতে হয় হামহামের কাছাকাছি স্থানে।
প্রায় ১৪০ ফুট উঁচু এই ঝরনার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার জন্যে সমগ্র বাংলাদেশ থেকে মানুষ ছুটে আসেন। যাত্রাপথে চাঁদের গাড়িতে চড়ে শ্রীমঙ্গল দিয়ে যাওয়ার সময় যতদূর পর্যন্ত চোখ যাবে দেখবেন শুধু চা বাগান।
মনে হবে কোনো রূপকথার রাজ্য পাড়ি দিচ্ছেন! সেই রাজ্যের মধ্য দিয়ে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে চাঁদের গাড়ি এড়িয়ে যাবে। এরপর হামহামে কাছাকাছি পৌছেঁই চাঁদের গাড়ি থেকে নেমে মোটামুটি চার কিলোমিটার পাহাড়ি পথ ট্র্যাকিং করতে হবে।
আরও পড়ুন
উঁচু-নিচু পাহাড়ি জঙ্গল ও বাঁশবাগানের ভেতর দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। ঝিরিপথে নামার আগে ৫০০ মিটারের একটা পাহাড় থেকে খাঁড়া নামতে হয়, সেটা বেশ বিপজ্জনক। এই পথে অনেকেই ভয় পান জোঁকের। তাই সতর্ক থাকতে হবে।
ঝিরিপথ পেরিয়ে যখন হামহাম ঝরনায় পৌঁছাবেন, তখন সব ক্লান্তি মুছে যাবে। যদিও ট্র্যাকিংয়ের কারণে অনেকেরই বেশ কষ্ট হয়। তবে ঝরনার সৌন্দর্য দেখার পর সব ক্লান্তি উবে যাবে।
কী এক বুনো সৌন্দর্যের হামহাম! চোখ ও মন সহজেই জুড়াবে হামহামে গেলে। সঙ্গে স্যালাইন আর শুকনো খাবার নিলে হাঁটার কষ্টও গায়ে লাগবে না। তবে হ্যাঁ বোতল ও প্যাকেট নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলবেন।
ট্র্যাকিংয়ের আগে সঙ্গে গাইড নিলে বেশি উপকার পাবেন। ফেরার পথে সময় পেলে মাধবপুর লেক ও লাউয়াছড়া বন ঘুরে আসতে পারেন। বাড়তি খরচ লাগবে না। সিএনজিওয়ালারাই ঘুরিয়ে দেখাবেন।
লাউয়াছড়ার পাহাড়ি পথ বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুন্দর পথ, আর যদি আমাদের মতো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পেয়ে যান, তাহলে জীবন ধন্য।
হামহামের খরচ খুব বেশি না, যেহেতু থাকতে হয় না। ঢাকা ফেরা পর্যন্ত মোটামুটি আপনার খরচ হতে পারে ২-৩ হাজার টাকা। দল বেঁধে গেলে খরচ আরেকটু কমতে পারে। নারীদের জন্যও হামহাম নিরাপদ। তবে দল বেঁধে যাওয়াই উত্তম।
জেএমএস/এমএস