ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ভ্রমণ

ডোমখালী সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের ভিড়

এম মাঈন উদ্দিন | প্রকাশিত: ০২:৫৫ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩

বছরের শেষ সময়ে পর্যটকরদের ভিড় বেড়েছে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ডোমখালী সমুদ্রসৈকতে। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে এখানে ছুটে আসছেন ভ্রমণপিপাসু মানুষ।

দুপুর গড়িয়ে বিকেলের শুরুতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। বিশেষ করে শুক্রবার ও শনিবার পর্যটকের ভিড় আরও বাড়ে। তবে সুপার ডাইক নির্মাণ কাজের জন্য যাতায়াতে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

jagonews24

আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক হার্ডিঞ্জ ব্রিজে গিয়ে যা দেখবেন

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর প্রতিষ্ঠার কারণে এখানে সুপার ডাইক বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। সাহেরখালী ইউনিয়নের ডোমখালী থেকে গজারিয়া পর্যন্ত এতে বাঁধ ঘেঁষে জেগে ওঠা চর ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় বিশাল এলাকা এখন পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে। প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দৃষ্টিনন্দন সাগরপাড়ে মানুষের আনাগোনা চোখে পড়ার মতো।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পশ্চিম পাশে তাকালে চোখে পড়বে শুধু সাগর আর সাগর। ঘাটে আছে সারি সারি ডিঙ্গি নৌকা। জেলেরা কেউ মাছ ধরে সাগর থেকে ঘাটে ফিরছে, কেউ আবার সাগরে যাচ্ছে। কেউ পর্যটকদের নিয়ে নৌভ্রমণে ছুটে যাচ্ছেন।

jagonews24

এমন নৈসর্গিক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখার জন্য সেখানে প্রতিদিন ছুটে যাচ্ছেন অসংখ্য ভ্রমণপিপাসু মানুষ। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার একেবারে দক্ষিণ সীমান্তে অবস্থিত এই স্পটের নাম ‘ডোমখালী সমুদ্রসৈকত’।

আরও পড়ুন: দার্জিলিং ভ্রমণে থাকার খরচ কমাতে যা করবেন

দেখতে অনেকটা পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের এর মতো এই ডোমখালী সমুদ্রসৈকত। নতুন নির্মিত বেড়িবাঁধ জুড়ে সবুজের সমারোহ, পাখিদের কোলাহল, কিছুদূর পর পর সাগরের সঙ্গে মিশে যাওয়া ছোট ছোট খালের অবিরাম বয়ে চলা, বাঁধের পূর্বে গ্রামীণ জনপদ আর দক্ষিণে সাগরের কোল জুড়ে ম্যানগ্রোভ বন। এসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবে যে কেউ।

jagonews24

বিস্তৃত চরজুড়ে কেওড়া গাছের সমহার। আছে হরেক রকমের বৃক্ষ। পথে পথে দেখা মিলে সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। ডোমখালী ঘুরতে আসা পর্যটক মেহেদী হাসান বলেন, ‘মিরসরাই উপজেলা পর্যটনের জন্য বিখ্যাত। তবে বেশি হলো পাহাড়ি ঝরনা।’

‘বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের কারণে কয়েকটি সমুদ্রসৈকত গড়ে উঠেছে। তার মধ্যে অন্যতম ডোমখালী সমুদ্রসৈকত। আমি প্রায় সময় এখানে ছুটে আসি। আজও দুই বন্ধুসহ এখানে ঘুরতে এসেছি।’

আরও পড়ুন: শীতে হিমাচল ভ্রমণে ঘুরে দেখুন জনপ্রিয় ৬ স্পট

সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে আসা গৃহবধূ শারমিন সুলতানা জানান, ‘এখন বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ। তাদের নিয়ে প্রথমবার এখানে ঘুরতে এসেছি। অনেক সুন্দর জায়গা। বাচ্চারা সবাই মজা করছে।’

jagonews24

আরেক পর্যটক নাহিদ হাসান ও মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকটা পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের আদলে ডোমখালী সমুদ্রসৈকত। মন খারাপ থাকলে এখানে এলে মন ভালো হয়ে যাবে। তবে সড়কের কাজ শেষ না হওয়ার কারণে আসা যাওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’

মারুফ মডেল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র আয়াত বলেন, ‘আমার আব্বু-আম্মুর সঙ্গে এখানে ঘুরতে এসেছি। আমার অনেক ভালো লাগছে। নদীতে নৌকা নিয়ে ঘুরতে খুব মজা লেগেছে। অনেক ছবি তুলেছি এখানে।’

আরও পড়ুন: মহামায়ায় গিয়ে কায়াকিং করবেন যেভাবে

নৌকাচালক তরুণ বলেন,‘ঘুরতে আসা পর্যটকের নিয়ে প্রতিদিন ঘাট থেকে সাগরে বেড়াতে নিয়ে যাই। প্রতি ট্রিপ ৫০০-৮০০ টাকা। আমিসহ আরও ৮-১০ জন নিয়ে বেড়াতে যাই। জ্বালানি খরচ বাদ দিয়ে দৈনিক ৩-৪ হাজার টাকা আয় হয়।

jagonews24

ঘুরতে আসা তানভীর হোসেন ও আবু দাউদ নামের দুই বন্ধু বলেন, ‘মিরসরাইয়ে এতো সুন্দর সমুদ্রসৈকত আছে তা ভাবতেই ভালো লাগছে।’

‘কোলাহলমুক্ত পরিবেশ, পাখির কলকাকলী, বিশুদ্ধ বাতাস, লাল কাঁকড়া, বনের ভেতর হরিণের আনাগোনা আর নৌকা ভ্রমণ সত্যিই অসাধারণ। আমরা একটু সময় পেলে এখানে ছুটে আসি। তবে যাতায়াত ব্যবস্থা আরো উন্নত হলে ভালো হতো।’

আরও পড়ুন: বিচ্ছিন্ন দ্বীপে বিশ্বের সবচেয়ে নিঃসঙ্গ বাড়ি

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের জন্য সুপার ডাইক বাঁধের কারণে বিশাল এলাকাজুড়ে সমুদ্রসৈকতের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে অসংখ্য মানুষ ছুটে আসছেন।’

jagonews24

তিনি আরও জানান, পর্যটন কর্পোরেশন যদি এখানে অবকাঠামো উন্নয়ন করে তাহলে এটি কক্সবাজার কিংবা পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের মতো হয়ে যাবে। সরকার এখান থেকে রাজস্ব আয়ের সুযোগ আছে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবো।

আরও পড়ুন: শীতে রাঙ্গামাটি ভ্রমণে কোন কোন স্পটে ঘুরবেন?

কীভাবে যাবেন?

ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের যে কোনো স্থান থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়দারোগাহাট নেমে সিএনজি যোগে একেবারে সাগরপাড়ে যাওয়া যাবে। জনপ্রতি ৪০ টাকা ভাড়া নেবে। রিজার্ভ নেবে ২০০-৩০০ টাকা। এছাড়া নিজামপুর কলেজ নেমে সেখান থেকেও সিএনজি যোগে যাওয়া যাবে।

jagonews24

থাকা ও খাওয়া

ডোমখালী সমুদ্রসৈকত এলাকায় থাকা ও খাওয়ার জন্য এখনো কোন রেস্টুরেন্ট ও আবাসিক হোটের গড়ে ওঠেনি। খাবারের জন্য ছোট কমলদহ বাজারের বিখ্যাত ড্রাইভার হোটেল আছে। যা ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে।

জেএমএস/এমএস

আরও পড়ুন