ভারতের সবচেয়ে ভয়ংকর স্থান ‘ভানগড় দুর্গ’
বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রহস্যময় ও ভূতুড়ে স্থানসমূহ। যদিও অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের কাছে ভূতুড়ে স্থান বেশ আকর্ষণীয়। তাই রহস্যভেদী এসব মানুষেরা ভৌতিক ও ভয়ংকর স্থানসমূহের খোঁজ করেন।
তেমনই এক ভূতুড়ে ও ভয়ংকর স্থান হলো ভারতের ভানগড় দুর্গ। অনেকেই হয়তো এই দুর্গ সম্পর্কে জেনে থাকবেন। কারণ এটি ভারতের সবচেয়ে ভয়ংকর স্থানসমূহের মধ্যে অন্যতম।
লোকমুখে প্রচলিত আছে, ভানগড় দুর্গে কেউ রাত কাটালেই তার মৃত্যু নিশ্চিত। এই ভয়ে অনেকেই রাত তো দূরের কথা দিনের বেলাতেও এর আশপাশে যান না ভুলেও।
মরুভূমির মাঝখানে অবস্থিত সুন্দর একটি স্থান হলো রাজস্থান। এই রাজ্যের নাম শুনলেই সবার আগে মনে আসে বিলাসবহুল প্রাসাদ, বিশ্ববিখ্যাত সব দুর্গ ও সেরা প্রাসাদসমূহের কথা।
প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা ভিড় করেন রাজস্থানে। আর সেখানে গেলে ভানগড় দুর্গেও ঢুঁ মারতে ভোলেন না পর্যটকরা।
ভানগড় দুর্গ রাজস্থানের আলওয়ারে অবস্থিত। দুর্গটি ১৭ শতকে মান সিং প্রথম দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। প্রথম মান সিং তার ভাই মাধো সিং প্রথমের জন্য এটি নির্মাণ করেছিলেন। মাধো সিং তখন আকবরের সেনাবাহিনীতে একজন জেনারেল পদে নিযুক্ত ছিলেন।
এই দুর্গ উত্তর-ভারতের অন্যতম ভুতুড়ে স্থান হিসেবেও বিবেচিত। তবে কেন এই দুর্গ এতোটা ভয়ংকর? ভানগড় দুর্গের গল্প শুধু রাজস্থানেই নয়, সারা ভারতেই বিখ্যাত।
আরও পড়ুন
এমনকি ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের নির্দেশ অনুযায়ী, সূর্যাস্তের পরে ও সূর্যোদয়ের আগে কাউকে এই দুর্গে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।
স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, এই দুর্গের সীমানাতে ঢুকলেই অদ্ভুত অনুভূতি ঘটে সবারই। মনে হয় কেউ তাদেরকে অনুসরণ করছেন। আবার অনেকের মতে, দুর্গ থেকে চিৎকার, কান্না ও চুড়ির শব্দও শোনা যায়।
লোকমুখে প্রচলিত আছে, দুর্গটি নাকি একজন সন্ন্যাসীর দ্বারা অভিশপ্ত। এই দুর্গের রাজার সামনে সন্ন্যাসী কিছু শর্ত রাখেন, কিন্তু রাজা সেই শর্ত পূরণ করতে না পারায় সন্ন্যাসী অভিশাপ দেন।
এই ঘটনার পর থেকেই দুর্গের আশপাশে মানুষ যেতে ভয় পেতেন। যুগ যুগ ধরে এখনো তা বিরাজমান। তবে এই ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে কেউ নিশ্চিত নন।
পর্যটকরা শুধু দিনের বেলায় এই দুর্গ দলবলে ঘুরে দেখার অনুমতি পান। তবে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার সদস্যরা সন্ধ্যার অনেক আগেই পর্যটকদের দুর্গ থেকে বের করে নেন।
এছাড়া সূর্যোদয়ের আগেও দুর্গে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। কথিত আছে, এই দুর্গে রাত কাটাতে যারাই সাহস করেছেন তারা আর ফিরে আসেনি।
স্থানীয়দের মতে, কথিত আছে যে একবার তিন বন্ধু এই দুর্গে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তারা জানতে চেয়েছিলেন স্থানটি সত্যিই ভূতুড়ে কি না! তবে তারা রাত কাটিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু পরের দিন বাড়ি ফেরার পথে তারা দুর্ঘটনায় মারা যান।
সূত্র: দ্য হিন্দু/দ্য কালচার ট্রিপ
জেএমএস/এএসএম