ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ভ্রমণ

টাঙ্গন নদীর ধারের কাশফুলের রাজ্যে ছুটছেন সবাই

জেলা প্রতিনিধি | ঠাকুরগাঁও | প্রকাশিত: ০১:০২ পিএম, ০৯ অক্টোবর ২০২৩

টাঙ্গন নদীর ধারের প্রকৃতি সেজেছে যেন এক নৈসর্গিক সাজে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের শইফতপাড়া ব্রিজের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর কলতান একদিকে, আর অন্যদিকে কাশফুলের সৌন্দর্য নজর কাড়ছে সবার।

শরতকে বলা হয় নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অনন্য ঋতু। আর এই শরতে প্রাকৃতিকভাবে জন্মে ওঠা লম্বাটে সবুজ গড়নের কাশবনের গাছের ডগায় ফুটন্ত কাশফুল নজর কাড়ে যে কারোর।

আরও পড়ুন: পাহাড়ি খাবারের স্বাদ নিন দীঘিনালার ‘জুমঘর’ রেস্তোরাঁয়

টাঙ্গন নদীর ধারের কাশফুলের রাজ্যে ছুটছেন সবাই

তেমনই এ নদীর ধারের সাদা কাশফুলের শুভ্রতা ও নদীর কলতানে বিমুগ্ধ হচ্ছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অনেকে।

চলতি বছরের গত রোববার (০৮ অক্টোবর) বিকেলে দেখা যায়, স্থানীয় বামন শ্মশান ঘাটের পাশেই ছোট এই নদীর ধারে জন্মানো সাদা কাশফুলের কোমল শুভ্রতা ছড়াচ্ছে প্রকৃতিতে।

টাঙ্গন নদীর ধারের কাশফুলের রাজ্যে ছুটছেন সবাই

আর আকাশের সাদা মেঘের সঙ্গে বাতাসে দোল খাওয়া কাশফুল ও নদীর স্নিগ্ধ-শান্ত রূপ আকৃষ্ট করছে ছোট বড় সবাইকে। তাই প্রভাতের স্নিগ্ধ আলো আর গোধূলি লগ্ন অর্থাৎ সন্ধ্যার আগ মহূর্ত পর্যন্ত মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকছে কাশবনটি।

আরও পড়ুন: একদিনের ট্যুরে কুমিল্লায় গিয়ে কী কী দেখবেন?

টাঙ্গন নদীর ধারের কাশফুলের রাজ্যে ছুটছেন সবাই

এখানে এসে অনেকে ব্যস্ত থাকছেন ডিএসএলআর ক্যামেরা ও মোবাইলে ছবি তোলা নিয়ে। কেউ যেন ছবি তোলার লোভ সামলাতে পারছেন না।

ঠাকুরগাঁও রোড বাজারের ব্যবসায়ী মো: আব্দুর রহিম বলেন, ‘ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে বস্ততার জন্য খুব ক্নান্ত লাগছিল ও মনটাও খারাপ ছিল। আমার ছোট ভাইয়ের কাছে শুনে এখানে একটু ঘুরতে আসলাম।’

টাঙ্গন নদীর ধারের কাশফুলের রাজ্যে ছুটছেন সবাই

‘এসে দেখি এখানে অনেক মানুষ ভিড় করছে। নদীর ধারে এই কাশফুলে ঘুরে আমার মনটা ভরে গেল ও প্রকৃতির এমন রূপ দেখে খুব প্রশান্তি অনুভব করছি। যদিও আমার মনটা খারাপ ছিল এখানে এসে ভালো হয়ে গেল।’

আরও পড়ুন: কুয়াকাটাকে হার মানাবে ছইলার চর

টাঙ্গন নদীর ধারের কাশফুলের রাজ্যে ছুটছেন সবাই

সদর উপজেলার রুহিয়া থানা এলাকার সেনিহাড়ি থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে দেখতে এসেছেন মো. শাহীন আলম। তিনি বলেন ‘মানুষের কাছে শুনে এখানে এসে দূরে নদীর ব্রিজের উপর থেকে দেখি সূর্যের আলো যখন কাশফুলের উপরে পরে তখন দেখতে আরও অন্যরকম সুন্দর দেখায়। আর কাছে এসে আরও আমরা বিমুগ্ধ হই। আসলে এখানে নিজে না আসলে অনুভূতিটা কেউ বুঝতে পারবে না।’

ফারাবাড়ি বাজার এলাকার স্থানীয় লিঙ্কন নামে এক যুবক বলেন, ‘মূলত এখানে প্রকৃতি দর্শন ও ছবি তোলার জন্য আসা। এখানে অনেক মানুষ দেখতে আসতেছে ভালো কিন্তু অনেকে কাশফুলের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। ফুলগুলো ছিঁড়ে ও ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে। এতে সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। কেউ যদি এমনটি না করে তাহলে কাশবনের সৌন্দর্য ভালো থাকবে।’

টাঙ্গন নদীর ধারের কাশফুলের রাজ্যে ছুটছেন সবাই

অনিক চন্দ্র বর্মন নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘কাশবনটি ফারাবাড়ি বাজারের বামন শ্মশান ঘাটের পাশে অবস্থিত। এই কাশবনেরর কিছু দূরে আরেকটি কাশবন হয়েছিল সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) ভাইরাল হয়েছিল। তবে বৃষ্টির কারণে নদীর পাড়ি বেড়ে যাওয়ায় সেটি নষ্ট হয়ে যায়।’

আরও পড়ুন: কুয়াকাটা ট্যুরে কোন কোন স্পট ঘুরে দেখবেন?

টাঙ্গন নদীর ধারের কাশফুলের রাজ্যে ছুটছেন সবাই

‘পরবর্তী সময়ে কয়েদিনের মধ্যে দেখি এখানেও কাশফুলে ভরপুর হয়ে সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে। তাই অনেক দূর-দূরান্ত থেকে এখানে মানুষ ছুটে আসছেন। এদিকে আগে এমন কাশফুল হত না, এমনকি দেখাও যেত না। এবার নদী খননের ফলে নদীর ধারে বালিগুলো ফেলায় এখানে অনেক কাশবন জন্মায়।’

তিনি দর্শনার্থীদের অনুরোধ করে আরও বলেন, ‘আমি অনুরোধ করছি যারা এখানে দেখতে ও ঘুরতে আসছেন তারা দয়া করে এই ফুলগুলো না ছিঁড়বেন না। প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্যকে রক্ষা করুন।’

টাঙ্গন নদীর ধারের কাশফুলের রাজ্যে ছুটছেন সবাই

সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মন বলেন, ‘এটি সরকারি জায়গায় হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আমরা এটিকে রক্ষার চেষ্টা করবো। কাশবনটি যাতে নষ্ট না হয় বা কেউ কেটে নিয়ে যেতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

তানভীর হাসান তানু/জেএমএস/জেআইএম

আরও পড়ুন