এভারেস্ট জয় করতে কত সময় লাগে, আর খরচই বা কত?
মাউন্ট এভারেস্ট বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত। যার উচ্চতা আট হাজার ৮৪৮.৬ মিটার। এই পর্বত হিমালয়ের একটি অংশ। বিজ্ঞানীদের ধারণা, মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা প্রতি বছর ২ সেন্টিমিটার করে বাড়ছে। প্রথমবারের মতো অ্যাডাম হিলারি ও তেনজিং নোরগে পাহাড়ে আরোহণ করেন।
এরপর আরও অনেকে এভারেস্ট জয় করেছেন। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ মে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে মুসা ইব্রাহীম এভারেস্ট জয় করেন। এরপর ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ২১ মে দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে এম এ মুহিত বা মোহাম্মদ আবদুল মুহিত। এর পরের বছর প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে ৩০ মিনিটে এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেন নিশাত মজুমদার।
ওয়াসফিয়া নাজরীন দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন। ২০১২ সালের ২৬ মে শনিবার সকাল পৌনে ৭টায় বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করেন। এরপর এভারেস্ট জয় করেন খালেদ হোসেন। তবে এভারেস্ট জয় করে ফেরার পথে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
আর এবার ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে বাবর আলী এভারেস্ট জয় করেছেন। রোববার (১৯ মে) বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে তিনি পৃথিবীর উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গে সফলভাবে আরোহণ করেন।
আসলে পাহাড়ে উঠতে অনেক সাহস, উদ্যমও ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। আপনিও যদি মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের ইচ্ছে পোষণ করেন তাহলে মনে রাখবেন, এটি খুব সহজ বিষয় নয়। মাউন্ট এভারেস্ট আরোহণের আগে অনেক বিষয় সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে হয়। জেনে নিন আদ্যোপান্ত-
শারীরিক প্রশিক্ষণ প্রয়োজন
মাউন্ট এভারেস্ট জয় করতে শারীরিক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি হাজার ডলার পর্যন্ত খরচ করতে হতে পারে। যারা সত্যিই পাহাড়ে উঠতে চান, তারা মাসের পর মাস এ সম্পর্কে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করেন। এছাড়া বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতে উঠতে সঠিক আবহাওয়ার জন্যও অপেক্ষা করতে হয়।
আরও পড়ুন
এভারেস্ট আরোহণের সেরা সময় কোনটি?
বেশিরভাগ পর্বতারোহী মে মাসে পাহাড়ে আরোহণের চেষ্টা করেন। সাধারণত ১৫ মে এর পরে। তখন আবহাওয়া গরম থাকে ও বাতাস পাহাড় থেকে দূরে সরে যায়। বর্ষার ঠিক আগে ঘুরে আসা ভালো।
যদি অবিরাম বৃষ্টি হয়, পর্বতারোহীদের উচিত এভারেস্ট অঞ্চলে না যাওয়া। তখন স্থানটি পিচ্ছিল ও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। আবহাওয়া ঠিক না থাকলে এভারেস্টে ওঠা সম্ভব নয়।
এভারেস্ট যাত্রা কোথায় শুরু হয়?
মাউন্ট এভারেস্ট নেপাল ও তিব্বত সীমান্তে অবস্থিত। যদিও সেখানে পৌঁছানোর অনেক পথ আছে, তবে বেশিরভাগ পর্বতারোহীরা দুটি পথ বেছে নেন। নেপালে দক্ষিণ রুট ও তিব্বতে উত্তর রুট।
বেশিরভাগ ট্রেকিং কোম্পানি নেপালে অবস্থিত। বর্তমানে তিব্বত থেকে এভারেস্টে আরোহণ অনেক ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে শুরু করে, দক্ষিণ রুটে আরোহণকারী লোকেরা লুকলা গ্রামে পৌঁছায় ও যাত্রী বেস ক্যাম্পে পায়ে হেঁটে তাদের যাত্রা শুরু করে।
এভারেস্টে উঠতে কত সময় লাগে?
মাউন্ট এভারেস্টে উঠতে প্রায় দুই মাস সময় লাগে। শেরপা গাইডরাও পর্বতারোহীদের সঙ্গে যান। এই লোকেরা প্রায় ১৭ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এভারেস্ট বেস ক্যাম্প পর্যন্ত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ভ্রমণ করে।
তারপর এই লোকেরা প্রায় দুই সপ্তাহ এখানে অবস্থান করে ও আবহাওয়ার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে। বেশিরভাগ পর্বতারোহী হিমালয়ে পৌঁছানোর চিন্তা ভাবনা করেন কয়েক মাস ধরে।
কত খরচ হয়?
এভারেস্টে যাওয়া গাড়ি কেনার চেয়েও বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে। এর জন্য পর্বতারোহীকে ২৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা খরচ করতে হতে পারে।
নেপাল বা তিব্বত সরকারের কাছ থেকে ক্লাইম্বিং পারমিট, বোতলজাত অক্সিজেন ও হাই অ্যাল্টিটিউড গিয়ারের জন্য ৯ লাখ ৪ হাজার ৫৬৮ টাকা পর্যন্ত ট্যাক্স দিতে হয়। আরও আছে তাঁবু, স্লিপিং ব্যাগ ও বুট। সব মিলিয়ে অনেক টাকা খরচ হতে পারে এভারেস্ট জয় করতে।
সূত্র: প্রেসওয়ার ১৮
জেএমএস/এমএস